Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

নত নেতা, জয় উৎসর্গ জনতাকে

বহু কাঙ্খিত সেই জয় অবশ্য খড়্গপুরবাসীকেই উৎসর্গ করলেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী। খড়্গপুরকে ‘মডেল’ তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে নতমস্তকে প্রণাম জানালেন শহরবাসীকে। 

হৃদমাঝারে: খড়্গপুরের বিজয়ী প্রার্থী প্রদীপ সরকারের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

হৃদমাঝারে: খড়্গপুরের বিজয়ী প্রার্থী প্রদীপ সরকারের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:১৬
Share: Save:

স্নায়ুযুদ্ধে এগিয়ে গিয়েছেন তিনি। ২০২১ সালের ফাইনাল ম্যাচের আগে উপ-নির্বাচনের সেমিফাইনালে রাজ্য সভাপতির খাসতালুকে বিজেপিকে ধরাশায়ী করেছেন। তাঁর নেতৃত্বেই দীর্ঘ দু’দশকে এই প্রথম ঘাসফুল ফুটেছে খড়্গপুরের মাটিতে।

বহু কাঙ্খিত সেই জয় অবশ্য খড়্গপুরবাসীকেই উৎসর্গ করলেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী। খড়্গপুরকে ‘মডেল’ তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে নতমস্তকে প্রণাম জানালেন শহরবাসীকে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় খড়্গপুর শহরে আসেন শুভেন্দু। মূলত তাঁর নেতৃত্বেই খড়্গপুর সদর (শহর) বিধানসভা উপ-নির্বাচনে জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকার। গত লোকসভায় ৪৫ হাজার ভোটে বিজেপির থেকে পিছিয়ে থেকেও এ বার প্রায় ২১ হাজার ভোটে জিতেছে তৃণমূল। এ দিন শুভেন্দু জয়ী প্রার্থীর প্রশংসা করে বলেন, “আমি প্রদীপ সরকারকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাব। তিনি ভোট চলাকালীন শ্রদ্ধেয় মাস্টারমশাই কংগ্রেস প্রার্থী চিত্তরঞ্জন মণ্ডলের পা ছুঁয়ে প্রণাম করেছেন। নির্বাচন শেষের পরে গণনাকেন্দ্রে একসঙ্গে বিজেপি প্রার্থী প্রেমচন্দ ঝা, নির্দল প্রার্থী প্রদীপ পট্টনায়েক এবং আমাদের প্রার্থী প্রদীপ সরকার যেভাবে সৌজন্য বিনিময় করেছে হাতে-হাত রেখে এটা খড়্গপুরে সৌজন্যের নজির তৈরি করেছে। এটা ধরে রাখতে হবে।”

বছর ঘুরলেই পুরসভা নির্বাচন। তারপরে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোট। ফলে, এই জয় ধরে রেখে যে জমি আরও শক্ত করতে হবে, তা-ও এ দিন বুঝিয়ে গিয়েছেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, “আমরা গণতান্ত্রিকভাবে বিনয়ের সঙ্গে মাথা নিচু করে ওঁদের ব্যর্থতা তুলে ধরে আমাদের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জিতেছি। এটা আমাদের ধরে রাখতেই হবে।” তিনি প্রদীপ সরকারের ‘গ্যারেন্টার’ হিসাবে যে কথা দিয়েছিলেন সেই প্রতিশ্রুতিও মনে রেখেছেন তিনি। শুভেন্দু বলেন, “আমি কথা দিতে পারি আগামী বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত আপনাদের বিধায়ক প্রদীপ সরকারকে সম্পূর্ণভাবে সাহায্য করার দায়িত্ব আমার। আমি সেটা করব।” আর বিজেপি ও দিলীপ ঘোষকে নিশানা করে তাঁর বার্তা, “যাঁরা একটা সময় বলেছিল উনিশে হাফ, একুশে সাফ, তাঁদের দম্ভ, অহংকার খড়্গপুরের মানুষ ভেঙেচুড়ে তছনছ করে দিয়েছে।”

খড়্গপুরে জয়ের পিছনে ‘টিম-পিকে’র ভূমিকাও মেনে নিয়েছেন শুভেন্দু। বলেছেন, ‘‘আমি আইপ্যাকের (প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা) বন্ধুদেরও অভিনন্দন জানাচ্ছি। নির্বাচনপর্ব চলাকালীন ওরা তিন সপ্তাহ আমাদের সঙ্গে সঙ্গ দিয়েছেন।’’ দ্বন্দ্ব ভুলে একই সঙ্গে কাজ করার বার্তাও দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমি-আমি নয়, আমরা নীতিতে চলতে হবে।” প্রদীপ সরকারের পরিচালিত ২০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কার্যালয় বিধায়ক কার্যলয় করার কথাও ঘোষণা করেন তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক। প্রতিমাসে শহরে এসে মানুষের কথা শোনার প্রতিশ্রুতি দেন। আগামী মঙ্গলবার শহরে এসে প্রতিটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে যাবেন বলেও জানিয়েছেন শুভেন্দু।

উপ-নির্বাচনের আগে দলকে চাঙ্গা করতে যে ৫৪জন পর্যবেক্ষক নিযুক্ত করেছিলেন শুভেন্দু, তাঁদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ বন্ধ করবেন বলে জানিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। ওই পর্যবেক্ষকদের এর পরে মেদিনীপুরে কাজ করতে হবে বলে জানান তিনি। এ দিন মঞ্চে উপস্থিত সকলকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন শুভেন্দু। এই জয়ের পিছনে দলের শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডে, কার্যকরী সভাপতি জহরলাল পাল, উপ-পুরপ্রধান শেখ হানিফের অবদান উল্লেখ করেছেন তিনি। তবে এ দিন মঞ্চের পিছনে থাকা শহরের আরেক ‘মাথা’ জেলা নেতা দেবাশিস চৌধুরীর নাম নেননি শুভেন্দু।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Kharagpur By Election Suvendu Adhikari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy