২০১৬-’১৭ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যের ১০টি জেলায় ৩০টি ব্লক বিপজ্জনক এবং ৪২টি আংশিক বিপজ্জনক।
১ থেকে এক লাফে ৩০!
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মাটির তলার জলস্তর অতি দ্রুত কমে যাওয়ার কারণে কমবেশি তিন বছরের মধ্যেই ৩০টি ব্লকের পরিস্থিতি ‘বিপজ্জনক’ হয়ে গিয়েছে। আংশিক বিপজ্জনক ব্লকের সংখ্যা ৩৮ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪২। বছর তিনেক আগে রাজ্যের মাত্র একটি ব্লকে ‘বিপজ্জনক’ পরিস্থিতি ছিল। কিন্তু ২০১৬-’১৭ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যের ১০টি জেলায় ৩০টি ব্লক বিপজ্জনক এবং ৪২টি আংশিক বিপজ্জনক। প্রশাসনের অনেকেই অবশ্য জানাচ্ছেন, ভূগর্ভস্থ জলস্তরের সমীক্ষা রিপোর্টকে সময় মতো গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে খারাপ পরিস্থিতি বুঝতে দেরি হয়েছে।
সরকারি সমীক্ষায় মাটির তলায় সঞ্চিত জলের পরিমাণের মাপকাঠিতে বিভিন্ন এলাকাকে ক্রিটিকাল (বিপজ্জনক), সেমি-ক্রিটিকাল (আংশিক বিপজ্জনক) এবং সেফ (নিরাপদ) হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। রাজ্যভিত্তিক ‘গ্রাউন্ড ওয়াটার রিসোর্স এসটিমেশন কমিশন’-এর থেকে তথ্য নিয়ে প্রতি দু’বছর অন্তর গোটা দেশের ভূগর্ভস্থ জলস্তরের রিপোর্ট তৈরি করে ‘সেন্ট্রাল গ্রাউন্ড ওয়াটার বোর্ড’। যে রিপোর্টের ভিত্তিতে নির্দেশিকা জারি করে রাজ্য। এখন প্রশ্ন উঠেছে সেই প্রক্রিয়া নিয়ে।
আরও পড়ুন: ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে আপাতত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে সই করল না ভারত
সরকারি আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ২০০৮-০৯ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, ৩৮টি ব্লক আংশিক বিপজ্জনক হওয়ার তথ্য জানিয়ে ২০১১ সালে নির্দেশিকা জারি করেছিল রাজ্য। কিন্তু ২০১০-১১ এবং ২০১২-১৩ সালে কেন্দ্রীয় বোর্ডের প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্যে কোনও তথ্য বা নির্দেশিকা প্রকাশিত হয়নি। কেন্দ্রীয় রিপোর্ট অনুযায়ী, ৭৬টি আংশিক বিপজ্জনক এবং ১টি ব্লক বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত হলেও রাজ্যে কাজ হচ্ছিল ২০০৮-০৯-এর রিপোর্টের ভিত্তিতেই। প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘আগে হুগলির গোঘাট-২ ব্লকটিই বিপজ্জনক ছিল। নতুন সমীক্ষায় ওই জেলার ছ’টি ব্লকই বিপজ্জনক। আরও সাতটি জেলা এই তালিকায় ঢুকে গিয়েছে। বোঝা যাচ্ছে, এত দিন রিপোর্টের নবীকরণ না হওয়ায় যথেচ্ছ ভাবে মাটির তলার জল তোলা হয়েছে। তাতে নতুন এলাকা যেমন আংশিক বিপজ্জনক হয়েছে, তেমনই আংশিক বিপজ্জনক কোনও ব্লক বিপজ্জনক হয়ে গিয়েছে। এখনই সতর্ক না হলে নিরাপদ এলাকাগুলিও বিপদে পড়তে পারে।’’
সেন্ট্রাল গ্রাউন্ড ওয়াটার বোর্ডের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা অম্লানজ্যোতি কর-ও বলেন, ‘‘প্রথমে মাটির তলায় যতটা পর্যন্ত নল ঢুকিয়ে জল তোলা হত, ক্রমশ সেই গভীরতা বাড়ানো হয়েছে। ফলে আংশিক বিপজ্জনক ব্লকগুলি বিপজ্জনক হয়ে গিয়েছে। এখনই তা নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে জলের সঙ্কটের সঙ্গে বাড়বে দূষণের প্রবণতা। পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি পঞ্জাব বা হরিয়ানার মতো যাতে না হয়, তা ঠেকানোই আমাদের লক্ষ্য।’’
রিপোর্ট নিয়ে গড়িমসি হওয়া সম্পর্কে দফতরের প্রাক্তন এক কর্তা বলেন, ‘‘ভূগর্ভস্থ জলস্তরের অবস্থা নিয়ে কেন্দ্রের যা সমীক্ষা ছিল, তা আমাদের সমর্থনযোগ্য বলে মনে হয়নি। কারণ, কখনও কখনও সেমি ক্রিটিকাল ব্লকও ‘সেফ ব্লকে’ পরিণত হতে পারে। আমাদের বক্তব্য সেই সময় লিখিত ভাবে কেন্দ্রকে জানিয়েছিলাম। পাশাপাশি, নিজেরা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সমীক্ষা করেছিলাম। তাই এতটা সময় লেগেছে।’’
তা হলে এ বার কী করা হবে? প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘রাজ্যের কমিশন সাম্প্রতিক তথ্য জানে। তা সেন্ট্রাল গ্রাউন্ড ওয়াটার বোর্ডকে পাঠানো হয়েছে। প্রকাশিত ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্য নির্দেশিকা জারি করলে নতুন তথ্যের ভিত্তিতে কাজ হবে।’’
এই প্রসঙ্গে জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়নমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘কয়েক মাস হল দায়িত্ব পেয়েছি। বিষয়টি জেনেই তা নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বৈঠক করেছেন। কী ভাবে সেমি ক্রিটিকাল থেকে স্বাভাবিক হওয়া যায়, অথবা ক্রিটিকাল ব্লকগুলির পরিস্থিতি বদলানো যায়, তা নিয়ে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি হচ্ছে। ডিসেম্বর থেকে যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে কাজ শুরু হবে।’’
হত, ক্রমশ সেই গভীরতা বাড়ানো হয়েছে। ফলে আংশিক বিপজ্জনক ব্লকগুলি বিপজ্জনক হয়ে গিয়েছে। এখনই তা নিয়ন্ত্রণে
না আনতে পারলে জলের সঙ্কটের সঙ্গে বাড়বে দূষণের প্রবণতা। পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি পঞ্জাব বা হরিয়ানার মতো যাতে না হয়, তা ঠেকানোই আমাদের লক্ষ্য।’’
রিপোর্ট নিয়ে গড়িমসি হওয়া সম্পর্কে দফতরের প্রাক্তন এক কর্তা বলেন, ‘‘ভূগর্ভস্থ জলস্তরের অবস্থা নিয়ে কেন্দ্রের যা সমীক্ষা ছিল, তা আমাদের সমর্থনযোগ্য বলে মনে হয়নি। কারণ, কখনও কখনও সেমি ক্রিটিকাল ব্লকও ‘সেফ ব্লকে’ পরিণত হতে পারে। আমাদের বক্তব্য সেই সময় লিখিত ভাবে কেন্দ্রকে জানিয়েছিলাম। পাশাপাশি, নিজেরা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সমীক্ষা করেছিলাম। তাই এতটা সময় লেগেছে।’’
তা হলে এ বার কী করা হবে? প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘রাজ্যের কমিশন সাম্প্রতিক তথ্য জানে। তা সেন্ট্রাল গ্রাউন্ড ওয়াটার বোর্ডকে পাঠানো হয়েছে। প্রকাশিত ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে রাজ্য নির্দেশিকা জারি করলে নতুন তথ্যের ভিত্তিতে কাজ হবে।’’
এই প্রসঙ্গে জলসম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়নমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘কয়েক মাস হল দায়িত্ব পেয়েছি। বিষয়টি জেনেই তা নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বৈঠক করেছেন। কী ভাবে সেমি ক্রিটিকাল থেকে স্বাভাবিক হওয়া যায়, অথবা ক্রিটিকাল ব্লকগুলির পরিস্থিতি বদলানো যায়, তা নিয়ে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি হচ্ছে। ডিসেম্বর থেকে যুদ্ধকালীন ভিত্তিতে কাজ শুরু হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy