Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Kerosene Oil

লোকসভা ভোটের আবহে পশ্চিমবঙ্গের জন্য বরাদ্দ কেরোসিন তেলের পরিমাণ কমিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার

মে এবং জুন মাসের জন্য মোট ৩৯ হাজার ২১২ কিলোলিটার তেল বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রতি মাসের বরাদ্দ দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার কিলোলিটারের কম।

The central government reduced the amount of kerosene oil allocated to the states in the context of the Lok Sabha polls

কেন কেরোসিন তেলের বরাদ্দ আচমকা কমিয়ে দেওয়া হল? —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৪ ১২:৪৫
Share: Save:

লোকসভা ভোটের আবহে পশ্চিমবঙ্গের জন্য তেলের বরাদ্দের কমিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকার। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের তরফে রাজ্য খাদ্য দফতরকে এই সংক্রান্ত বিষয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেই চিঠিতে জানানো হয়েছে, মে এবং জুন মাসের জন্য মোট ৩৯ হাজার ২১২ কিলোলিটার তেল বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রতি মাসের বরাদ্দ দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার কিলোলিটারের কম। অথচ গত এপ্রিল মাসেও রাজ্যের জন্য কেরোসিন তেলের বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৫৮ হাজার কিলোলিটার। কিন্তু কেন এই বরাদ্দ আচমকা কমিয়ে দেওয়া হল, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনও জবাব পায়নি খাদ্য দফতর। লোকসভা ভোটের কারণে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারি প্রশাসনের সর্ব স্তর ব্যস্ত রয়েছে। তাই ভোটপর্ব মিটলেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই সংক্রান্ত বিষয়ে জবাবদিহি চাওয়া হবে বলে খাদ্য দফতর সূত্রে খবর।

পশ্চিমবঙ্গের জন্য কেরোসিনের সাধারণ বরাদ্দ মাসে ৫৮ হাজার কিলোলিটারের কিছু বেশি। কেরোসিন বরাদ্দ নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে মামলা চলছে। একটি মামলার ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, রাজ্য খাদ্য দফতর তাদের যে পরিমাণ কেরোসিনের চাহিদার কথা জানাবে, তা পর্যালোচনা করে কেন্দ্রকে বরাদ্দ করতে হবে। রাজ্যের জন্য কেরোসিন বণ্টন নীতি তৈরি না করা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারকে এই ব্যবস্থা চালাতে বলা হয়েছিল। খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, কেন্দ্রের কাছে যে পরিমাণ চাহিদার কথা জানানো হয়েছিল, তার থেকেও অনেক কম তেল দেওয়া হয়েছে। তবে ৪ জুনের পর কেন্দ্রে নতুন সরকার গঠন হলে আবারও নতুন করে বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য দরবার করতে হতে পারে রাজ্যকে।

পশ্চিমবঙ্গ কেরোসিন তেল ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অশোক গুপ্ত বলেন, ‘‘আমি কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরীকে বলেছিলাম, কেন্দ্রীয় সরকার দেশের ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে খাদ্যশস্য দিচ্ছে। অথচ রান্না করার জন্য তাদের জ্বালানির বন্দোবস্ত করতে কোনও রকম সুরাহা হচ্ছে না। তার উপর কেরোসিন তেলের দাম প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। খাদ্যশস্য দিলাম, অথচ জ্বালানি দিলাম না— এমন পরিস্থিতিতে কী হতে পারে, তা আমাদের মতো ডিলারদের থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আমলারা বেশি ভাল বোঝেন। উজ্জ্বলা যোজনায় যাঁদের গ্যাস দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের আর্থিক অবস্থা কী? সেটাও জানা দরকার। তাঁরা কি রান্নার গ্যাস কিনতে পারছেন? এই বিষয়টিও ভাবতে হবে। যদি তাঁরা গ্যাস না কিনতে পারেন, তা হলে তাঁরা কেরোসিন তেলের ওপরেই নির্ভর করবেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দাম বৃদ্ধির জন্য কেরোসিন তেলের চাহিদা কমে গিয়েছে। এর পাশাপাশি মাসের অনেকগুলি দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর কেন্দ্রীয় সরকার কেরোসিন বরাদ্দ করেছে। এর জন্য কয়েক মাস ধরে বরাদ্দ কেরোসিনের পুরোটা তোলা যাচ্ছিল না। এর সুযোগ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এ বার বরাদ্দ প্রচুর পরিমাণে ছেঁটে দিল। আরও বেশি গরিব মানুষ এ বার কাঠ, কয়লা প্রভৃতি পুড়িয়ে রান্না করতে বাধ্য হবে। তাতে দূষণ বাড়বে, বিশ্ব উষ্ণায়ন বাড়বে, পৃথিবীর ক্ষতি হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE