ধর্নায় প্রাক্তন উপাচার্যেরা। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যপাল তথা রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শুক্রবার সকালে ধর্নায় বসেন প্রাক্তন উপাচার্যেরা। রাজভবনের উত্তর গেটের কাছে ধর্নায় বসে উপাচার্যদের সংগঠন ‘দ্য এডুকেশনিস্ট’স ফোরাম’। রাজ্যপালের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্রদর্শন করেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, সংবিধান মেনে চলুন রাজ্যপাল। স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হোক। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, ‘‘আইন মেনে কাজ করুন। আইন মেনে উপাচার্য নিয়োগ করুন।’’ পরে রাজভবনের উত্তর গেটে গিয়ে পুলিশের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন তাঁরা।
ধর্না কর্মসূচি নিয়ে বৃহস্পতিবারই বিবৃতি দিয়েছিল ওই সংগঠন, তাতে জানানো হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরিচালনা প্রক্রিয়া নিয়ে সরাসরি মিথ্যা কথা বলেছেন রাজ্যপাল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ ঘিরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত চরমে উঠেছে। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আবহে বৃহস্পতিবার সকালে রাজ্যপালের একটি ভিডিয়ো বার্তা এই দ্বন্দ্বে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় রাজভবন থেকে প্রচার করা হয়েছিল রাজ্যপালের একটি পাঁচ মিনিটের ভিডিয়োবার্তা। তাতে রাজ্যপাল বাংলার বাসিন্দাদের উদ্দেশে বাংলা ভাষায় কিছু ব্যাখ্যা দিয়েছেন। রাজ্যপাল বলেছেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সুষ্ঠু ভাবে পরিচালনা করার জন্য চাই উপাচার্য। বাংলার শিক্ষা মন্ত্রক উপাচার্য নিয়োগ করেছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তাদের নির্দেশের সমালোচনা করে সেই সিদ্ধান্তকে বেআইনি আখ্যা দেয়। সুপ্রিম কোর্ট সরকারকে বলে, ‘আপনারা ভুল পদক্ষেপ করেছেন। আপনাদের এই সিদ্ধান্ত শুধু বেআইনিই নয়, পুঁজিবাদী মানসিকতার পরিচায়ক।’ সুপ্রিম কোর্টের ওই নির্দেশের পরই সমস্ত উপাচার্যকে ইস্তফা দিতে হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে এক জন আচার্য হিসাবে আমি অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য নিয়োগ করি। যা নিয়ে সমস্যার শুরু। ওই নিয়োগকে শিক্ষা মন্ত্রক বলেছিল ভুল। কিন্তু হাই কোর্ট জানিয়ে দেয়, আমিই ঠিক।’’
ওই ভিডিয়োবার্তায় রাজ্যপাল আরও বলেন, ‘‘আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন, কেন আমি সরকার মনোনীত উপাচার্যকে নিয়োগ করিনি। তার কারণ, সেই উপাচার্যদের কেউ ছিলেন দুর্নীতিগ্রস্ত, কেউ ছাত্রীকে হেনস্থা করেছেন, কেউ রাজনৈতিক খেলা খেলছেন। তা হলে বলুন, এমন উপাচার্য কি নিয়োগ করা উচিত হত? পাঁচ জন উপাচার্য পদত্যাগের পর আমাকে নিজে থেকে জানিয়েছিলেন, তাঁদের জীবনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রকের মদতে সরকারি অফিসার এবং মুখ্যমন্ত্রীর আইএএস কর্তারা তাঁদের উপর চাপসৃষ্টি করছেন। তাঁদের আমি পদত্যাগ করতে বলিনি। তাঁরাই ভয় পেয়ে পদত্যাগ করেছিলেন।’’ রাজ্যপালের এই বার্তা প্রকাশ্যে আসার কয়েক ঘণ্টা পরই একটি বিবৃতি দিয়ে রাজ্যপালের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানায় উপাচার্যদের ফোরাম।
এর আগে, গত মঙ্গলবার রাজভবনের বাইরে ধর্নায় বসার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার সকালে দিল্লি থেকে ফিরে সে কথা শুনে রাজ্যপাল বলেছিলেন, সহকর্মী মুখ্যমন্ত্রীকে প্রতিবাদ জানানোর জন্য রাজভবনের ভিতরে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy