মোট ৩৩টি প্রকল্পের সুবিধা মিলবে দুয়ারে সরকারের শিবিরগুলিতে। ফাইল চিত্র।
১ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে দুয়ারে সরকার শিবিরের ষষ্ঠ সংস্করণ। এ বার একেবারে বুথভিত্তিক শিবির আয়োজনের নির্দেশ দিল নবান্ন। সোমবার দুয়ারে সরকার নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদ্বী। ছিলেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পদস্থ কর্তারা এবং জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। নবান্ন সূত্রের খবর, এই বৈঠকেই টাস্ক ফোর্স গঠন করার বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থ দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে মাথায় রেখে ২৩ সদস্যের টাস্ক ফোর্স গঠন করা হল। টাস্ক ফোর্সের সদস্য-সচিব করা হয়েছে পঞ্চায়েত সচিব পি উলগানাথনকে। সদস্য হিসাবে রাখা হয়েছে পঞ্চায়েত দফতরের আরও পাঁচ আধিকারিককে। কৃষি, শিক্ষা, শ্রম-সহ ১৬টি দপ্তরের সচিবদেরও এই টাস্ক ফোর্সের সদস্য করা হয়েছে। এ বার দুয়ারে সরকার শিবির চলবে ২০ দিন। আবেদনপত্র নেওয়া হবে ১০ মার্চ পর্যন্ত। পরবর্তী ১০ দিনে সুবিধাপ্রদান নিশ্চিত করবে রাজ্য সরকার। শিবির থেকে মানুষ সব রকম সুযোগসুবিধা পাচ্ছেন কিনা সেই বিষয়ে নজরদারি চালাবে এই টাস্ক ফোর্স। জেলাস্তরে এই নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসককে।
অন্য বারের তুলনায় এ বার কম সময়ের জন্য দুয়ারে সরকারের শিবির হচ্ছে। তাই শিবির কোথায় কোথায় চলবে, তা আগে থেকে জানাতে প্রচারে জোর দিতে বলা হয়েছে জেলাশাসকদের। এমনিতে এক মাস ধরে চলে দুয়ারে সরকারের শিবির। কিন্তু আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছে রাজ্য প্রশাসনের একাংশ। তাই দুয়ারে সরকার শিবিরের দিন সংখ্যা কমিয়ে আনা হয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় কাজ আরও ভাল করে করার ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে হবে বলে সোমবারের বৈঠকের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। তার নির্দেশ অনুযায়ী, এ বারের দুয়ারে সরকার নিয়ে যেতে হবে প্রত্যেকটি বুথে। রাজনীতির কারবারিদের একাংশ মনে করছে, পঞ্চায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখে দুয়ারে সরকার পরিষেবা বুথ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। যাতে পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রামের মানুষের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সরাসরি সংযোগ গড়ে ওঠে। এবং সরকারি পরিষেবাও তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়।
এ বারের শিবির থেকে বিধবা ভাতার আবেদন গ্রহণ এবং পরিষেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সূত্রের খবর। ফলে মোট ৩৩টি প্রকল্পের সুবিধা মিলবে দুয়ারে সরকারের শিবিরগুলিতে। সম্প্রতি রাজ্য সরকার জেনেছে বিধবা ভাতা সংক্রান্ত আবেদন নেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছিল। তাই তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নিয়ে এই বিষয়কে দুয়ারে সরকার পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। তবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এই শিবির নিয়ে যেন অবাঞ্ছিত অভিযোগ না ওঠে। সুষ্ঠু ভাবে যাতে পরিষেবা মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় সেই বন্দোবস্ত করতে হবে নিচুতলার সরকারি কর্মচারীদের। প্রসঙ্গত, গত বছর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে দুয়ারে সরকার শিবিরের পঞ্চম অধ্যায় চলেছিল টানা দু’মাস। এ ক্ষেত্রে রাজ্যে তিন বিরোধী দল বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসের অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটের আগে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষা করতেই এই দুয়ারে সরকার শিবিরের আয়োজন করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy