রাজ্যের পুরসভাগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ৪৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, গত শুক্রবার কেন্দ্রের তরফ থেকে নবান্নে এই সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়। অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে মিলিয়ন প্লাস সিটি প্রকল্পের আওতায়। রাজ্যের ১১৮টি পুরসভা এলাকায় পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য তা খরচ করা হবে। তবে এই অর্থ পাওয়ার প্রক্রিয়াটি সময়মতো সম্পন্ন হয়নি বলেই অভিযোগ প্রশাসনের একাংশের। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অর্থ আগের অর্থবর্ষেই পাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তা এল ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের শেষের দিকে। ফলে উন্নয়ন প্রকল্পগুলির বাস্তবায়নে বিলম্ব ঘটেছে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। যদিও কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি, তবে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের এক সূত্র জানাচ্ছে, অর্থ পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসনিক নানা কারণে এই দেরি হয়ে থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:
রাজ্য সরকার দীর্ঘ দিন ধরেই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলে আসছে। একাধিক বার অভিযোগ করা হয়েছে যে, কেন্দ্রীয় বরাদ্দের অর্থ সময়মতো রাজ্যের কাছে পৌঁছোয় না বা কেন্দ্র পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করে না। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ৪৬২ কোটি টাকা পাওয়াকে স্বস্তির বিষয় হিসেবে দেখা হলেও দেরি হওয়ার কারণে উন্নয়নমূলক কাজের গতি কিছুটা ব্যাহত হয়েছে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। এই অর্থ মূলত পুর এলাকায় নিকাশি ব্যবস্থা, পানীয় জল সরবরাহ, রাস্তা সংস্কার, বর্জ্য নিষ্কাশন এবং অন্যান্য নগরোন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করা হবে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। ইতিমধ্যে ব্যয়ের রূপরেখা চূড়ান্ত করতে শুরু করেছে পুরসভাগুলি।
রাজ্য-কেন্দ্র সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যেই এই বরাদ্দ অর্থ কিছুটা স্বস্তি দিলেও দেরি হওয়ায় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে যে চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। রাজ্য সরকার অবশ্য এখন এই অর্থ দ্রুত খরচ উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করতে ইচ্ছুক।
গত লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে তৃণমূলের ভাল ফল হলেও, পুরসভা এলাকাগুলিতে এগিয়ে গিয়েছিল বিজেপি। যে কারণে শহরাঞ্চলের উন্নয়নমূলক কাজে জোর দিয়েই সেখানকার ভোটারদের মন ফিরে পেতে চায় শাসকদল। যে ১১৮টি পুরসভার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, লোকসভা ভোটে তার মধ্যে বেশির ভাগ এলাকাতেই এগিয়ে ছিল বিজেপি। এই অর্থ পাওয়ার ফলে রাজ্য পুরসভা এলাকাগুলিতে কাজে জোর দিতে পারবে বলেই মনে করছে নবান্ন।