কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে বিকল্প পথে আয় বাড়ানোর প্রস্তাব দিতে চলেছে বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠন। ছবি: পিটিআই।
বাস ভাড়া কেন বাড়ানো সম্ভব নয়, শনিবার তার ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু বেসরকারি বাসের মালিকরা যদি বিকল্প কোনও প্রস্তাব দেন সে বিষয়ে অবশ্যই রাজ্য সরকার বিবেচনা করবে। আর পরিবহণমন্ত্রীর এই বার্তার পরইলিখিত আকারে বিকল্প প্রস্তাব জমা দিতে চলেছে বাস মালিকদের সংগঠন। আগামী সপ্তাহেই এই প্রস্তাবপত্রটি পরিবহণ দফতরে জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের নেতা তপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রস্তাবপত্রে রাজ্য সরকারের জন্য যেমন প্রস্তাব থাকছে, তেমনই প্রস্তাব থাকছে কেন্দ্রীয় সরকারে জন্যও।
প্রস্তাব প্রসঙ্গে বাস মালিকরা জানিয়েছেন, কলকাতায় বাস এক রকম ভাবে চলে। আর জেলার বাস পরিষেবা চালিত হয় সম্পূর্ণ ভিন্ন উপায়ে। জেলায় যে সমস্ত বাস চলে তার খরচ অনেক বেশি। জেলার বাসগুলোকে ২-৩টি টোল প্লাজা অতিক্রম করে পরিষেবা দিতে হয়। যে সব টোল প্লাজায় আগে ২৩০ টাকা টোল ট্যাক্স নেওয়া হত, এখন সেই সব টোলপ্লাজায় ৫৭০ টাকা টোল ট্যাক্স নেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে বাস মালিকরা টোল ট্যাক্স মুকুবের আর্জি জানাবেন। টোল ট্যাক্স বা ব্যাঙ্কের ইএমআই, বিমার ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়ার দাবি জানানো হবে ওই প্রস্তাবপত্রে।
তবে গত পৌনে ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে এমন অনেক বেসরকারি বাস রয়েছে, যেগুলি অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কারণ করোনা সংক্রমণের কারণে কার্যকর হওয়া লকডাউনে বাসগুলি দীর্ঘদিন বন্ধ হয়ে পড়েছিল। তাই কলকাতা-সহ বাংলার পরিবহণ পরিষেবা ছন্দে ফেরাতে হলে, সেই সমস্ত বাসও রাস্তায় নামানো প্রয়োজন বলে মনে করছেন বাস মালিকরা। তাঁদের কথায়,শুধু ভাড়া বাড়িয়ে হবে না। ২০২০-২১ আর্থিক বছরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে যে সব বাস এখন দাঁড়িয়ে আছে। তার রক্ষণাবেক্ষণ-সহ বিমা বাকি রয়ে গিয়েছে। অনেক বাসের ব্যাটারি ও টায়ার চুরি হয়ে গিয়েছে। সে ইসব বাসকে রাস্তায় নামাতে গেলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। তাই নিজেদের প্রস্তাবে বাস মালিকরা দাবি জানাবে, রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ দেওয়া হোক। এক্ষেত্রে জেলাস্তরে যে সমস্ত সমবায় ব্যাঙ্ক রয়েছে, তার সঙ্গে জেলা আরটিও সমন্বয় করে সরকারি খাতায় নথিভুক্ত বাসগুলির জন্য ২ লক্ষ টাকা করে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হোক। এমনটা হলে ভাড়া না বাড়ালেও বাসগুলি রাস্তায় নামানো সম্ভব হবে।
মিনিবাস অপারেটার্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ঘোষ বলেন, ‘‘শুধু ভাড়া বাড়িয়ে সার্বিক সমস্যা মিটবে না। বাস মালিকদের সঙ্গে সরকারপক্ষের বিস্তারিত আলোচনা করা উচিত। আমাদের সমস্যা আগে রাজ্য সরকার জানলে, তবেই সমস্যার সমাধান হবে।’’ একই বক্তব্য ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস এন্ড মিনিবাস ওনার্সের প্রদীপ নারায়ণ বসুর। তিনি বলেন, ‘‘একটি বাসের উপর কমপক্ষে ৫-৬টি পরিবার নির্ভর করে। এখন এই শিল্পকে বাঁচাতে গেলে কেবলমাত্র ভাড়া বাড়ানো, ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ বৃদ্ধি, পার্কিং ফিতে ছাড় দিলেই চলবে না। আরও অনেক বিষয়ের দিকে নজর দিতে হবে। যাতে এই শিল্পর সঙ্গে যুক্ত পরিবারগুলি অনাহারে শেষ না হয়ে যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy