Advertisement
E-Paper

ভোটাভুটি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে কি পরোক্ষে চ্যালেঞ্জ করতে চান মলয়?

গোপন ব্যালটে পুরপ্রতিনিধিদের মতামত জানতে চেয়ে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীকেই কি পরোক্ষে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে চলেছেন মলয়?

প্রয়োজনে গোপন ব্যালটে ভোটাভুটি করা হবে বলেও মলয় জানিয়ে দিলেন।

প্রয়োজনে গোপন ব্যালটে ভোটাভুটি করা হবে বলেও মলয় জানিয়ে দিলেন। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫ ০৯:০৮
Share
Save

মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, তাই তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। কিন্তু গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাঁর সেই পদত্যাগপত্র গৃহীত হয় কিনা, সেটাই এখন দেখতে চান পানিহাটির পুরপ্রধান মলয় রায়। সেই জন্য আগামী সোমবার বোর্ড অব কাউন্সিলর্সের বৈঠক
ডাকলেন তিনি। প্রয়োজনে গোপন ব্যালটে ভোটাভুটি করা হবে বলেও মলয় জানিয়ে দিলেন।

যেখানে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরপ্রধানের পদ থেকে মলয়কে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেখানে গোপন ব্যালটে পুরপ্রতিনিধিদের মতামত জানতে চেয়ে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীকেই কি পরোক্ষে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে চলেছেন মলয়? বুধবার ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসকের কাছে প্রতিনিধি পাঠিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন মলয়। কিন্তু তার পরেও বৃহস্পতিবার তিনি পুরসভায় আসেন। দাবি করেন, সরকারি ভাবে পদত্যাগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগে পর্যন্ত পুরপ্রধানের দায়িত্ব সামলাবেন। মলয়ের কথায়, ‘‘রাজ্যের পুর আইন মেনে বোর্ড অব কাউন্সিলর্সের বৈঠক ডেকেছি। সেখানে আমার পদত্যাগপত্র গৃহীত হবে কিনা, তা স্থির হবে। পুরপ্রতিনিধিরা নিজেদের মতামত জানাবেন। প্রয়োজনে গোপন ব্যালটে ভোটও হতে পারে।’’

গত শনিবার থেকে পুরপ্রধানের পদত্যাগ নিয়ে টালবাহানা চলছে পানিহাটিতে। মহকুমাশাসকের কাছে জমা দেওয়া পদত্যাগপত্রে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের কথা উল্লেখ করা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। তার পরে আবার পুরপ্রতিনিধিদের ভোট তাঁর পুরপ্রধান থাকার পক্ষে না বিপক্ষে যায়, মলয় তা দেখতে চাওয়ার বার্তা দেওয়ায় নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। শাসকদলের একাংশের কথায়, ‘‘খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন। সেখানে কি দলের পুরপ্রতিনিধিরা বিপক্ষে মতামত দেবেন?’’ যদিও বিরোধীদের কটাক্ষ, ‘‘গোটা পানিহাটি চলে এক জনেরই অঙ্গুলিহেলনে। তাঁর ভরসাতেই হয়তো দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকেও এখানে চ্যালেঞ্জ জানানোর ‘সাহস’ কেউ কেউ দেখাচ্ছেন।’’

প্রথমে পুরমন্ত্রী, তার পরে মহকুমাশাসকের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠানোর পরেও এ দিন পুরসভায় এসে নিজের ঘরে মলয়ের বসা এবং কাজ করা নিয়ে পুরকর্মী ও স্থানীয়দের একাংশের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। যদিও মলয় স্পষ্ট বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যা চেয়েছেন, তা আমি করেছি। তবে, পুর আইন মোতাবেক বোর্ড অব কাউন্সিলর্সের বৈঠকে পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত আমিই পুরপ্রধান।’’ মহকুমাশাসক সৌরভ বারিক বলেন, ‘‘পদত্যাগপত্র পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিকের কাছে পাঠানো হয়েছে। আইন মেনে পরবর্তী প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’’ এ দিন মলয় নিজে সই করে বোর্ড অব কাউন্সিলর্সের বৈঠকের চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছেন সমস্ত পুরপ্রতিনিধির কাছে।

এ দিন মলয় এ-ও বলেন, ‘‘খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে। কী হবে না হবে, সেটা পরে জানা যাবে। খেলা অনেক বড়।’’ কাদের বিরুদ্ধে কোন খেলার কথা বলতে চাইছেন মলয়? তাঁর হয়ে খেলবেনই বা কারা? স্পষ্ট করে কিছু বলতে না চাইলেও মলয় শুধু বলেন, ‘‘আমিই তো বড় খেলোয়াড়। সবাইকে প্রশিক্ষণ দেওয়া আছে। এখন কত জন খেলতে পারেন, সেটা মাঠেই দেখা যাবে। খোলা মাঠেই খেলা হবে।’’ তা হলে কি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করতে পরোক্ষ ভাবে পুরপ্রতিনিধিদের বড় অংশকে কেউ কোনও ‘চাপ’ দিচ্ছেন? নতুন এই জল্পনাতেই এখন সরগরম পানিহাটি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Panihati municipality Panihati

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}