গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।
বাঙালি রাম ততটা খায় না। কিন্তু কৃষ্ণ খায়। অথবা ‘হরেকৃষ্ণ’।
অতএব, শুভেন্দু অধিকারী এখন বাঙালির কাছে রামের পাশাপাশি কৃষ্ণকে আনছেন। বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার আগে নিজস্ব স্লোগান বেঁধেছিলেন শুভেন্দু। যোগদানের পর থেকে সেটিই প্রতিটি সভায় তাঁর বাঁধা লব্জ হয়ে গিয়েছে।
‘জয় শ্রীরাম’ এবং ‘ভারত মাতা কি জয়’ বলার পর জনতার দিকে তাকিয়ে শুভেন্দু হাত তুলে বলছেন, ‘‘হরেকৃষ্ণ হরে হরে..।’’ জনতা জবাব ফিরিয়ে দিচ্ছে, ‘‘পদ্ম এবার ঘরে ঘরে!’’
শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, ভেবেচিন্তেই ওই স্লোগান বার করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। তাঁর এক অনুগামীর কথায়, ‘‘রামের কথা বলার পাশাপাশিই আমাদের কৃষ্ণ, হরি, বিষ্ণুকেও আনতে হবে। বাঙালি রামের চেয়ে কৃষ্ণকে বেশি চেনে। এই সত্যটা মেনে নিতে হবে। এই সত্যটা দলও বুঝেছে। ফলে দলের নেতারাও এখন শুভেন্দু’দার স্লোগানকে বৈধতা দিচ্ছেন।’’
ওই শুভেন্দু-অনুগামী ভুল বলেননি। গত ২৪ ডিসেম্বর রাজ্য বিজেপি-র সাংগঠনিক সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী নিজের টুইটার হ্যান্ডলে ওই স্লোগান সংবলিত পোস্টার টুইট করেছেন। যা দেখে আরও উৎসাহিত এবং উজ্জীবিত শুভেন্দু-শিবির। এক নেতার কথায়, ‘‘সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে অমিতাভ চক্রবর্তী রাজ্য দলে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তিনি যখন শুভেন্দু’দার ওই স্লোগান টুইট করেছেন, তখন এটা বুঝতে কারও অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে, দলও ওই স্লোগানকে বৈধতা দিচ্ছে।’’ লক্ষ্যণীয়, ২৪ তারিখর পর থেকে শুভেন্দু আরও জোরকদমে তাঁর প্রতিটি সভায় ওই স্লোগান তুলছেন। প্রথম প্রথম তিনি নিজে বলতেন। এখন তিনি জনতার সঙ্গে ওই স্লোগান নিয়ে কথোপকথনের পথ নিয়েছেন। তাঁর ঘনিষ্ঠদের দাবি, এতে নাকি ‘বিপুল সাড়া’ মিলছে।
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর বার্তা রাজীব, সাধনকে
প্রসঙ্গত, এই স্লোগানের আদত জন্মদাতা অধুনাপ্রয়াত অজিত পাঁজা। তৃণমূল গঠনের পর তিনিই প্রথম জনসমক্ষে বলতে শুরু করেছিলেন, ‘‘হরেকৃষ্ণ হরে হরে, তৃণমূল ঘরে ঘরে।’’ কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর তৃণমূলের প্রচার কর্মসূচি থেকে ধীরে ধীরে অবলুপ্তি ঘটেছিল ওই স্লোগানের। সাম্প্রতিককালে তৃণমূলের কোনও সভাতেই আর ওই স্লোগান শোনা যায়নি। তৃণমূলের এক প্রথমসারির নেতার কথায়, ‘‘ওসব মান্ধাতার আমলের স্লোগান। আমাদের দল ক্ষমতায় আসার পর থেকে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে রেখে আমরা উন্নয়নের স্লোগান দিয়েছি। রাজ্যের উন্নতিতে কী কী করা হয়েছে, তার কথা বলেছি।’’ ওই নেতার আরও দাবি, ‘‘রাজ্যবাসী উন্নয়নের কথা শুনতে চান। এসব ছেঁদো ছেলে-ভোলানো চড়ায় তাঁদের কোনও রুচি থাকবে বলে আমাদের মনে হয় না। এটা ঠিক যে, একটা সময়ে এই ধরনের স্লোগানের দরকার ছিল। কিন্তু এখন ওসব স্লোগান একেবারেই অচল।’’
যে তত্ত্বকে একেবারেই আমল দিতে রাজি নন রাজ্য বিজেপি নেতাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, ওই স্লোগানের সাফল্য বাঁধা। এক নেতার কথায়, ‘‘রাজ্যের পরিস্থিতি যে জায়গায় পৌঁছেছে, সেখানে এই স্লোগানের সঙ্গে গ্রামের মানুষ একাত্ম বোধ করবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস। যে যুদ্ধের যে অস্ত্র। আমরা মনে করছি, বিধানসভা ভোটে এই স্লোগানই হবে আমাদের তুরুপের তাস।’’
আরও পড়ুন: বঙ্গভোটে চাকরির ‘টোপ’ তুলে নিল বিজেপি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy