মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি
বাবা-ছেলেদের নাম নেননি এক বারও। তবে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসনিক বৈঠক থেকে আগাগোড়া অধিকারীদের নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাঁথি পুরসভা থেকে হলদিয়ার কারখানা, কিংবা দিঘার হোটেল— ইঙ্গিতেই একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে কখনও বিঁধলেন শিশির অধিকারীকে, কখনও শুভেন্দু অধিকারীকে।
বুধবার প্রশাসনিক বৈঠকের গোড়াতেই পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজির কাছের দিঘা সম্পর্কে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। এখন দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ জেলাশাসক দেখছেন জেনে মমতার মন্তব্য, ‘‘দিঘায় হোটেল এবং অনেক কিছুই হতে পারে। একটু দেখে নিও। কারণ আগে অনেক বেনিয়ম হয়েছে। সেগুলো একটু কাগজপত্র দেখে নাও।’’ পরে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ (এইচডিএ)-এর চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় করকেও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনি হলদিয়ায় দায়িত্বে আছেন। এইচডিএ-র জমিগুলি দেখে রাখবেন। যেন ইধার-উধার না হয়।’’ দীর্ঘ দিন দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান ছিলেন শিশির, আর এইচডিএ-র দায়িত্বে ছিলেন শুভেন্দু। এ প্রসঙ্গে শিশিরের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওঁর কাছে যদি এতই কাগজপত্র রয়েছে, মামলা করলেই পারেন।’’
এ দিন প্রশাসনিক বৈঠকের মাঝ-পর্বে দুই মেদিনীপুর জেলার কেলেঘাই নদী সংস্কার প্রকল্প নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। তখন ফের মমতা বলেন, ‘‘কেন্দ্র টাকা দেয়নি। তা-ও রাজ্যের ক্ষমতা অনুযায়ী অর্থ দেওয়া হয়েছিল। কী কাজ হয়েছে, কারা এ সব করেছে, বলতে গেলে অনেক কথা।’’ বস্তুত, শিশির সাংসদ থাকাকালীন কেলেঘাই-কপালেশ্বরী নদী সংস্কার প্রকল্পে কাটমানির অভিযোগ উঠেছিল।
কাঁথি পুরসভা থেকে সমবায় ব্যাঙ্কের দুর্নীতি নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী এ দিন নিশানা করেছেন অধিকারীদের। কাঁথি-১ ব্লকের বিডিও তুহিনকান্তি ঘোষকে মমতার সরাসরি জিজ্ঞাসা, ‘‘কাঁথিতে কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কগুলি ঠিকমতো চলছে? কাঁথি পুরসভার কাজকর্মই বা কেমন চলছে?’’ এই প্রশ্নে খানিকটা হতচকিত হয়ে যান বিডিও। কারণ পুরসভা এবং সমবায় ব্যাঙ্ক, কোনওটাই বিডিও-র আওতাধীন নয়। তা-ও তিনি জবাব দেন, ‘‘ভালই চলছে।’’ এর পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পুরসভায়, ব্যাঙ্কে অনেক বদমাইশ আছে। একটু নজরে রাখবেন।’’
কাঁথি পুরসভা এবং কাঁথির একাধিক সমবায় ব্যাঙ্কের নিয়ন্ত্রণ একসময় অধিকারী পরিবারের হাতেই ছিল। শুভেন্দুর ছোট ভাই সৌমেন্দু ছিলেন কাঁথির পুরপ্রধান। তাঁর আমলে ত্রিপল চুরি থেকে সারদার নথি উধাওয়ের নানা অভিযোগ রয়েছে। সে সবের মামলাও চলছে। শুভেন্দু সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান থাকাকালীন স্বজনপোষণ ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সব মিলিয়ে, মুখ্যমন্ত্রী এ দিন ঠারেঠোরে সেই সব অভিযোগকে হাতিয়ার করেই অধিকারীদের আক্রমণ করেছেন বলে অনুমান রাজনৈতিক মহলের। যদিও এ প্রসঙ্গে সাংসদ শিশিরের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কখন, কী বলেন, তার ঠিকঠিকানা নেই। এ সবে গুরুত্ব দেওয়া অর্থহীন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy