ক্লাব সমন্বয় কমিটি গঠনের মঞ্চ। নিজস্ব চিত্র
ভোট আসতেই অরাজনৈতিক বাঁক নিচ্ছে রাজনীতি।
সম্প্রতি শুরু হয়েছে ‘বাংলার যুবশক্তি’ কর্মসূচি। অরাজনৈতিক এই উদ্যোগের নেপথ্যে রয়েছেন যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে এই সময়েই মেদিনীপুর শহরে গড়ে উঠল ক্লাব সমন্বয় কমিটি। বিভিন্ন সামাজিক কাজের সমন্বয় করতেই কমিটি। তবে, তৃণমূলের অন্দরের একাংশ মেনে নিয়েছেন এর আড়ালে রয়েছে রাজনীতিই। কারণ, যাঁদের উদ্যোগে এই কমিটি গঠন, তাঁরা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী হিসেবেই পরিচিত। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর হলে বর্ধিত সভা ডেকে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। ‘মেদিনীপুর শহর ক্লাব সমন্বয় কমিটি’ নামের এই সংগঠনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে শুভেন্দুকেই। তাঁর সম্মতি চেয়ে চিঠি পাঠানো হচ্ছে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শে তাই ‘বাংলার যুবশক্তি’ কর্মসূচির পরিকল্পনা করা হয়েছে। লকডাউনের আগে গড়বেতায় ক্লাব সমন্বয় মঞ্চ গঠন হলেও মেদিনীপুরের ওই কমিটি তৈরিকে ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। কারণ, কমিটির গঠন। প্রস্তাবিত কমিটিতে পৃষ্ঠপোষক রয়েছেন তিনজন। মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন্দ্রনাথ মাইতি, প্রাক্তন পুরপ্রধান প্রণব বসু, মেদিনীপুর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রাজকুমার দাস। কমিটি ৩৭ জনের। উপদেষ্টামণ্ডলীতে রয়েছেন ১৬ জন। এঁদের মধ্যে যেমন উদ্যোগপতি, প্রাক্তন খেলোয়াড় রয়েছেন, তেমন চিকিৎসক, শিক্ষক প্রমুখও রয়েছেন। কমিটির সভাপতি হয়েছেন স্নেহাশিস ভৌমিক। তিনি তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক তথা দলের শহর কার্যকরী সভাপতি। স্নেহাশিস বলেন, ‘‘ক্লাবগুলির সুবিধা- অসুবিধা দেখা, সঙ্কটে মানুষের পাশে দাঁড়াতেই আমাদের এই উদ্যোগ। শুভেন্দুদার সঙ্গে কথা বলেই এই কমিটি করা হয়েছে। লকডাউন উঠলেই সামাজিক কর্মসূচি করব। শুভেন্দুদা আসবে। প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে শুভেন্দুদার নামই গৃহীত হয়েছে।’’
সম্প্রতি জেলার রাজনীতি থেকে কিছুটা সরিয়ে নিয়েছেন শুভেন্দু। এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দু অনুগামীদের নিয়ে গড়ে উঠল ক্লাব সমন্বয় কমিটি। তাৎপর্যপূর্ণ হল, এই কমিটিতে নেই নির্মাল্য চক্রবর্তী। নির্মাল্য যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেকের অনুগামী বলেই পরিচিত। নির্মাল্য মেদিনীপুরের বিদায়ী কাউন্সিলর তথা জেলা যুব তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি। যুবশক্তি কর্মসূচি রূপায়নে গঠিত স্টেট মনিটরিং কমিটিরও অন্যতম সদস্য নির্মাল্য। তাঁর দায়িত্বে রয়েছে ছ’টি জেলা। লকডাউনপর্বের শুরুতে স্নেহাশিস, নির্মাল্যকে একের পর এক কর্মসূচিতে দেখা গিয়েছে। দু’জনে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করেছেন। তৃণমূলের অন্দরে জল্পনা, এখন না কি ছবিটা বদলেছে! ক্লাব সমন্বয় কমিটিতে নেই কেন? নির্মাল্যর জবাব, ‘‘একা কতগুলি দায়িত্বে থাকব! দায়িত্ব তো ভাগ করে নিতে হবে, তাই না!’’
মেদিনীপুরে প্রায় ১৫০টি ক্লাব রয়েছে। স্নেহাশিস জানিয়েছেন, তার মধ্যে ১১৫টি ক্লাব ইতিমধ্যে সমন্বয় কমিটির অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ক্লাব-রাজনীতি নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বিরোধীরা। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওরা (তৃণমূল) ভোটের জন্য ক্লাবগুলিকে ব্যবহার করতে চাইছে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, "আমাদের দলের নেতাকর্মীরা ওই সংগঠনে থাকতে পারেন। তবে ওটা অরাজনৈতিক সংগঠন। সবকিছুতে রাজনীতি জড়িয়ে দেওয়া ঠিক নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy