প্রতীকী ছবি।
কোভিড সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেসামাল দেশ। পশ্চিমবঙ্গেও সেই হানায় প্রতি দিন সংক্রমিত হচ্ছেন গড়ে প্রায় ২১ হাজার মানুষ। এ বার পরিস্থিতি সামাল দিতে ক্লাব, সামাজিক সংগঠন ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানাল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। আইসোলেশন হোমের সংখ্যা বাড়াতে ওই সংগঠনগুলিকে এগিয়ে আসার বার্তা দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর একটি নির্দেশিকা জারি করেছে। সেই নির্দেশনামায় লেখা হয়েছে, এ বার থেকে কোনও ক্লাব অথবা কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা করোনা-আক্রান্তদের জন্য ফাঁকা ফ্ল্যাট, ক্লাবঘর বা কমিউনিটি হলের ব্যবস্থা করতে পারেন। রাজ্য সরকার এই আইসোলেশন হোম গড়তে সব রকম সাহায্য করবে। সরকারি উদ্যোগে নিয়মিত চিকিৎসকরা রোগী দেখতে যাবেন। ২৪ ঘণ্টার জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্সরাও থাকবেন সেন্টারগুলিতে। সঙ্গে অক্সিজেন সরবরাহ সচল রাখার বন্দোবস্ত। পাশাপাশি, ওষুধ এবং প্রয়োজনীয় সব কিছুই সরবরাহ করা হবে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে। সরকারি ব্যবস্থা ছাড়াও বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গেও এই ধরনের আইসোলেশন হোম যুক্ত থাকতে পারবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
শুধু শহর কলকাতাই নয়, এই ধরনের উদ্যোগ রাজ্যের যে কোনও জেলায় নেওয়া হলে তাতে সহযোগিতা করবে রাজ্য সরকার। ২৩টি জেলার ক্ষেত্রেই এই নির্দেশনামা কার্যকর বলে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে জানানো হয়েছে। ইচ্ছুক ক্লাব, সামাজিক সংগঠন তথা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে সংশ্লিষ্ট জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। তবে এই ধরনের আইসোলেশন সেন্টার তৈরি করতে বেশ কিছু শর্তও আরোপ করেছে স্বাস্থ্য দফতর। প্রস্তাবিত আইসোলেশন সেন্টারে যাতায়াতের জন্য পৃথক দরজার বন্দোবস্ত থাকতে হবে। সঙ্গে রাখতে হবে স্যানিটাইজেশনের বন্দোবস্তও। এক রোগীর শয্যা থেকে অন্য রোগীর শয্যার মধ্যে অন্তত ১ মিটারের দূরত্ব রাখতে হবে।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, আইসোলেশন সেন্টারগুলিতে জ্বর, পালস, শ্বাসপ্রশ্বাস মাপার বন্দোবস্ত থাকা জরুরি। সঙ্গে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কত রয়েছে, তা জানার ব্যবস্থাও রাখতে হবে। রাখতে হবে অক্সিজেন সিলিন্ডার। আইসোলেশনে থাকা কোনও ব্যক্তির যদি অবস্থার অবনতি হয়, তাঁর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে শুরু করে। তা হলে তাঁকে চিকিৎসকদের পরামর্শে কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থাও রাখতে হবে। রোগীদের জন্য পরিবহণের ব্যবস্থা রাখার সঙ্গে ২৪ ঘণ্টার জন্য ওই সেন্টারে স্বেচ্ছাসেবক রাখাও জরুরি। নির্দেশনামায় বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি যদি উপসর্গহীন হন এবং তিন দিন যদি তাঁর জ্বর না আসে, সঙ্গে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রাও ঠিক থাকে, তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আইসোলেশন থেকে ছাড়া হতে পারে।
প্রসঙ্গত, করোনা মহামারির প্রথম থেকেই বহু ক্লাব, সামাজিক সংগঠন ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিষেবা দিতে এগিয়ে এলেও, তাতে সরকারি সিলমোহর ছিল না। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ বার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর এই নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করায়, সেই সব সংগঠনের সরাসরি সরকারের সঙ্গে যুক্ত হয়েই কোভিড রোগীদের পরিষেবা দিতে আর কোনও বাধা রইল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy