নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে ধৃত তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
শনিবার মুখ খুললেন প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হাতে গ্রেফতার হুগলির বলাগড়ের তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা গোপাল দলপতি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডের ‘আসল (মেন) লোক’।
পাশাপাশি, মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ তাপস মণ্ডল এবং গড়িয়ার ব্যবসায়ী নীলাদ্রি ঘোষের বিরুদ্ধেও টাকা নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ধৃত যুবনেতা। কিন্তু বলাগড়ের আর এক যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি কোনও টাকা দেননি বলে জানিয়েছেন কুন্তল।
শুক্রবার বিধাননগর হাসপাতালে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কুন্তলকে। সেখানে থেকে সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির দফতরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় কুন্তল বলেন, ‘‘অনেক কোটি টাকা নিয়েছে ওরা। আমার কাছ থেকে জোর করে নিয়েছে।’’ তাপসের ঘনিষ্ঠ গোপাল সকলের হয়ে টাকা নিয়েছিলেন বলেও দাবি করেন কুন্তল। তাঁর কথায়, ‘‘গোপাল দলপতি সব থেকে ‘মেন’। সকলের হয়ে টাকা নিয়েছে।’’
কুন্তল শুক্রবার বলেন, ‘‘শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও কথা আমি বলতে পারব না কিছু। আমি জানি না।’’ ধৃত যুবনেতার দাবি, তাপসের সঙ্গে তিনি শান্তনুর আলাপ করিয়ে দেননি তিনি। নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে তাঁদের তিন জনের কোনও বৈঠক হয়নি বলেও জানান কুন্তল। প্রসঙ্গত, শান্তনু আগেই বলেছেন, দু’জনের বাড়িই বলাগড় এলাকায় হলেও তিনি কুন্তলকে চেনেন না!
যদিও ইডি সূত্রের খবর, ২০১৪ থেকেই নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত শান্তনু এবং কুন্তল। এবং প্রাথমিক তদন্তে ইডি জেনেছে, নিয়োগ দুর্নীতিতে শান্তনু ছিলেন কুন্তলের ‘মেন্টর’। বাঁকা পথের কোন কাজটা কে করবে, ‘বোঝাপড়া’র ভিত্তিতে নিজেদের মধ্যে সেটাও ঠিক করে নিয়েছিলেন ওই দুই যুব নেতা। ইডি সূত্রের দাবি, মূলত ‘প্রভাবশালী’ লোকেদের সঙ্গে লেনদেনের দায়িত্বে ছিলেন শান্তনু। আর যাঁদের জন্য এবং যাঁদের দিয়ে টাকা তোলার কাজটা চলত, সেই কর্মপ্রার্থী ও এজেন্টদের সঙ্গে ‘বোঝাপড়ার’ ভার ন্যস্ত ছিল কুন্তলের উপরে।
এই কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত, বেসরকারি কলেজ সংগঠনের নেতা তাপস মণ্ডলের দাবি, শান্তনুর সঙ্গে কুন্তলই তাঁর পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে তাপসের অভিযোগ, ‘পিছনের দরজা’ দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ করার জন্য তাঁর চেনাজানা বহু প্রার্থীর কাছ থেকে ১৯ কোটিরও বেশি টাকা নিয়েছেন কুন্তল। তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, যাবতীয় অভিযোগ যাচাই করা হচ্ছে।
গত শুক্রবার হুগলির বলাগড়ে শান্তনুর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত বহু নথি উদ্ধার হয়েছে বলেও ইডি সূত্রের খবর। তার পরেই আয়কর রিটার্ন এবং তাঁর বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি-সহ শান্তনুকে পর পর তলব করা হয়। তাঁকে বুধবার প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে ইডি। ওই দিন তাঁকে কুন্তল-তাপসের মুখোমুখি বসিয়েও প্রশ্ন করা হয়। বৃহস্পতিবার, প্রজাতন্ত্র দিবসেও তাঁকে ডেকে কুন্তলের সঙ্গে বসিয়ে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ চলে। রাত পর্যন্ত শান্তনু ইডি দফতরে ছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy