ফাইল চিত্র।
রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলিকে ২০ শতাংশ ফি কমানোর নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল স্কুলগুলি। কিন্তু তাদের আর্জি মেনে আজ কোনও স্থগিতাদেশ দিতে রাজি হয়নি শীর্ষ আদালত।
তবে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, স্কুলের আয়ব্যয়ের হিসেবনিকেশ খতিয়ে দেখার জন্য হাইকোর্ট যে-কমিটি তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল, তা স্থগিত থাকবে। স্কুলের আয়ব্যয় খতিয়ে দেখার পরে কোনও অভিভাবক ২০ শতাংশেরও বেশি ফি মকুবের আবেদন জানালে তা-ও বিবেচনা করতে বলেছিল হাইকোর্ট। সেই নির্দেশের উপরেও সুপ্রিম কোর্ট আজ স্থগিতাদেশ দিয়েছে। গোটা বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের বক্তব্য জানতে চেয়ে নোটিস জারি করেছে তারা।
গত ১৩ অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছিল, লকডাউনের ফলে বহু মানুষেরই আয় কমেছে। অনলাইনে ক্লাস চলছে বলে খরচ কমেছে স্কুলেরও। অতএব বেসরকারি স্কুলগুলিকে ২০ শতাংশ টিউশন ফি কমাতে হবে। ল্যাবরেটরি, খেলাধুলো, পড়াশোনা ছাড়া অন্যান্য বিষয়, শিল্পকলা ইত্যাদি শেখানোর জন্য কোনওরকম অতিরিক্ত ফি-ও আদায় করা যাবে না।
আরও পড়ুন: মর্গে দেহ, কর্মী-মৃত্যু, প্রতিবাদ বিজেপির
আরও পড়ুন: উৎসবের ফাঁকেই এ বার পথে বামেরা
বেসরকারি স্কুলগুলি জানিয়েছিল, হাইকোর্টের নির্দেশ মানতে হলে স্কুল চালানো কঠিন হবে। কারণ তাদের খরচ কমেনি। এর পরেই অ্যাসোসিয়েশন অব স্কুলস (আইএসসি-বেঙ্গল চ্যাপ্টার)-এর মাধ্যমে স্কুলগুলি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। আজ সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি অশোক ভূষণের বেঞ্চে বেসরকারি স্কুলগুলির তরফে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি যুক্তি দেন, হাইকোর্ট পুরোপুরি নিয়ন্ত্রক সংস্থার মতো কাজ করতে পারে না। আদালত কোনও ভাবেই স্কুলের আয়ব্যয় পরীক্ষার জন্য কমিটি গঠন করতে পারে না। তা ছাড়া, টিএমএ পাই মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্টই বলেছে, আদালত বেসরকারি স্কুলের ফি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
বিচারপতিরা প্রশ্ন তোলেন, ওই রায়ের সময় কোভিড পরিস্থিতি ছিল না। স্কুল যখন খোলা হচ্ছে না, তখন কী ভাবে ল্যাবরেটরি, খেলাধুলোর ফি আদায় করা যেতে পারে? সিঙ্ঘভি যুক্তি দেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নির্দেশিকা রয়েছে, স্কুলগুলি তাদের পরিষেবা অনুযায়ী ফি আদায় করতে পারে। হাইকোর্টের রায়ে সেই নির্দেশিকা খারিজ করা হয়নি। কিন্তু তার বিপরীত রায় দিয়েছে। আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত বলেন, কেন ২০ শতাংশই ফি কমাতে হবে, তার কোনও ব্যাখ্যা হাইকোর্ট দেয়নি। যে-স্কুল শুধুই শিল্পকলা শেখায়, আদালতের রায়ে তারা কোনও ফি-ই নিতে পারবে না। আর একটি স্কুলের হয়ে কপিল সিব্বল যুক্তি দেন, এক-এক স্কুলের পরিস্থিতি এক-এক রকম। সকলের জন্য এক নিয়ম খাটে না।
সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশের কপি না-দেখে এ দিন মন্তব্য করতে রাজি হননি বেসরকারি স্কুলের অধ্যক্ষেরা। তবে কিছু স্কুলের অধ্যক্ষ জানান, স্কুলের আয়ব্যয় খতিয়ে দেখার জন্য কমিটি গঠন করা ও ফি-র ক্ষেত্রে ২০ শতাংশেরও বেশি ছাড় বিবেচনা করার মতো নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ স্বস্তির কারণ। অভিভাবকদের একাংশও এই রায়ে খুশি। ইউনাইটেড গার্জিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দীর্ঘ ছ মাস ধরে করোনা পরিস্থিতিতে অভিভাবকেরা যে-দাবি তুলে ধরেছেন, সুপ্রিম কোর্টের আজকের রায় তাকেই আবার মান্যতা দিল। এ বার স্কুলগুলির উচিত সর্বোচ্চ আদালতের রায় দ্রুত কার্যকর করা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy