দিনভর ফেসবুকে ঘুরেছে এই পোস্ট। সোমবার। স্ত্রিনশট
ফেসবুকে দলের নেতাদের নিশানা করে তরুণ মতুয়া নেতা মুকুটমণি অধিকারীর পোস্ট ঘিরে আবারও বিতর্কের মুখে নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার বিজেপি। নির্দিষ্ট কারও নাম করা না হলেও ওই পোস্ট আসলে রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারকে লক্ষ্য করেই করা হয়েছে বলে মনে করছেন বিজেপির অনেকে। যদিও জগন্নাথদের পাল্টা দাবি, যাঁরা এই ধরণের পোস্ট করছেন, তাঁরা আসলে দলের ভিতরে থেকে বিরোধীদের হয়ে ‘দালালি’ করছেন।
লোকসভা ভোটে রানাঘাট কেন্দ্র বিজেপি প্রার্থী করতে চেয়েছিল তরুণ চিকিৎসক মুকুটমণি অধিকারীকে। কিন্তু সরকারি হাসপাতালের চাকরি থেকে অব্যাহতি না পাওয়ায় তিনি শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হতে পারেননি। তাঁর পরিবর্তে প্রার্থী হয়ে বিপুল ভেটে জিতে যান তৎকালীন সময়ে নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি জগন্নাথ সরকার। তার পর থেকেই বিজেপির গোষ্ঠী রাজনীতিতে মকুটমণিকে জগন্নাথ-বিরোধী অবস্থানে দেখা যেতে থাকে। জগন্নাথকে সরিয়ে মানবেন্দ্রনাথ রায়কে সাংগঠনিক জেলা সভাপতি করা হলে মুকুটমণিকে জেলা কমিটির সম্পাদক পদে নিয়ে আসা হয়।
কিন্তু এর পরে মানবেন্দ্রনাথকে সরিয়ে জগন্নাথ-ঘনিষ্ঠ পলে পরিচিত অশোক চক্রবর্তীকে সভাপতি করা হয়। এর পরে আর জেলা কমিটিতে ঠাঁই হয়নি মুকুটমণির। শুধু তা-ই নয়, মতুয়াদের উপরে প্রভাব বিস্তারের প্রশ্নেও মুকুটমণি ও জগন্নাথের মধ্যে বিবাদ বারবার প্রকাশ্যে চলে আসে। সম্প্রতি মুকুটমণিকে মতুয়া সংগঠনের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পদে দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকে সেই বিবাদ আরও প্রবল আকার ধারণ করতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে সমাজমাধ্যমে মুকুটমণির এই পোস্টটি নিয়ে দলের অভ্যন্তরে যথেষ্ট বিতর্ক তৈরি করেছে।
ফেসবুকে মুকুটমনি লিখেছেন, ‘প্রকৃত বিজেপি কর্মকর্তারা নদিয়া দক্ষিণ জেলার মেয়েবাজ দালালদের ঘৃণার শিকার। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব কি ভাবছে?’ এই পোস্ট সামনে আসার পর বিজেপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হতে থাকে। কারণ সম্প্রতি এক মহিলার সঙ্গে সাংসদ জগন্নাথ সরকারের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কার্যত তোলপাড় হয়েছিল জেলা রাজনীতির ময়দান। দলেরই অনেকে মনে করছেন নাম না করলেও মকুটমণি আসলে জগন্নাথকেই নিশানা করে এসব লিখেছেন।
এই প্রসঙ্গে মকুটমণি অবশ্য বলেন, “আমি নির্দিষ্ট করে কারও নাম বলব না। তবে এটা বলতে পারেন সোশ্যাল মিডিয়ায় যা দেখছি তাতে নদিয়া দক্ষিণে দলের মহিলা কর্মীরা সুরক্ষিত নন। পরিবারের মহিলাদের রাজনীতিতে আনতে ভয় হচ্ছে। বিষয়টি আমি রাজ্য নেতৃত্বের নজরে আনতে চাইছি।” যা শুনে জগন্নাথ পাল্টা বলেন, “যিনি বা যাঁরা এই ধরনের কথা বলছেন তাঁদের মস্তিষ্কের সুস্থ্তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে। তাঁরা আসলে প্রকৃত বিজেপি নন। তারা বিরোধীদের দালালি করছেন। বিরোধীদের সুবিধা করে দেওয়ার জন্যই এই ধরনের ভুলভাল বকতে শুরু করেছেন।”
বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অশোক চক্রবর্তী বলেন, “আমি ওই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত নই। কারও কিছু বলার থাকলে দলের মধ্যে বলতে পারতেন। এটা দলের শৃঙ্খলার পরিপন্থী।” তা হলে মুকুটমণির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে? অশোক বলেন, “দল লক্ষ রাখছে। উনি কি বলেছেন বা বলতে চেয়েছেন, খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy