স্কুলের গেটে তালা। —নিজস্ব চিত্র।
দিদিমণির মানিব্যাগ থেকে টাকা চুরি গিয়েছে! সেই চুরি যাওয়া টাকা খুঁজে বার করতে তল্লাশির নামে স্কুলের বাচ্চাদের বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগ উঠল সেই দিদিমণির বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার উত্তাল হল কোচবিহারের দিনহাটার উত্তর পুটিমারি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাণীনিকেতন শিশু শিক্ষাকেন্দ্র। বাচ্চাদের মুখে শিক্ষিকার হাতে ‘নিগ্রহের’ কথা শুনে স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকেরা। স্কুলে তালাও ঝুলিয়ে দেন তাঁরা।
দুই বাচ্চাকে ‘সামান্য’ মারধরের কথা স্বীকার করলেও, তাদের বিবস্ত্র করে মারধরের বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন স্কুলের অভিযুক্ত শিক্ষিকা অনিতা রায় অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘মায়ের চিকিৎসার জন্য হাজার দেড়েক টাকা নিয়ে স্কুলে গিয়েছিলাম। সেই টাকা চুরি গিয়েছে। ব্যাগের চেন খোলা ছিল। দেখি এক টাকাও নেই। তাই মিড ডে মিলের রাঁধুনিদের সাহায্য নিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছিলাম। হ্যাঁ, দুটো বাচ্চাকে মেরেছি। কিন্তু বিবস্ত্র করে মোটেই কাউকে মারধর করিনি।’’
স্কুল সূত্রে খবর, টাকা চুরির ঘটনাটি বুধবার ঘটেছিল। তল্লাশি চালিয়ে অবশ্য পড়ুয়াদের কাছ থেকে কিছুই পাওয়া যায়নি। এর পর বৃহস্পতিবার স্কুলে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়াদের বাবা-মায়েরা। ‘নিগৃহীত’ এক ছাত্রের অভিযোগ, ‘‘আমরা স্কুলের মাঠে খেলা করছিলাম। হঠাৎ দিদিমণি আমাদের জিজ্ঞাসা করেন, আমরা টাকা নিয়েছি কি না। আমরা বলেছি, ‘না, নিইনি।’ তার পরেই মোটা লাঠি দিয়ে আমাদের মেরেছে দিদিমণি। আমার হাত ফুলে গিয়েছে।’’
টুম্পা বর্মণ নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘‘ব্যাগ থেকে টাকা চুরি করার সন্দেহে বাচ্চাদের উলঙ্গ করে তল্লাশি চালিয়েছেন দিদিমণি। বাচ্চারা খুব কান্নাকাটি করছিল। বাচ্চাদের মারধরও করেছেন দিদিমণি। মেরে হাত-পা ফাটিয়ে দিয়েছেন। বাচ্চারা বলছিল যে ওরা টাকা নেয়নি। তার পরেও দিদিমণি কিছু শুনছিলেন না।’’
অভিভাবকদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন অভিযুক্ত শিক্ষিকা। তিনি বলেন, ‘‘বুধবারের ঘটনার পর আমার বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে গিয়েছিলেন কয়েক জন অভিভাবক। আমার বাড়ির লোকেদের নোংরা ভাষায় গালিগালাজও করা হয়েছে।’’
শিশু শিক্ষাকেন্দ্রগুলির পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সমিতি এডুকেশন অফিসার দীপঙ্কর পাল বলেন, ‘‘যদি শিক্ষিকা এমন কাজ করে থাকেন, তা হলে উনি মারাত্মক অপরাধ করেছেন। বাচ্চাদের শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচার শিক্ষার অধিকার আইনের বিরুদ্ধে। তদন্ত করে দেখছি।’’
দিনহাটা ১ নম্বর ব্লকের বিডিও গঙ্গা ছেত্রী বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমার কাছে অভিযোগ এসেছে। ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তা হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy