প্রতীকী ছবি।
অতিমারির প্রেক্ষিতে সব জেলার স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলতে চাইছে রাজ্য সরকার। জোর দেওয়া হচ্ছে রোগীর শয্যা পর্যন্ত পাইপলাইনে অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়ার কাজে। সেই জন্য প্রতিটি জেলাকেই বেশ কয়েক কোটি করে টাকা দিয়েছে রাজ্য। সব জেলারই বড় ও মাঝারি হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহের মজবুত পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, শয্যা-যুক্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পর্যন্ত এই পরিকাঠামো পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে মালদহ।
কোভিড সংক্রমণের প্রথম ধাক্কার সময় থেকেই রাজ্যে চিকিৎসা পরিকাঠামো বাড়ানোর কাজ শুরু হয়। অত্যাধুনিক চিকিৎসা-যন্ত্র, চিকিৎসা পদ্ধতি-সহ যাবতীয় পরিকাঠামো বেড়েছে জেলায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, অক্সিজেন ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে কোভিডের দ্বিতীয় ধাক্কা। তখন থেকেই জেলা স্তরে সরকারি চিকিৎসা পরিকাঠামোয় অক্সিজেন সরবরাহের সরল ও আধুনিক ব্যবস্থা তৈরিতে জোর দেয় রাজ্য। পিএসএ, লিকুইড অক্সিজেন প্লান্টের পরিকাঠামো প্রায় প্রতিটি হাসপাতালেই তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়। বেশির ভাগ জায়গায় তার ব্যবস্থা হলেও কিছু জায়গায় সেই কাজ এখনও বাকি। জোর দেওয়া হয়, রোগীর শয্যা পর্যন্ত পাইপলাইনে অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়ার উপরে। প্রায় সব সরকারি হাসপাতালেই সেই পরিকাঠামো প্রস্তুত। তবে সব প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এখনও তেমন পরিকাঠামো প্রস্তুত করা যায়নি। সেখানে অক্সিজেনের চাহিদা সিলিন্ডারেই মেটাতে হচ্ছে। “পাইপলাইনে অক্সিজেন সরবরাহের পরিকাঠামো তৈরির পদ্ধতি জটিল। রাজ্যের প্রায় সব বড়-মাঝারি হাসপাতালে এই পরিকাঠামো তৈরি করা গিয়েছে,” বলেন এক স্বাস্থ্যকর্তা।
বাঁকুড়ায় অন্তত ছ'টি হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট তৈরি হচ্ছে। পিএসএ প্লান্ট তৈরি হচ্ছে পুরুলিয়ায়। পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রায় সব হাসপাতালে পাইপলাইনে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থার সঙ্গে পিএসএ প্লান্ট গড়ার কাজ শুরু হয়েছে। ঝাড়গ্রামের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাইপলাইনে অক্সিজেন সরবরাহের পরিকাঠামো প্রস্তুত এবং আরও দু’টি হাসপাতালে তার কাজ চলছে। পূর্ব মেদিনীপুরের তিনটি হাসপাতালে আগে থেকেই এই সুবিধা আছে। দু’টিতে কাজ চলছে। হুগলির চারটি হাসপাতালে পাইপলাইনে অক্সিজেন সরবরাহ চালু হয়েছে। হাওড়ার তিনটি হাসপাতালে পাইপলাইনে অক্সিজেন পাঠানোর ব্যবস্থা হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনায় ছ’টি এবং দক্ষিণ ২৪
পরগনায় আটটি হাসপাতালে পাইপলাইনের অক্সিজেন সরবরাহের সুবিধা আছে। সেই ব্যবস্থা রয়েছে বীরভূমের তিনটি, পূর্ব বর্ধমানের দু’টি, নদিয়ার চারটি, মুর্শিদাবাদের ছ’টি হাসপাতালে। মালদহে ১৮টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ১৬টিতেই এই পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। বাকি দু’টিতে কাজ চলছে। যদিও দার্জিলিং, কালিম্পং, দক্ষিণ দিনাজপুর, উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই ব্যবস্থা নেই। উত্তরবঙ্গের ১১টি বড় হাসপাতালে পাইপলাইনে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে। তরল অক্সিজেনের পরিকাঠামো আছে কোচবিহার মেডিক্যালে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের দাবি, কোভিড অতিমারি বিদায় নেওয়ার পরে সব জেলার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এমন পরিকাঠামো তৈরি হলে গ্রামীণ চিকিৎসার উপরে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। জেলা প্রশাসনিক সূত্রের ব্যাখ্যা, সাধারণত, অনেক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিসর ছোট হওয়ায় শয্যার ব্যবস্থা থাকে না। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে শয্যার সুবিধা চালু হয়েছে। হুগলি জেলা প্রশাসন জানাচ্ছে, তাদের ১৮টি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাইপলাইন অক্সিজেনের সুবিধা খুব তাড়াতাড়ি চালু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy