পথ দুর্ঘটনায় আহত এবং মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে ‘হিট অ্যান্ড রান’ কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। সব ঠিকঠাক চললে নতুন অর্থবর্ষেই এই কমিটি গঠন হয়ে যাবে। রাজ্যভিত্তিক যেমন একটি কমিটি গঠন করা হবে, তেমনই জেলাভিত্তিকও কমিটি গঠনের ভাবনা রয়েছে নবান্নের। পরিবহণ দফতরের নির্দেশকে মাথায় রেখে রাজ্যভিত্তিক একটি কমিটি তৈরি করা হবে। সেই কমিটিতে জায়গা পাবেন পূর্ত, স্বাস্থ্য, ট্র্যাফিক, পুলিশ বিভাগের আধিকারিক এবং বিমা সংস্থার প্রতিনিধিরা। কলকাতা শহরের ক্ষেত্রে থাকবেন কলকাতা মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)-র প্রতিনিধিও। সব দফতর এবং বিভাগ থেকে এক জন করে প্রতিনিধি নেওয়া হবে। জেলার ক্ষেত্রে সে ভাবেই সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসককে মাথায় রেখে কমিটি গঠন করা হবে। কোনও ক্ষেত্রেই কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে এই কমিটিতে রাখা হবে না বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রতি মাসে নিয়ম করে এই কমিটিগুলি বৈঠকে বসবে। পথ দুর্ঘটনায় আহত কিংবা নিহতদের পরিবারকে যাতে দ্রুত ক্ষতিপূরণ দেওয়া যায়, সেই বিষয়ে উদ্যোগী হবে এই কমিটি। পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় গুরুতর আহত কিংবা নিহতের পরিবারের ক্ষতিপূরণ পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে এত দিন বিভিন্ন দফতরের তথা বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ক কোনও কমিটি ছিল না। প্রত্যেক বিভাগ থেকে ফাইল অনুমোদনের পর পাঠানো হত অন্য একটি বিভাগে। তাই ক্ষতিপূরণ পেতে অনেকটাই দেরি হয়ে যেত। কিন্তু নতুন এই কমিটি গঠনের ফলে ফাইল এক টেবিল থেকে অন্য টেবিলে গিয়ে অনুমোদন পাওয়ার বিষয়টি এই কমিটির সুপারিশের মাধ্যমে সম্ভব হবে। সেই ভাবনা থেকেই নতুন এই কমিটি গঠন করা হবে।’’
আরও পড়ুন:
বৈঠক করে ক্ষতিপূরণ পাইয়ে দেওয়াই নয়, কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার তদন্ত করে দেখবে এই কমিটি। দুর্ঘটনাটি ঠিক কী ভাবে ঘটেছিল, দুর্ঘটনার জন্য কে দায়ী— সেই বিষয়টিগুলিও এই কমিটির আতশকাচের তলায় থাকবে। পূর্ণাঙ্গ কারণ খতিয়ে দেখার পরেই ক্ষতিপূরণের বিষয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত জানাবে ‘হিট অ্যান্ড রান’ কমিটি। সাধারণত আহতদের ৫০ হাজার এবং নিহতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তবে গুরুতর আহতদের ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়ানো যায় কি না, সেই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট। ‘হিট অ্যান্ড রান’ কমিটিও ক্ষতিপূরণের বিষয়টি নিয়ে নিজেদের স্বাধীন মতামত দিতে পারবে।