শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
উত্তরবঙ্গ সফরে এসে আজ, সোমবার জলপাইগুড়ির মালবাজারের যে বেসরকারি অতিথিশালায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উঠতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে, সেটির সংস্কার নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যের আর্থিক সঙ্কটের প্রসঙ্গ তুলে, ‘ভিভিআইপি অতিথিদের’ জন্য সরকারি টাকা ‘অপচয়’ করে শাসকদলের এক বিধায়কের মালিকানাধীন বেসরকারি অতিথিশালার সংস্কারের যৌক্তিকতা কতখানি, রবিবার তা নিয়ে টুইট করেন তিনি। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের কর্তাদের অবশ্য দাবি, অতিথিশালায় তাদের তরফে কোনও সংস্কার হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীর মতো অতিথিরা যে কোনও সরকারি বা বেসরকারি অতিথিশালায় থাকলে, যা-যা পদক্ষেপ করতে হয়, তা-ই করা হচ্ছে। রবিবার রাতে প্রশাসনের একটি সূত্র আবার দাবি করে, মুখ্যমন্ত্রী ওই অতিথিশালাতেই থাকবেন কি না, তা চূড়ান্ত নয়।
ঘটনা জেনে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘পুরো ব্যাপারটাই কুৎসিত।’’ অন্য দিকে, জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র দুলাল দেবনাথ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর থাকার কিছু প্রোটোকল থাকে। সেটি বিরোধী দলনেতা ভুলে গেলেও, প্রশাসন তো ভুলতে পারে না!’’
মালবাজার শহর থেকে কিছুটা দূরে, তেসিমলায় এই অতিথিশালাটি স্থানীয় ভাবে লোকজন ‘দুলাল দাসের খামারবাড়ি’ বলেই চেনেন। তার মালিক দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার তৃণমূল বিধায়ক দুলাল দাস। গত শুক্রবার এই অতিথিশালার সংস্কার নিয়ে জলপাইগুড়ির জেলাশাসকের তরফে জলপাইগুড়ি ডিভিশনের পূর্ত দফতরের কার্যনির্বাহী বাস্তুকারকে লিখিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাতে ‘ভিউ কাটার’ বসানো, জানলা নেট দিয়ে ঢাকা, পাম্পের ব্যবস্থা পরীক্ষা করা-সহ আটটি কাজের উল্লেখ রয়েছে।
সে নির্দেশিকার প্রতিলিপি ‘পোস্ট’ করে লেখা টুইট ঘিরেই এ দিন রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে। শুভেন্দু টুইটে লিখেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ আর্থিক সঙ্কটে ধুঁকছে। সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) দেওয়া হচ্ছে না, রাস্তা মেরামতি, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি সব বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে শুধু ভিভিআইপি অতিথি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন বলে তৃণমূল বিধায়ক দুলালচন্দ্র দাসের ব্যক্তিগত রিসর্ট মেরামত করার পিছনে জনগণের দেওয়া টাকা অপচয় করা কি শোভন?”
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা অবশ্য বলেন, “যদি কোনও সরকারি অতিথিশালাতেও প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী অথবা সমতুল্য নিরাপত্তা পান এমন কোনও ভিভিআইপি আসেন, তা হলেও একই কাজ করা হত। নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা প্রশাসনেরই কাজ।’’ দুলাল দাস বলেন, “এটি ব্যক্তিগত খামারবাড়ি মাত্র। মুখ্যমন্ত্রী সেখানে থাকতে পারেন বলে কিছু মেরামত ও সংস্কারের কাজ হচ্ছে। কোনও স্থায়ী পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে না। আমার বাড়ি আমারই টাকায় মেরামত করা হচ্ছে, তাতে কার, কী বলার আছে? ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে এ নিয়ে।’’
এ দিকে, আজ, সোমবার হাসিমারা বিমানবন্দরে নেমে হেলিকপ্টারে মুখ্যমন্ত্রীর মালবাজারে পৌঁছনোর কথা। রবিবার হেলিকপ্টারের মহড়াও হয়েছে। কাল, মঙ্গলবার মালবাজারে সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে থাকতে পারেন হড়পা বানে মৃতদের পরিবারের সদস্য ও জখমেরা। দশমীর বিসর্জনের রাতে মাল নদীতে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল বাইশ বছরের সুস্মিতা পোদ্দারের। সুস্মিতার দাদা সঞ্জয় বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী জেলায় আসবেন বলে আমাদের জানানো হয়েছে। উনি যা-যা জানতে চাইবেন, জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy