মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
সেমিকন্ডাক্টর সংক্রান্ত লগ্নি টানতে পৃথক নীতি তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলন (বিজিবিএস)-এর আগেই এই সংক্রান্ত বিষয়ে চূড়ান্ত রূপরেখা ঠিক হয়ে যেতে পারে। নির্ধারিত সূচি মেনে আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসের ৫-৬ তারিখে নিউ টাউনে হবে বিজিবিএস। সেই সম্মেলনেই যাতে সেমিকন্ডাক্টর নীতি তুলে ধরা যেতে পারে, সে বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে এ বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরেই কাজ শুরু করে দিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি দফতর।
সম্প্রতি এক বণিকসভার অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের এক কর্তা। ওই সভায় দফতরের আধিকারিক জানিয়েছেন, শীঘ্রই সেমিকন্ডাক্টর নীতি আনা হবে। তার আগে প্রকাশ করা হবে খসড়া নীতি, যার উপর নিজেদের মতামত দিতে পারবে সংশ্লিষ্ট মহল। তার পরই নীতি চূড়ান্ত করা হবে। প্রসঙ্গত, চলতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে ‘কোয়াড’ সম্মেলনে যোগ দিতে আমেরিকায় গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সম্মেলনের বাইরে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাই়ডেনের বৈঠক হয়। তার পরেই প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে ঘোষণা করা হয়, কলকাতায় ‘সেমিকন্ডাক্টর কারখানা’ গড়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে দুই রাষ্ট্রনেতার। বিনিয়োগকারী হিসাবে নাম উঠে আসে বহুজাতিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্ডরিজ়ের।
মোদী এবং বাইডেনের বৈঠক থেকে কলকাতায় এই বিনিয়োগের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘গত বছরের গোড়া থেকেই রাজ্য সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি দফতর এবং ওয়েবেল ‘সেমি কন্ডাক্টর’ সংস্থাগুলিকে আর্জি জানাচ্ছিল। এই ধরনের চিপ তৈরির ছোট ছোট স্টার্টআপগুলিকে ওয়েবেল আইটি পার্কে জায়গাও দিয়েছে।’’ সেমিকন্ডাক্টর হল এমন এক ধরনের বস্তু, যা নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে তড়িৎবাহী হতে পারে। মূলত বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতিতে সেমিকন্ডাক্টর ব্যবহার করা হয়। মোবাইল হোক বা ক্যামেরা, কিংবা ল্যাপটপ, টিভি— এই যন্ত্রগুলিকে সচল রাখে এক বিশেষ ধরনের ‘চিপ’ বা ‘মাইক্রোচিপ’। এই ‘চিপ’ তৈরির ক্ষেত্রে একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান হল সেমিকন্ডাক্টর। প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বর্তমান বিশ্বে সেমিকন্ডাক্টর ক্ষেত্রের গুরুত্বও ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সারা দুনিয়ায় ‘সেমিকন্ডাক্টর’ শিল্পে গ্লোবাল ফাইন্ডরিজ় প্রথম তিনটি সংস্থার মধ্যে একটি। রাজ্য সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কাজের জন্য ইতিমধ্যেই টেগোর টেক নামের একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে গ্লোবাল ফাইন্ডরিজ় অধিগ্রহণ করেছে। পাশাপাশি শাওমি, মাইক্রনের মতো সংস্থাও বিনিয়োগ করতে বাংলায় আসছে। গ্লোবাল ফাউন্ডরিজ়ের মতো সংস্থার বাংলায় বিনিয়োগকে ‘উল্লেখযোগ্য’ বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। তার কারণ, এই রকম একটি সংস্থা বাংলায় বিনিয়োগ করলে আন্তর্জাতিক শিল্পমহলে রাজ্য সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দেবে বলে মত আমলা মহলের অনেকের। যা বাণিজ্য, কর্মসংস্থানের জন্য উল্লেখযোগ্য হয়ে উঠতে পারে। তাই এ বিষয়ে একটি সুষ্ঠু নীতি থাকা প্রয়োজন বলেই মনে করছে রাজ্য সরকার। তাই এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ তথা বণিকমহলের মতামত নিয়েই তৈরি হবে ‘সেমিকন্ডাক্টর নীতি’। যা বাণিজ্য সম্মেলনে শিল্প তথা বণিকমহলের সামনে তুলে ধরা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy