Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Durga Puja 2020

মল মাস, দুর্গাপুজো গড়াবে কার্তিকে

বাঙালির প্রাণের শারদোৎসবকে কার্ত্তিক মাসে ঠেলে দিল কে?

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়
নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২০ ০৫:৪০
Share: Save:

সবকিছু ঠিকঠাক চললে ঠিক এক মাস পরে আশ্বিনের শারদপ্রাতে বেজে উঠত পুজোর ঢাক! সোমবার ছিল চর্পটষষ্ঠী। গাঁ-ঘরে চেনা নামে ‘চাপরা ষষ্ঠী।’ পঞ্জিকামতে, এই ষষ্ঠীর ঠিক এক মাসের মাথায় দুর্গাষষ্ঠী। এমনিতেই করোনা আবহে হয়তো তেমন জোরে বাজবে না বোধনের ঢাক। সেই বৈশাখ থেকে অন্য সব পালাপার্বণের মতো এবার নমো-নমো করেই দুর্গাপুজো কাটবে। কিন্তু সেই পুজোও এ বার আশ্বিনে নয়, হবে সুদূর কার্তিক মাসে। শরতের কাশফুল তত দিনে হয়তো ঢেকে দেবে হেমন্তের কুয়াশা।

বাঙালির প্রাণের শারদোৎসবকে কার্ত্তিক মাসে ঠেলে দিল কে? পুজো বা তিথিনক্ষত্র নিয়ে এ সব জটিলতার চটজলদি উত্তর মেলে যে পঞ্জিকায়, সেখানে আশ্বিন মাসকে এ বার ‘মল মাস’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ মাসে কোনও শুভকাজ, উৎসব নিষিদ্ধ। অগত্যা দুর্গাপুজোও হবে কার্তিক মাসে। পৌরহিত্যের ভাষায় মল মাস হল ‘মলিন মাস’। হিন্দি বলয়ে বলা হয় ‘অধিক মাস’। অর্থাৎ, অতিরিক্ত মাস। পণ্ডিতেরা জানাচ্ছেন, তিথি নক্ষত্রের সূক্ষাতিসূক্ষ হিসাব মেলাতেই এই মল মাসের উদ্ভব। প্রতি উনিশ বছর অন্তর আশ্বিন মাস মল মাস হয়। সেই হিসাবে ২০০১ সালে আশ্বিন ছিল মল মাস। তারও আগে ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে। প্রতি বারই দুর্গাপুজো হয়েছিল কার্তিক মাসে। হিসাব মতো আগামী ২০৩৯ সালের আশ্বিন মাস ফের মল মাস হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

কিন্তু কেন এমন হয়? জবাবে নবদ্বীপের পুরোহিত সুশান্ত ভট্টাচার্য বিষয়টি বিশদে ব্যাখা করে বলেন, “আমাদের কিছু উৎসব অনুষ্ঠান হয় চন্দ্রের তিথির হিসাবে। আর কিছু হয় সূর্যের হিসাবে। তবে সূর্য আর চাঁদের তিথিগত হিসাবটা ভিন্ন রকম। সূর্যের মাস গড়ে তিরিশ দিনে সম্পূর্ণ। যেখানে চাঁদের তিরিশটা তিথি পার হতে সময় লাগে সাতাশ থেকে সাড়ে উনত্রিশ দিন। যার ফলে প্রতি মাসেই কয়েক দিনের ফারাক থেকে যায়। যা বছর শেষে গড়ে এগারো দিনে দাঁড়ায়। এ ভাবে ফারাক বাড়তে থাকলে দেখা যাবে কোনও এক দিন দুর্গাপুজো বৈশাখ মাসে গিয়ে হচ্ছে। চান্দ্রতিথি এবং সৌরতিথির ফারাক নিয়ন্ত্রণে তাই আড়াই থেকে তিন বছর অন্তর একটি করে মাসকে চিহ্নিত করে যাবতীয় উৎসব-অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। সেটিই মল মাস।”

প্রতি বছর এগারো দিনের হিসাবে কমবেশি আড়াই থেকে তিন বছরের মধ্যে তিরিশ দিন অতিরিক্ত হলেই একটি গোটা মাস অতিরিক্ত হয়। সেই ‘অধিক’ মাসটিকে তখন উৎসব ক্যালেন্ডার থেকে কার্যত মুছে দেওয়া হয়। যাতে পরের বছর ফের নতুন করে তিথির হিসাব শুরু করা যায়। পৌষ মাস ছাড়া সব মাসই মল মাস হতে পারে। অন্য বার এই দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় ‘ফাইনাল কাউন্টডাউন’। জমে ওঠে পুজোর বাজার, পালপাড়ায় শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা। উদ্যোক্তাদের দিনরাত এক হয়ে যায়। কিন্তু এ বার সে সব কিছুই নেই। নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির যুগ্ম সম্পাদক গোকুলবিহারী সাহা বলেন, “চৌহদ্দির মধ্যে কোথাও পুজো নেই। পুজোর বাজার বহু দূরের কথা। এমন খারাপ অবস্থা আগে কখনও হয়নি।”

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2020 Festival
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy