‘সন্ত সমাজে’র সমাবেশে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও বাংলাদেশে আক্রান্ত যুবক সায়ন ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।
বাংলাও যাতে বাংলাদেশের পথে না যায়, তার জন্য সতর্ক হওয়ার ডাক দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি, বাংলাদেশের প্রতি হুঁশিয়ারির সুরও আরও চড়া হল তাঁর। কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন-সহ শ্রমিক সংগঠনগুলিও বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ-প্রশ্নে পথে নামল।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রতিবাদে এবং চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টের অনুমতি নিয়ে ‘সন্ত সমাজ’ ও আরও নানা সংগঠনের ডাকে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে সমাবেশে এ দিন ছিলেন শুভেন্দু। সেখানেই তিনি বলেছেন, “এই জায়গায় সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী, ফিরহাদ হাকিম, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়েরা, তৃণমূলের সংখ্যালঘু শাখা সভা করেছিল। ত্বহা সিদ্দিকী এখানে সভা করবেন। আদালতে যেতে হয়নি। কিন্তু সন্ন্যাসীদের আদালত থেকে অনুমতি নিয়ে কর্মসূচি করতে হচ্ছে। যা মুহাম্মদ ইউনূস, তা-ই এ-পারের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!” এই সূত্রেই উপস্থিত জনতাকে তিনি বলেছেন, “ভাবছেন ও-পারে হচ্ছে, আমার কী? এখানে ফালাকাটা, গার্ডেনরিচ, বাউড়িয়া, রাজাবাজার, বেলডাঙার মতো ঘটনা ঘটেছে। এ লড়াই বেঁচে থাকার নয়, অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।” তাঁর সংযোজন, “রাজনীতি পরে হবে। আগে আমাদের সব হিন্দুকে এক হতে হবে।” সমাবেশে ছিলেন বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজও।
অর্থনীতির প্রশ্নে বাংলাদেশকে ফের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর মন্তব্য, ‘‘এক দিন শুধু পেট্রাপোল বন্ধ করেছিলাম, ৪০ গাড়ি পেঁয়াজ পচে গিয়েছে। এক দিনে হালুয়া টাইট! আমদানি-রফতানিকারীরা বলছেন, দাদা ৭টা দিন আটকে দিতে পারলে এদের অবস্থা কী হবে দেখবেন! বাংলাদেশের লোকই ইউনূসের চামড়া তুলে আনবে!” সমাবেশ-মঞ্চে এ দিন বাংলাদেশে গিয়ে আক্রান্ত বেলঘরিয়ার তরুণ সায়ন ঘোষকে উত্তরীয় পরিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর ঘোষণা, রাজ্য জুড়ে আজ, শুক্রবার বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনে ‘শৌর্য দিবস’ পালন করবেন তাঁরা এবং শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় থেকে সিঁথির মোড় পর্যন্ত মিছিলে তিনি থাকবেন। আগামী ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবসে বসিরহাটের ঘোজাডাঙা সীমান্তে অবরোধও হবে। বাংলাদেশের ঘটনা নিয়ে এ দিনই উত্তর ২৪ পরগনা উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁর মালঞ্চ বাজারে প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে সনাতনীদের সংগঠন।
বাংলাদেশ, ভারত-সহ সর্বত্র সংখ্যালঘুদের উপরে হিংসা বন্ধের দাবিকে সামনে রেখে এ দিন কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠন, শিল্পভিত্তিক ফেডারেশন এবং ১২-ই জুলাই কমিটির মিছিল হয়েছে ধর্মতলার লেনিন মূর্তি থেকে কলেজ স্কোয়ার পর্যন্ত। মিছিল শেষে ছিল সমাবেশ। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন সিটুর অনাদি সাহু, এআইসিসিটিইউ-র বাসুদেব বসু, আইএনটিইউসি-র কামারুজ্জামান, এআইটিইউসি-র বাসুদেব গুপ্ত, ইউটিইউসি-র দীপক সাহা প্রমুখ। ধর্মের নামে ঘৃণার রাজনীতি বন্ধ, সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী ধর্মীয় স্থানের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার পক্ষেও সওয়াল করেছেন শ্রমিক নেতৃত্ব।
ইউনূসকে রাজধর্ম পালন করতে হবে, এই ডাক দিয়ে পার্ক সার্কাস থেকে বাংলাদেশ ডেপুটি হাই-কমিশন পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছিল দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেস। ডেপুটি হাই-কমিশনের আগেই পুলিশ অবশ্য মিছিল আটকে দিয়েছে। মিছিলে ছিলেন প্রদীপ প্রসাদ, আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়, তপন আগরওয়াল প্রমুখ। বাংলাদেশে আক্রান্ত সায়নকে ‘সুবিচার’ দিতে শুভেন্দুরা কেন কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কথা বলেননি, সেই প্রশ্ন তুলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বলেছেন, ‘‘রাষ্ট্র ও সংখ্যাগুরুদের দায়িত্ব সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়া। পশ্চিমবঙ্গ-সহ অন্য রাজ্যের মতো বাংলাদেশেও সেটা করা দরকার। বিজেপি আন্দোলন অবশ্যই করতে পারে। কিন্তু তাদের প্রধানমন্ত্রীকে বলা দরকার। বিদেশনীতিটা কার?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy