কসবায় স্কুল পরিদর্শকের দফতরের সামনের ঘটনার পর চাকরিহারাদের ‘ধৈর্য’ ধরার আবেদন করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁদের ‘সংযত’ হতে বললেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থও। বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।’’ রাজ্য সরকার মানবিক ভাবে চাকরিহারাদের পাশে রয়েছে জানিয়ে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছি।’’
ব্রাত্যও জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহেই তাঁর নেতৃত্বে শিক্ষা দফতরের সঙ্গে চাকরিহারাদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। অন্তত ওই বৈঠক পর্যন্ত তাঁদের ধৈর্য ধরা উচিত বলে মনে করেন ব্রাত্য। তিনি বলেন, ‘‘এক দিকে বৈঠক, অন্য দিকে ধ্বংসাত্মক আন্দোলন, দুটো একসঙ্গে চলতে পারে না।’’
বুধবার কসবায় স্কুল পরিদর্শকের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন চাকরিহারাদের একাংশ। পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তিও হয়। সেই সময়েই পুলিশের বিরুদ্ধে চাকরিহারা বিক্ষোভকারীদের লাথি মারা, গলাধাক্কা এবং লাঠিচার্জের অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনা নিয়ে বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যসচিব। সেখানে ছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা এবং রাজ্য পুলিশের এডিজি আইনশৃঙ্খলা জাভেদ শামিম।
গোটা ঘটনার প্রেক্ষিতে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ভরসা দিয়েছিলেন। আমরা চাকরিহারাদের পাশে আছি। আমরা সব রকম ভাবে চেষ্টা করছি। তা সত্ত্বেও কারও প্ররোচনায় বা উস্কানিতে এ রকম ঘটনা ঘটেছে। এটা বাঞ্ছনীয় নয়।’’ চাকরিহারা শিক্ষকদের বার্তা দিয়ে পন্থ জানান, তারা শীঘ্রই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাবেন শীর্ষ আদালতে। মুখ্যসচিবের কথায়, ‘‘আমরা একটা পিটিশন সুপ্রিম কোর্টে ফাইল করেছি। যেখানে আমরা বলেছি, সকলে যেন কাজ চালিয়ে যেতে পারেন। আমরা রিভিউ পিটিশনের জন্যেও যাচ্ছি। এ ক্ষেত্রে আইনি বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা আবার আশ্বাস দিচ্ছি, আমরা ওদের (চাকরিহারাদের) পাশে আছি। এমন কিছু করবেন না যাতে, শান্তিশৃঙ্খলা নষ্ট হয়।’’
সরকার চাকরিহারাদের পাশে রয়েছে জানিয়ে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘শিক্ষক-শিক্ষিকার সমাজে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। আমরা ওঁদের শ্রদ্ধা করি। আমরা সুপ্রিম কোর্টের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছি। তার অপেক্ষায় রয়েছি। কাউকে টার্মিনেশন লেটার দেওয়া হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে মাথায় রেখেই আমাদের এগোতে হচ্ছে। আমরা যেন কারও উস্কানিতে পা না দিই। আইন হাতে নেওয়া উচিত নয় কোনও ভাবেই।’’
- ২০১৬ সালের এসএসসিতে নিয়োগের পুরো প্যানেল বাতিল করল সুপ্রিম কোর্ট। বলল, পুরো প্রক্রিয়ায় কারচুপি করা হয়েছে। ওই নিয়োগপ্রক্রিয়ার কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই।
- এসএসসি-র শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। কলকাতা হাই কোর্ট এই সংক্রান্ত শুনানির পর ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ নিয়োগপ্রক্রিয়াই বাতিল করে দিয়েছিল।
- রাজ্যের ২৬ হাজার চাকরি (আদতে ২৫,৭৫২) বাতিল করে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ জানিয়েছে, তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
-
চাকরি বাতিল: বেতন ফেরতের বিচার কোথায় হবে, হাই কোর্ট? না সুপ্রিম কোর্টে? শুনানি শেষে রায় স্থগিত রাখল ডিভিশন বেঞ্চ
-
স্কুলশিক্ষকদের বেতন হল সময়েই, পেলেন ‘চাকরিহারা যোগ্য’-রাও, এখন চিন্তা: ডিসেম্বরের পর কী হবে?
-
প্রায় ৩০ ঘণ্টা পরে এসএসসি দফতর থেকে বার হলেন কর্মীরা, ঘেরাও করেছিলেন ‘অযোগ্য’ চাকরিপ্রার্থীরা
-
আন্দোলনের অন্যতম মুখ চিন্ময় মণ্ডলের নামই বাদ! এসএসসির ‘যোগ্য’ তালিকা দেখে কী বলছেন তিনি?
-
যোগ্য কারা? তালিকা প্রকাশ না করেই ১৮০৩ জন শিক্ষকের নাম বাদ দিয়ে শিক্ষাদফতরে তথ্য পাঠাল এসএসসি