রাজ্য গত বিধানসভা ভোটে দুশো পারের ডাক দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু সেই লক্ষ্য পূরণ হয়নি। মাত্র ৭৭টি আসনে থমকে গিয়েছিল পদ্মশিবিরের রথ। এ বার আর সরাসরি দুশো পারের কথা বললেন না শুভেন্দু অধিকারী। পরিবর্তে শাসকদল তৃণমূলকে ক্ষমতাচ্যুত করতে অন্তত ১৮০টি আসনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিলেন তিনি। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে মিছিল থেকে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘লোকসভা ভোটে জেলার দু’টি আসনই আপনারা নরেন্দ্র মোদীকে উপহার দিয়েছিলেন। শপথ নিন আমরা এই জেলা থেকে ১৬টি আসনেই জিতব। রাজ্যে হব ১৮০ অন্তত। এ বার মমতাকে প্রাক্তন করব।’’
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল অবশ্য আগেই নিজেদের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে নিয়েছে। সম্প্রতি নেতাজি ইন্ডোরের সভা থেকে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ‘টার্গেট’ বেঁধে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জিততে হবে। সেটা ১৯৬ হয়। কিন্তু আমি বলব, আমাদের অন্তত ২১৫ পেতে হবে। এর কম যেন কোনও ভাবেই না হয়।’’ সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে শুভেন্দু তথা বিজেপির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না শাসকদল তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘২০২১ সালে বলেছিল দুশো পার। পেয়েছিল ৭৭টা। এটা এখন এসে ঠেকেছে ৬০-৬২-তে। ভোটের আগে সেটা ৪০-এ নামবে। সামনের বার ৩০টাও পাবে না বুঝতে পেরে টার্গেটটাই কমিয়ে দিয়েছে।’’ প্রসঙ্গত, গত লোকসভা ভোটেও ‘চারশো পার’-এর কথা বলেছিল বিজেপি। অধরা থেকে গিয়েছিল তা-ও। ২৪০ আসনেই আটকে গিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা।
আরও পড়ুন:
কলকাতা হাই কোর্টের অনুমতি নিয়েই বৃহস্পতিবার তমলুকে মিছিল করেন শুভেন্দু। দোলের অশান্তির ঘটনার প্রতিবাদে মিছিলের ডাক দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু পুলিশ অনুমতি দেয়নি। এর পরেই উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। আদালতের বেঁধে দেওয়া সময় মেনেই বেলা ১টা নাগাদ তমলুকের রাজবাড়ি ময়দান থেকে শুরু হয় মিছিল। তা বর্গভীমা মন্দির ঘুরে তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজ পেরিয়ে ক্ষুদিরামের মূর্তির কাছে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিলশেষে শুভেন্দু বলেন, “দোলের দিন তমলুক শহরের পাশাপাশি নন্দকুমারের ব্যবত্তারহাট এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু সেই সময় ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পরিবর্তে থানায় পালিয়ে গিয়েছিল। আর এই ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল করতে গেলে পুলিশ তার অনুমোদন দেয়নি। মিছিলের অনুমতি দেওয়ার সময় আদালত জানিয়েছিল, এক হাজারের বেশি মানুষকে নিয়ে মিছিলে হাঁটা যাবে না। আমরা সেই নির্দেশ মেনে এক হাজার মানুষকেই মিছিলে যোগ দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলাম। মিছিল যত এগিয়েছে, তত উৎসাহী মানুষ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আমাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।”