Advertisement
১৩ নভেম্বর ২০২৪
Manik Bhattacharya

হবু শিক্ষকের প্রশিক্ষণে মানিকও পেতেন ‘দক্ষিণা’! ১০ কোটি টাকার হদিস মিলেছে, কোর্টে দাবি ইডির

বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে প্রাথমিকের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য অর্থ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ইডি আদালতকে জানিয়েছে, যাঁরা সময়ে ভর্তি হতে পারতেন না, তাঁদের টাকা দিতেই হত মানিককে।

মানিক ভট্টাচার্য।

মানিক ভট্টাচার্য। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২২ ১৭:৩৬
Share: Save:

মানিক ভট্টাচার্যকে উপযুক্ত ‘দক্ষিণা’ দিয়ে তবেই প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষক হতে চাওয়া অন্তত ৬০০ প্রার্থী। বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে প্রাথমিক শিক্ষাপর্ষদের অধুনা প্রাক্তন সভাপতি মানিক এঁদের কাছ থেকে মাথাপিছু ৫ হাজার টাকা করে নিতেন বলে অভিযোগ করল ইডি। মঙ্গলবার মানিকের জেল হেফাজত চেয়ে আদালতে আর্জি জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। আদালতের কাছে তারা মানিকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েক দফা তথ্য পেশ করেছে। তার মধ্যেই রয়েছে এই তথ্যটিও। একই সঙ্গে এই মামলায় এখনও পর্যন্ত আনুমানিক ১০ কোটি টাকার হদিস মিলেছ বলেও আদালতকে জানিয়েছেন ইডির আইনজীবীরা।

মঙ্গলবার ইডির তরফে আদালতে হাজির ছিলেন দুই আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি এবং ভাস্কর প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরাই মানিকের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে হবু প্রাথমিক শিক্ষকেদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেওয়ার অভিযোগ আনেন। ইডির তরফে আইনজীবীরা জানান, প্রাথমিকের শিক্ষক হওয়ার ডিএলএড প্রশিক্ষণে অনলাইনে ভর্তি হতে না পারলে অফলাইনে ভর্তি করার ব্যবস্থা করে দিতেন মানিক। রাজ্যে এই প্রশিক্ষণ দেওয়ার কম করে ৬০০টি কলেজ রয়েছে। অফলাইনে ভর্তি হওয়ার আবেদন পিছু ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে ৫০০০ টাকা করে নিতেন মানিক। আর এই অফলাইনে ভর্তির জন্যই টাকা দিতে হত মানিককে। ইডি জানিয়েছে, ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত অফলাইন রেজিস্ট্রেশনের জন্য মানিককে এই টাকা দিয়েছেন ছাত্র-ছাত্রীরা।

মানিকের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ এনে ইডির আইনজীবীরা আদালতকে জানান, যখনই তাঁরা এই মামলায় আদালতে আসেন কোনও না কোনও বড় অঙ্কের টাকার হদিস পাওয়া যায়। অফলাইনে ভর্তি হওয়ার জন্য টাকা নেওয়ার ঘটনাটি তাতে নবতম সংযোজন। এই সব নিয়ে এই মামলায় আনুমানিক দশ কোটি টাকার হদিস মিলেছে বলেও আদালতকে জানান তাঁরা। তবে একই সঙ্গে অফলাইনে ভর্তির ঘটনায় মানিক মোট কত অর্থ পেয়েছেন, আর কত জন ছাত্র-ছাত্রী তাঁকে এই অর্থ দিয়েছেন, তা জানতে এখনও তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। তদন্ত শেষ হলে তবেই এই হিসাব পাওয়া যাবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে মানিকের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া সিডিতে প্রায় ৪ হাজার টেট প্রার্থীর নাম এবং রোল নম্বর পাওয়া গিয়েছিল। মঙ্গলবার সেই প্রসঙ্গও টেনে ইডি আদালতকে জানিয়েছে, ওই ৪ হাজার প্রার্থীর মধ্যে ২ হাজার পাঁচশো জনই চাকরি পেয়েছিলেন টেটে। এ ব্যাপারে পর্ষদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেছিল ইডি। তাদের থেকে পাওয়া তথ্য মিলিয়ে দেখেই এই পরিসংখ্যান পেয়েছে তারা। অন্য দিকে, মানিকের পুত্র শৌভিক ভট্টাচার্যের সংস্থা এডুক্লাসকে ২ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকা বেআইনি ভাবে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে ইডি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE