টেটের প্রশ্নপত্র উধাও রহস্যের এখনও কিনারা করতে পারেনি সিআইডি। তার উপরে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাল, প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের ওই পরীক্ষা ঘিরে ‘অসাধু চক্র’ সক্রিয়।
এমতাবস্থায় পরীক্ষাটি আদৌ নির্বিঘ্নে হবে কিনা, তা নিয়েও সংশয় বেড়েছে। প্রশ্নপত্র উধাওয়ের জেরে দু’বার পিছিয়ে টেটের দিন আপাতত ধার্য হয়েছে আগামী ১১ অক্টোবর।
গত ২৬ অগস্ট সল্টলেকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের গুদাম থেকে বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে পাঠানোর সময়ে প্রশ্নপত্রের একটি প্যাকেট খোয়া যায়। তদন্তে নামে সিআইডি। তাদের সন্দেহ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ভবনকে ঘিরেই। অন্য দিকে, বিরোধীরা এতে শাসকদলের যোগসাজস দেখছে। তাদের বক্তব্য, প্রাথমিকে শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার নামে শাসকদলের লোকেরা মোটা টাকা আদায় করেছে। এখন অত জনের চাকরি দেওয়া সম্ভব নয় বুঝতে পেরে নানা ভাবে পরীক্ষা ভন্ডুলের চেষ্টা করছে।
এই ডামাডোলের মধ্যে পর্ষদের বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষার্থীদের দুশ্চিন্তা আরও বেড়েছে। কী বলছে বিজ্ঞপ্তি?
পর্ষদ বলেছে, ‘কিছু অসাধু ব্যক্তি ও অসাধু চক্র নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে পরীক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত ও প্রতারিত করার চেষ্টা করছে।’ প্রসঙ্গত, পর্ষদের দিকে অভিযোগের আঙুল ওঠায় তাদের বলতে হয়, প্রশ্নপত্র লোপাটের সঙ্গে তারা জড়িত নয়। স্বচ্ছতা ও সততার সঙ্গে পরীক্ষার আশ্বাসও দিয়েছে পর্ষদ। এ-ও বলেছে, ‘পরীক্ষার ফল প্রকাশের পরে যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে সফল পরীক্ষার্থীদের নিয়োগ করা হবে।’
হঠাৎ এমন বিজ্ঞপ্তি কেন?
পর্ষদের যুক্তি: ৩০ অগস্টের টেট পরীক্ষার আগে বাঁকুড়া-সহ কয়েকটি জেলায় টাকার বিনিময়ে ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। কয়েক জন ধরাও পড়লেও চক্রটি চিহ্নিত হয়নি। সম্প্রতি আলিপুরদুয়ার থেকেও সেই অভিযোগ এসেছে। পরীক্ষার্থীদের সতর্ক করতেই এমন বিজ্ঞপ্তি বলে পর্ষদ দাবি করলেও এতে পরীক্ষার্থীরা সন্দিহান।
পর্ষদ-কর্তারা তা না মানলেও এক পরীক্ষার্থীর কথায়, ‘‘বিজ্ঞপ্তি দেখে আমাদের আশঙ্কা বেড়েছে। মনে হচ্ছে, দুর্নীতিবাজরা পর্ষদের চেয়েও শক্তিশালী। আর তাদের বাগে আনতে না-পেরেই এমন একটা বিজ্ঞপ্তি জারি করা হল।’’ ১১ অক্টোবর শেষমেশ টেট হবে কি না, তা নিয়েও সংশয়ে পড়ে গিয়েছেন পরীক্ষার্থীদের অনেকে।
বস্তুত বিঘ্নের আশঙ্কা যে রয়েছে, পর্ষদের একাংশও ঠারেঠোরে তা স্বীকার করে নিচ্ছেন। এক কর্তা যেমন বলেন, ‘‘প্রশ্ন উধাও নিয়ে একেই দুশ্চিন্তার শেষ নেই। সিআইডি এখনও সফল হয়নি। এই অবস্থায় ফের কোনও বিঘ্ন ঘটলে পর্ষদের ঘাড়ে দায় চাপতে পারে।’’
সেই দায় এড়ানোর তাগিদেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আগাম বার্তা দেওয়া হল বলে শিক্ষামহলের অনেকেরই মত। বিরোধীরা অবশ্য অন্য ‘সমীকরণ’ দেখছেন। সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তৃণমূলের লোকেরা চাকরি দেওয়ার নামে প্রচুর টাকা তুলেছে। এখন সবাইকে চাকরির নিশ্চয়তা দিতে না-পেরে বিপাকে পড়েছে।’’
পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘এমন বিজ্ঞপ্তি আমরা আগেও দিয়েছি। প্রার্থীদের সচেতন করতে চাইছি। অন্য উদ্দেশ্য নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy