Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
R G Kar Hospital Incident

ওসিকে কি নিয়ন্ত্রণ করেছেন সন্দীপই, মুখোমুখি জেরা দু’জনকে, উঠছে প্রশ্ন

তদন্তকারীদের সূত্রের দাবি, প্রথম দফায় দেহ উদ্ধারস্থলের সুরক্ষা এবং তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের খামতি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। দ্বিতীয় দফায় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহের ত্রুটি নিয়ে অভিযুক্তদের তদন্তকারীরা প্রশ্ন করেন বলে সিবিআই সূত্রের খবর।

Representative Image

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

শুভাশিস ঘটক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৭:১৩
Share: Save:

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এর আগে দু’জনের বার বার দেখা হয়েছে। নানা দরকারে গত কয়েক মাসে ফোনে তো দু’জনের কথা হয়েইছে। এ বার ভিন্ন পরিবেশে, অভাবনীয় এক জায়গায় দু’জনে মুখোমুখি বসা হবে, তা কে কল্পনা করেছিল! রবিবার সন্ধ্যাতেই সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে আর জি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালায় সিবিআই। দু’জনের মোবাইলেই কিছু ‘কল’ নিয়ে প্রশ্ন করায় দু’জনেই অস্বস্তিতে পড়েন বলে তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি।

আর জি করে কর্তব্যরত চিকিৎসক ছাত্রীকে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনায় প্রমাণ লোপাটে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা যদি পুরোভাগে থাকে, তবে গুরুত্বপূর্ণ পার্শ্বচরিত্র হিসেবে অভিজিৎ মণ্ডলের ভূমিকাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলে তদন্তকারীদের সূত্রের দাবি। রবিবার রাত পর্যন্ত দু’জনকে মুখোমুখি বসিয়ে তদন্তের কয়েকটি দিক নিয়ে বার বার সিবিআই প্রশ্ন করে বলে সূত্রের খবর।

তদন্তকারীদের সূত্রের দাবি, প্রথম দফায় দেহ উদ্ধারস্থলের সুরক্ষা এবং তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহের খামতি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। দ্বিতীয় দফায় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহের ত্রুটি নিয়ে অভিযুক্তদের তদন্তকারীরা প্রশ্ন করেন বলে সিবিআই সূত্রের খবর। ৮ অগস্ট দুপুর থেকে ৯ অগস্ট রাত পর্যন্ত চেস্ট মেডিসিন বিভাগের সেমিনার রুম লাগোয়া তল্লাটের সবিস্তার ফুটেজ দরকার ছিল বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের অভিমত। কিন্তু মাত্র ২৭ মিনিটের ফুটেজ কেন সিবিআইয়ের হাতে এল? সদুত্তর মেলেনি অভিযুক্তদের কাছ থেকে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নষ্ট করার কাজেও টালার ওসি-কে ব্যবহার করা হয়— এমন সন্দেহ ক্রমশ জোরালো হচ্ছে বলে তদন্তকারীদের একাংশের সূত্রে দাবি। সন্দীপ ওসি-র উপরে কর্তৃত্ব ফলিয়েছেন, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে তদন্তকারীদের কারও কারও অভিমত।

এ ছাড়া, সন্দীপ এবং তাঁর গাড়ির চালকের ফোনের নথি খুঁটিয়ে দেখেও সন্দীপ মিথ্যা বলছেন বলে অনুমান জোরদার মিলছে না-বলে ওই সূত্রের দাবি। তদন্তকারীদের মতে, বিভিন্ন নথির ভিত্তিতে এই সন্দেহ ঘনীভূত হচ্ছে যে, আর জি করে কিছু ঘটেছে বলে সন্দীপ আগেই ওয়াকিবহাল ছিলেন।

দেহ উদ্ধারের জায়গায় থিকথিকে ভিড়ের জন্যও সন্দীপ এবং অভিজিৎ, দু’জনের দিকেই আঙুল উঠেছে। সিবিআই সূত্রে দাবি, সন্দীপই নানা জনকে ডেকে আনতে তৎপর ছিলেন বলে মনে করার কারণ রয়েছে। ওসি এ ক্ষেত্রে নিজের দায়িত্ব পালন না করে সন্দীপ ঘোষের অঙ্গুলিহেলনে চলেন বলেই তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন। ঘটনাস্থলে এত লোকের পায়ের ছাপে অপরাধের কিনারা গুলিয়ে যাবে জেনেও কেন এত জনকে সেমিনার কক্ষে ঢুকতে দেওয়া হল? কারা কারা ঘটনাস্থলে ঢুকেছিলেন, স্থানীয় ওসি বা পুলিশ কি তার কোনও তালিকা করেছে? অভিজিতের কাছে এর সদুত্তর মেলেনি।

৯ অগস্ট ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ দলের হাসপাতালে পৌঁছতেই বেলা ১টা বেজে যায়। এর আগেই তথ্যপ্রমাণ লোপাট বা বিকৃত করা হয় বলে দাবি তদন্তকারীদের সূত্রের। আজ, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানি। সেই সঙ্গে অভিজিৎ এবং সন্দীপকে আজই শিয়ালদহ অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের এজলাসে পেশ করার কথা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

R G Kar Hospital CBI Sandip Ghosh Abhijit Mondal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE