— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
এই প্রথম পুজোর বোনাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের অস্থায়ী কর্মীরা। তবে কেবল বোনাস নয়, দীর্ঘ দিন ধরে বেতন বকেয়া থাকায় চূড়ান্ত অসুবিধায় দিন কাটাচ্ছেন নিগমের দৈনিক মজুরি ভিত্তিক এই কর্মীরা।
প্রতি বছর ছ’হাজার টাকা করে পুজোর বোনাস পান নিগমের ২৮টি প্রকল্পের অধীনে থাকা প্রায় ৬৫০ জন কর্মী। মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, ওই প্রকল্পগুলির মধ্যে কেবল চারটি প্রকল্পের কর্মীরা নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন। বোনাস আদৌ হবে কি না, বা বেতন অনিয়মিত কেন, তা জানতে শুক্রবার রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী এবং নিগমের এমডি সরিৎ ভট্টাচার্যকে একাধিক বার ফোন করা হলে তা বেজে গিয়েছে। এসএমএস, হোয়াটসঅ্যাপ করা হলেও শনিবার পর্যন্ত জবাব মেলেনি।
মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, সব থেকে বেশি সময় ধরে বেতন বকেয়া রয়েছে শিলিগুড়ির হোটেলে। সেখানে নিগমের চার জন কর্মী ২৭ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। কর্মীরা জানান, ধারদেনা করে সংসার চলছে। অন্য সদস্যের রোজগারে কোনও রকমে দিন কাটছে। এক কর্মীর খেদ, ‘‘ করোনার আগে পর্যন্ত বেতন নিয়মিত পেতাম। ২০২২ সালের মে থেকে বেতন একেবারে বন্ধ। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের বেতন গত জুলাইয়ে শেষ পেয়েছিলাম।’’
পূর্ব বর্ধমানের যমুনাদিঘি প্রকল্পে মাছচাষের পাশাপাশি অতিথি নিবাস রয়েছে। করোনার আগে পর্যন্ত লাভজনক ভাবে মাছচাষ হত সেখানে। পূর্ব ভারতের বৃহত্তম মাছ চাষের ওই প্রকল্পের অধীনে ৩০ জন কর্মী ১৭ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। কলকাতার গোলতলায় অধীনে থাকা নিগমের কর্মীরাও ১৭ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। দক্ষিণ ২৪ পরগনার হেনরি আইল্যান্ড প্রকল্পের কর্মীরা আট মাস ধরে বেতন থেকে বঞ্চিত। দিঘার একাধিক প্রকল্পেও কর্মীদের বেতন বন্ধ। বিভিন্ন প্রকল্পের কর্মীরা জানাচ্ছেন, বাচ্চাদের নতুন জামা কিনে দেওয়ার জন্য পুজোয় বোনাসের অপেক্ষায় ছিলেন তাঁরা।
অভিযোগ, করোনার পর থেকে রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমে একাধিক দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসে। আর জি করের মতো মৎস্য নিগমেও দুর্নীতির পাহাড় রয়েছে। তদন্ত হলে অনেক কিছু সামনে আসবে।’’ নিগমের কর্মীদেরও অভিযোগ, ‘‘করোনার আগে পর্যন্ত নিগমের তহবিলে ১০০ কোটি টাকা স্থায়ীআমানত ছিল। অথচ করোনার পর থেকেই নিগমের পতন শুরু হল। যথাযথ তদন্ত চাই।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মীদের বক্তব্য, ‘‘কাজ করেও বেতন পাচ্ছি না। অথচ পুজোর জন্য ক্লাবগুলিকে ৮৫ হাজার টাকা দান করছে সরকার।’’ সরকার কর্মীদের বকেয়া বেতন অবিলম্বে না দিলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy