Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বাড়ির মেয়েরাও থাকত বোরখার আড়ালে

তা জমুক, শুক্রবার দুপুর থেকে সেই ধুলো সরিয়ে নতুন করে যেন জেগে উঠেছে বেলডাঙার বড়ুয়া বাজারের বোরখা ঘর আর শহরের প্রান্তে ফরাজিপাড়া।

বন্ধই পড়ে ‘বোরখা ঘর’ বেলডাঙায়

বন্ধই পড়ে ‘বোরখা ঘর’ বেলডাঙায়

 নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলডাঙা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৯ ০৪:১৭
Share: Save:

রাস্তার উল্টো দিকে চায়ের দোকানে থইথই ভিড়। প্লাস্টিকের কাপে সুড়ুৎ করে চায়ে চুমুক দিয়ে ইসরাত আলি বলছেন, ‘‘দোকানটার দিকে চোখ পড়লেই ছ্যাঁৎ করে ওঠে বুক!’’ ‘বোরখা ঘর’ ফ্যাকাসে সাইনবোর্ড আর প্রায় ছিন্ন ফ্লেক্স নিয়ে এখনও বড়ুয়া বাজারের সামনে চুপ করে আছে। শাটার ফেলা। বিস্তর ধুলো জমেছে।

তা জমুক, শুক্রবার দুপুর থেকে সেই ধুলো সরিয়ে নতুন করে যেন জেগে উঠেছে বেলডাঙার বড়ুয়া বাজারের বোরখা ঘর আর শহরের প্রান্তে ফরাজিপাড়া। যে পাড়ায় একটা একচালা ঘর ভাড়া নিয়ে দিব্যি সংসার পেতেছিলেন শাকিল আহমেদ, বোরখাঘরের মালিক। খাগড়াঘর বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া শাকিলের চেহারাটা এখনও মনে আছে আসলম আলির। ফরাজিপাড়ায় তাঁর দাদা আইনুল ইসলামের বাড়িতেই ভাড়া থাকতেন শাকিল। খাগড়াগড় কান্ডের পরে আইনুলকে দফায় দফায় তলব করে এনআইএ। আটপৌরে মানুষটার বুকের ব্যামো ধরে যায়। শেষতক দু’বছর আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারাই যান তিনি। আসলাম বলছেন, ‘‘দাদাকে যতবার তলব করা হয়েছে গিয়েছেন। কিন্তু শেষ দিকে আর চাপ নিতে পারছিলেন না। মারাই গেলেন। অপরাধীরা শাস্তি পেল, ভাল কথা। এ বার আমাদের বাড়িটা মুক্ত করা হলে আমাদের সুবিধা হয়।’’ এ দিন বড়ুয়া ফারাজিপাড়ার বাসিন্দা হজরত আলি বলেন, ‘‘এখনও মনে আছে, পাঁচ বছর আগে, টানা এগারো দিন ধরে তদন্ত চলেছিল বেলডাঙায়। সারা দিন গোয়েন্দারা আমাদের পাড়ায় ঘুরেছেন। ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকতাম, কে জানে বাবা, শাকিলের সঙ্গে তো আমারও আলাপ ছিল, কিন্তু জানতাম না তো তলে তলে এমন কান্ড করছে !’’

বেলডাঙার হাট পাড়াতেও একটা বাড়ি সিল করে দিয়েছে এনআইএ। বাড়ির দরজায় আজও ঝুলছে প্রোক্লেমেশন নোটিশ। হাটপাড়ার সেই বাড়িটি খুব ছোট। মোটরবাইক ঢুকলে বের করা কঠিন। শুক্রবার সেই বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা গেল সেই ছেঁড়া নোটিসের পাসে শ্যাওলা জমেছে। দরজায় কাগজ মোড়া তালা। বাড়ির মালিক আনসার শেখ বলেন, ‘‘কোনও কিছু না করেই বাড়িটা খোয়ালাম। ২০১৪ সালে যখন বিস্ফোরণের খবর টিভিতে দেখছি তার খানিক আগেই বাড়ি খালি করে সবাই পালিয়ে গিয়েছিল।’’

পাড়ার বাসিন্দা সফর আলি বলেন, ‘‘জানেন, ওই বাড়ির সদর দরজার উপর কালো কাপড় ঝুলত, সব সময়। ওরা কেউ পাড়ার কারও সঙ্গে মেলামেশা করত না। শুধু কোথাও গেলে ওদের বৌয়েরা মুখে কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে উল্টো দিকের বাড়িতে চাবি রেখে যেত।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Khagragarh Blast Beldanga House Close
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy