মহারাজা তোমারে সেলাম। সত্যজিৎ রায়কে শ্রদ্ধা নরেন্দ্রপুরের এক পুজো মণ্ডপে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।
কলকাতা তো আছেই! বোধনের আগেই কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপও ঠাকুর দেখায় নেমে পড়েছে।
মহানগরীর কোথায় কোন মণ্ডপে ঠাকুর দেখতে কত ক্ষণ লাগবে বিকেল থেকেই ফেসবুকে তার খতিয়ান দিতে শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ। সেখানেও পঞ্চমীর সারা সন্ধ্যা দক্ষিণ বনাম উত্তর কলকাতা
টক্করের আমেজ। এক সঙ্গে অনেকগুলি পুজো যেখানে রয়েছে ভিড়ের চাপ কিছুটা সেখানেই বেশি। রাসবিহারী অ্যাভিনিউ থেকে চেতলা বা দেশপ্রিয় পার্ক, দু’দিকেই তুমুল ভিড় ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভিড়ের চাপের সঙ্গে তুলনায় খুব পিছিয়ে থাকবে না বাগবাজার এবং টালা এলাকা। টালা এবং বেলগাছিয়া সেতুতে গাড়ি চলেছে শম্বুক গতিতে। মধ্য কলকাতায় আবার সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের ভিড় টানার দাপট। শহরের উত্তর উপকণ্ঠে শ্রীভূমি ঘিরে বেড়েছে পুলিশি তৎপরতা। বিমানবন্দরমুখী রাস্তায় পরিস্থিতি তাই কিছুটা নিয়ন্ত্রণে।
কল্লোলিনীর সঙ্গে তাল মিলিয়েই লড়ছে শিলিগুড়ি, মালদহ বা মেদিনীপুর, খড়্গপুর। মালদহের ইংরেজবাজার শহরের ৩২০ মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে পুজো দেখতে পথে নামা জনতার ভিড় সামলাতে বসানো হয় ‘ড্রপ গেট’। তার পিছনে শুধু মানুষ আর মানুষ। উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে পঞ্চমীর দুপুরে ভিড় না থাকলেও, সন্ধের পরে ভিড় কিছুটা বেড়ে যায়।
শিলিগুড়িতে তৃতীয়া থেকেই পথে দর্শনার্থীরা। পঞ্চমীতে সেই ভিড় আরও বেড়েছে। ফলে যানজট। পুলিশ শহরের প্রধান রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ চালু করায় অলিগলিতে গাড়ি-বাইকের ভিড়। একই ছবি জলপাইগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার, সর্বত্রই। কোচবিহারে একাধিক রুটে টোটো চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। তবে মহালয়ার দিন থেকে অস্থায়ী ভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের বহরমপুর বাইপাস রাস্তা। উত্তরমুখী পণ্যবাহী গাড়ি শহরে ঢুকছে না। তাতে পুজোর যানজট থেকে অনেকটাই রেহাই পেয়েছে বহরমপুর।
উত্তরের এই ভিড়কে সমানে পাল্লা দিচ্ছে দক্ষিণের বিভিন্ন এলাকা। পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর, খড়্গপুরের মতো শহরে বেশ কয়েকটি বড় বাজেটের পুজো হয়। পঞ্চমীতে ভিড়ের বহর দেখে আজ, ষষ্ঠীর জন্য যান নিয়ন্ত্রণে নানা বিধি ঠিক করেছে পুলিশ। একই ছবি পূর্ব মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে বা পুরুলিয়ার কয়লাখনি অঞ্চল নিতুড়িয়ার পুজো মণ্ডপগুলিতেও। সেখানকার এক পুজোকর্তা নবনী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘চতুর্থী থেকেই ভিড় শুরু হয়েছে মণ্ডপে।’’ বাঁকুড়া শহরেও একই ছবি।
চতুর্থী থেকেই দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে আসানসোল, দুর্গাপুর ও বর্ধমান শহরের পুজো মণ্ডপগুলিতে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) কুলদীপ সেনওয়ানে জানান, ভিড় নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পলিশ-বুথ রাখা হয়েছে।
কলকাতা লাগোয়া অঞ্চলগুলিতেও অন্যথা ঘটেনি। চতুর্থীর থেকেই বনগাঁ, বসিরহাট, বারাসত সরগরম। পঞ্চমীর বিকেল থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর-বারুইপুরের শহুরে এলাকায় মণ্ডপে ভিড়। তবে, গ্রামীণ এলাকায় ভিড় তুলনামূলক কম। গ্রামীণ এলাকায় কিছু মণ্ডপের কাজ এখনও শেষ হয়নি। রাজ্যের পুজোর মেজাজে যা এখন বেশ ব্যতিক্রমী।
হাওড়া গ্রামীণ এলাকায় পঞ্চমীর দিন মোটামুটি ভিড় ছিল মণ্ডপগুলিতে। বাগনান ও উলুবেড়িয়ায় একাধিক মণ্ডপে প্রতিমা দেখার জন্য লাইন পড়ে। এ দিন সন্ধ্যায় ভিড় নামল চুঁচুড়াতেও। কারবালা মোড়, বেগুনতলা, রথতলা, পেয়ারাবাগান এলাকার মণ্ডপগুলিতে ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় উদ্যোক্তাদের। আরামবাগ, শ্রীরামপুর, উত্তরপাড়ার নামী পুজোগুলো দেখতেও লোকজন রাস্তায় নামেন।
উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে অসংখ্য থিম পুজো। চতুর্থী থেকেই বিটি রোড, ঘোষপাড়া রোড, এসএন ব্যানার্জি রোডের মতো শিল্পাঞ্চলের প্রধান সড়কগুলিতে সন্ধ্যায় ঘোর যানজট। নদিয়ার কল্যাণীতে আইটিআই মোড়ের তিনটি বড় বাজেটের পুজো ভিড় টানছে। পুলিশ সূত্রের খবর, রোজ গড়ে লক্ষাধিক লোকের ভিড় হচ্ছে। কিছুটা ব্যতিক্রমী বীরভূম। তেমন ভিড় চোখে পড়েনি সিউড়ি, বোলপুরের অধিকাংশ পুজোয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy