বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র ।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আবার সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি দিল কলকাতা হাই কোর্ট। উচ্চ আদালতের নির্দেশ, জেলিয়াখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের হালদারপাড়ায় যেতে পারবেন শুভেন্দু। তবে এর জন্য স্থানীয় থানায় তাঁকে মুচলেকা দিতে হবে। পাশাপাশি ওই নির্দিষ্ট এলাকায় ১৪৪ ধারা জারির উপরেও অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি শুভেন্দুকে সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। ওই দিনই তিনি সন্দেশখালি গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার সময় বিরোধী দলনেতা জানিয়েছিলেন, আবার সন্দেশখালি যাবেন তিনি। তবে তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দেয় রাজ্য। ফলত, সন্দেশখালির হালদারপাড়ায় যাওয়ার অনুমতি চেয়ে আবার হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু। বুধবার সেই মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে।
আদালতে রাজ্যের সওয়াল ছিল, শুভেন্দু যে দিন সন্দেশখালি গিয়েছিলেন, সে দিন বেশ কয়েকটি জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি ছিল। কিন্তু তা লঙ্ঘন করেন বিরোধী দলনেতা। অনেক লোকের জমায়েত হয়েছিল। তাঁর সঙ্গে বিজেপির স্থানীয় নেতারাও ছিলেন। আদালতে ‘খলিস্তানি বিতর্ক’ নিয়েও শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে রাজ্য। রাজ্যের আইনজীবী বলেন, ‘‘এক জন দায়িত্বশীল ব্যক্তির জানা উচিত যে, কী করা উচিত এবং কখন করা উচিত। পুলিশের উদ্দেশে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছেন শুভেন্দু। তিনি এক জন আইপিএস অফিসারকে ‘খলিস্তানি’ বলেছেন। আমরা এফআইআর করতে চেয়ে মামলা করছি। ইতিমধ্যেই বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’’ আদালত শুভেন্দুকে যে রক্ষাকবচ দিয়েছে তিনি তার অপব্যবহার করছেন বলেও আদালতে সওয়াল করেন রাজ্যের আইনজীবী। এর পর পাল্টা ‘খলিস্তানি’ বিতর্কে রাজ্যের বক্তব্যের বিরোধিতা করেন শুভেন্দুর আইনজীবী।
এর পর রাজ্যের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি চন্দের মন্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক ব্যক্তিরা গেলে এলাকার মানুষ তো আসবেনই। শুভেন্দু অধিকারী যদি কোনও ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন তা হলে আইন অনুযায়ী আপনারা পদক্ষেপ করবেন। সেটা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। এটা ঠিক যে আদালতে বসে বাস্তব পরিস্থিতির বিবেচনা করা যায় না। পুলিশকে, প্রশাসনকে করতে হয়। কিন্তু সেটা অনেক সতর্ক হয়ে করতে হয়।’’
বিচারপতি কৌশিক চন্দ আরও জানান, কয়েকটি শর্ত মেনে আবার হালদারপাড়ায় যেতে পারবেন শুভেন্দু। তার আগে তাঁকে স্থানীয় থানায় মুচলেকা দিতে হবে। কোনও জমায়েত বা অশান্তি হবে না বলেও সেই অঙ্গীকারপত্রে লিখে দিতে হবে। হাই কোর্টের নির্দেশ, শুভেন্দু গেলেও তাঁর সঙ্গে দলীয় কোনও কর্মী বা সমর্থক সন্দেশখালি যেতে পারবেন না। সেখানে গিয়ে কোনও উস্কানিমূলক মন্তব্যও করতে পারবেন না বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দুর পাশাপাশি বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষকেও সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে হাই কোর্ট। বৃহস্পতিবার সন্দেশখালি যাওয়ার কথা রয়েছে শুভেন্দু এবং শঙ্করের।
এর আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি শুভেন্দুকে শর্তসাপেক্ষে সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল বিচারপতি চন্দের বেঞ্চ। পরদিন সকালেই সন্দেশখালির উদ্দেশে রওনা হন বিরোধী দলনেতা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন, শঙ্কর, অগ্নিমিত্রা পাল-সহ বিজেপির ছয় বিধায়ক তবে সন্দেশখালি প্রবেশের আগেই ধামাখালি এলাকায় শুভেন্দুদের আটকে দিয়েছিল পুলিশ। প্রশাসনের যুক্তি ছিল, নতুন করে বেশ কয়েকটি জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি হয়েছে। তাই তাঁদের সন্দেশখালি ঢুকতে দেওয়া যাবে না। এর পর ধামাখালিতেই বসে পড়েন শুভেন্দু এবং বিজেপির প্রতিনিধি দল। এর মধ্যেই ২০ ফেব্রুয়ারি বিচারপতি চন্দের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। তবে রাজ্যের আর্জি খারিজ করে শুভেন্দু এবং শঙ্করকে সন্দেশখালি যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy