প্রতীকী ছবি।
তাগিদটা পেটের। রুটিরুজির খোঁজে এক বন্ধুর মাধ্যমে বাংলাদেশবাসী মেয়েটির যোগাযোগ হয় বেঙ্গালুরুতে বসে থাকা ‘কর্মদাতা’র সঙ্গে। বিউটি পার্লারে কাজ জুটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয় সেই ‘কর্মদাতা’। সেটা যে টোপ, কাজের আশ্বাস দিয়ে তাকে যে পাচার ও বিক্রির চক্রান্ত চলছে, জানত না ওই নাবালিকা কিশোরী। পাচারকারীদের দুরভিসন্ধি সফল হওয়ার আগেই অবশ্য সিআইডি-র অফিসারদের হাতে গ্রেফতার হয়েছে দুই দুষ্কৃতী। উদ্ধার করা হয়েছে মেয়েটিকে।
পাচারকারীরা যে বাংলাদেশের এক নাবালিকাকে উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগর দিয়ে নিয়ে আসছে, সোমবারেই সেই খবর পেয়ে যান সিআইডি-র অ্যান্টি হিউম্যান ট্র্যাফিকিং ইউনিটের অফিসারেরা। তবে গোয়েন্দাদের হাতে তখন তথ্য বলতে ছিল দুষ্কৃতীদের গাড়ির মডেল এবং রং। সেই সঙ্গে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, মেয়েটিকে নিয়ে গাড়ি আসবে হাওড়া স্টেশনে। তার পরে ট্রেনে তুলে নিয়ে যাওয়া হবে বেঙ্গালুরুতে। সেখানে পাচার চক্রের অন্যতম সর্দারের মাধ্যমে বেচে দেওয়া হবে ওই বিদেশিনিকে।
মেয়েটির বাড়ি বাংলাদেশের মিরপুরে। মঙ্গলবার হাওড়া স্টেশনে নিউ কমপ্লেক্সের উল্টো দিকের পার্কিং লট থেকে সন্দেহজনক একটি গাড়িকে আটক করে গোপাল মণ্ডল ও শেখ আব্দুল সালাম নামে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। মেয়েটি ছিল সেই গাড়িতেই। ধৃত গোপালের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে আর সালাম থাকে হাওড়ার উলুবেড়িয়ায়। গোয়েন্দারা জানান, মঙ্গলবার ওই গাড়িতে মেয়েটিকে উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগর থেকে নিয়ে এসেছিল গোপাল। সে-দিনেই নাবালিকাকে নিয়ে সালামের হাওড়া থেকে দুরন্ত এক্সপ্রেসে চেপে বেঙ্গালুরু যাওয়ার কথা ছিল। সেখানে তাকে তুলে দেওয়ার কথা ছিল পাচার চক্রের পান্ডা, সেই ‘কর্মদাতা’র হাতে।
সিআইডি জানায়, সোমবার চোরা পথে সীমান্ত পার করিয়ে মেয়েটিকে গোপালের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ঠিক হয়, গোপাল ওই কিশোরীকে নিয়ে হাওড়া স্টেশন গিয়ে তাকে তুলে দেবে সালামের হাতে। কী ভাবে ধরা পড়ল দুই অভিযুক্ত পাচারকারী?
এক তদন্তকারী জানান, তাঁরা জানতে পারেন, মঙ্গলবার সকালে পাচারকারীরা হাওড়ায় পৌঁছবে। গোয়েন্দাদের তিন জনের একটি দল হাওড়া স্টেশনের নতুন কমপ্লেক্সে পৌঁছয়। সঙ্গে সাদা পোশাকে হাওড়ার গোলাবাড়ি থানার পুলিশ। নির্দিষ্ট সময়েই আসে গাড়ি। তার নম্বরও মিলে যায়। পার্কিং লটে গাড়িটি দাঁড়ালে তা থেকে নেমে এসে ফোন করতে থাকে গোপাল। মেয়েটি গাড়িতেই ছিল। গোয়েন্দারা আঁচ করেন, ট্রেনের
টিকিট নিয়ে অন্য কেউ আসবে এবং সে-ই মেয়েটিকে বেঙ্গালুরু নিয়ে যাবে। সেই অনুযায়ী অপেক্ষা করতে থাকে দলটি। মিলে যায় গোয়েন্দাদের অনুমান। কিছু ক্ষণের মধ্যে চলে আসে সালাম। সে নাবালিকাকে নিয়ে স্টেশনের দিকে এগোতেই গোয়েন্দাদের দলটি তিন জনকে ঘিরে ধরে আটক করে।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, মেয়েটি মঙ্গলবারেই এ দেশে ঢুকেছিল। যে ওই নাবালিকাকে এ দেশে নিয়ে এসেছে এবং যে তাকে চাকরির আশ্বাস দিয়েছে, মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে পাচার চক্রের সেই দুই সদস্যের খোঁজ করছে সিআইডি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy