দ্বিতীয় হুগলি সেতু। —ফাইল চিত্র।
সব ঠিকঠাক থাকলে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে দ্বিতীয় হুগলি সেতু সংস্কারের কাজ শুরু হতে পারে। সম্প্রতি নবান্ন সূত্রে এমনই জানা গিয়েছে। যদিও প্রথমে ঠিক হয়েছিল, পুজোর আগেই সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হবে। কিন্তু উৎসবের মরশুমে ওই কাজ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হতে পারে বলে মনে করছে রাজ্য প্রশাসন। শারদোৎসব থেকে শুরু করে দীপাবলির সময় শহর কলকাতা ও শহরতলিতে চাপ বাড়ে ট্র্যাফিকের উপর। এমন সময়ে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর সংস্কারের কাজ শুরু হলে সেখানে যানচলাচল নিয়ন্ত্রিত হবে। ফলে ট্র্যাফিক প্রশাসনের উপর বাড়তি চাপ তৈরি হবে। তাই ঠিক করা হয়েছে, পুজো এবং উৎসবের দিনগুলির ভিড় কেটে যাওয়ার পর নভেম্বর মাসে সেতুর সংস্কারের কাজে হাত দেবে রাজ্য প্রশাসন।
সম্প্রতি দ্বিতীয় হুগলি সেতুর সংস্কার নিয়ে নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। তাতে পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা ছাড়াও ছিলেন রাজ্য প্রশাসনের বরিষ্ঠ পুলিশকর্তারা। সেখানে সেতু সংস্কারের কাজে কী কী ধরনের সমস্যা আসতে পারে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলেই খবর। প্রতি দিন এই সেতু দিয়ে কয়েক লক্ষ গাড়ি যাতায়াত করে। রাজ্য সরকারের সদর দফতর তথা মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় নবান্ন যেতে গেলেও এই সেতুটিই অন্যতম পথ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে যেতে এই পথই ব্যবহার করেন। রাজ্যের বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেও সেতুটির গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ, দিল্লি ও বম্বে রোড দিয়ে দ্রুত কলকাতায় প্রবেশ করতে গেলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই সেতুটি ব্যবহার করা হয়। অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবসায়িক কাজকর্মের জন্য কলকাতার সঙ্গে অন্য জেলা তথা ভিন্রাজ্য থেকে আসা যানবাহনগুলি যোগাযোগের জন্য এই সেতুটি ব্যবহার করে। পাশাপাশি, দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে টোল আদায়ের মাধ্যমেও রাজস্ব আদায় হয়।
তবে দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কারের কাজ না হওয়ায় দ্বিতীয় হুগলি সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি হয়ে পড়েছে। সামগ্রিক সংস্কারের কাজ করতে গেলে দীর্ঘ সময় সেতুটি বন্ধ রাখতে হবে। যা বাস্তবিক পক্ষে সম্ভব নয়। তাই প্রাথমিক আলোচনায় উঠে এসেছে, ছয় লেনের সেতুর যে অংশে কাজ হবে, তার দুটি লেন বন্ধ রেখে পাশের একটি অংশ খোলা রাখা হবে যান চলাচলের জন্য। ‘হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স’ (এইচআরবিসি) -এর তত্ত্বাবধানে জার্মানির একটি সংস্থা এই সেতুর নকশা তৈরি করেছিল। তাদের নজরদারিতেই সংস্কারের কাজ হবে। পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক জানান, সেতুটির বিষয়ে যাবতীয় তথ্য ওই সংস্থার কাছে রয়েছে। তাই সংস্কারের ক্ষেত্রেও তাদের উপরেই ভরসা রাখছে রাজ্য সরকার। মোট ১৫২টি কেব্ল দিয়ে এই সেতুটি ধরে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ১০টির বেশি কেব্লের অবস্থা তুলনামূলক ভাবে বেশি খারাপ। তাই পরিস্থিতি বিবেচনা করে সংস্কারের এই পর্যায়ে সব ক’টি কেব্লেরও সংস্কার করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে সংস্কারের এই কাজে প্রায় ১৬৩ কোটি টাকা খরচ হতে পারে বলেই জানা যাচ্ছে। সেটি বরাদ্দ করা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই প্রশাসনের অন্দরে। তবে প্রয়োজনে ওই আর্থিক বরাদ্দ বাড়তেও পারে। সংস্কারের কাজের জন্য ৪ থেকে ৬ মাস সময় ধার্য করা হয়েছে। ১৯৯২ সালের অক্টোবর মাসে তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর উপস্থিতিতে সেতুটির উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাও। তার পর প্রায় ৩১ বছর হয়ে গেলেও সে ভাবে সংস্কারের মুখ দেখেনি দ্বিতীয় হুগলি সেতু। সম্প্রতি সেতুটির স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়। তার পরেই সেতু সংস্কারের কাজে হাত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy