বিবাহবিচ্ছেদ মামলায় তৃণমূল বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট। ওই মামলায় নিজের বক্তব্য আদালতকে জানিয়েছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। গত ৯ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টে নিজের বক্তব্য জমা দিয়েছেন তিনি। তার পাল্টা বক্তব্য রত্নার কাছে জানতে চেয়েছে আদালত। বিচারপতি আসানুদ্দিন আমানুল্লা এবং বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্রের বেঞ্চ জানায়, দু’সপ্তাহের মধ্যে রত্নাকে শোভনের বক্তব্যের পাল্টা যুক্তি জমা দিতে হবে। আগামী ২২ এপ্রিল ওই মামলার পরবর্তী শুনানি। অন্য দিকে, শোভন-রত্নার বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় নিম্ন আদালতের শুনানির উপর স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছে সর্বোচ্চ আদালত।
এই মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে ধাক্কা খেয়ে সুপ্রিম কোর্টে যান তৃণমূল বিধায়ক। গত ৫ মার্চ ওই মামলায় আদালত শোভনের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল। একই সঙ্গে শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, পরবর্তী নির্দেশ না-দেওয়া পর্যন্ত ‘ট্রায়াল কোর্ট’ (নিম্ন আদালত) বিচারপ্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারবে না। ওই নির্দেশ মেনে শোভন-রত্নার বিবাহবিচ্ছেদ মামলার শুনানি অনির্দিষ্ট কালের জন্য পিছিয়ে দেন আলিপুরের অতিরিক্ত জেলা বিচারক।
আরও পড়ুন:
২০১৭ সালের ১৩ নভেম্বর আলিপুর আদালতে স্ত্রী রত্নার বিরুদ্ধে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন শোভন। ওই মামলায় কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের পক্ষে তিন জন সাক্ষ্য দেন। সেই সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয় ২০২৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। প্রাথমিক ভাবে রত্না আদালতের কাছে আর্জি জানান, তাঁর পক্ষে ১৮-২০ জন সাক্ষ্য দেবেন। আদালত ওই আবেদন খারিজ করে দেয়। পরে রত্না নতুন তালিকা দিয়ে তাঁর পক্ষে সাত জনের সাক্ষ্য নেওয়ার আবেদন জানান। গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী হিসাবে রত্না তাঁর ছেলে, বাবা ও ভাইয়ের নাম জমা দেন। আলিপুর আদালত ওই আবেদনেও মান্যতা দেয়নি। গত ১০ জানুয়ারি বিচারক জানান, মামলার সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে সম্পর্কিত ব্যক্তিদেরই সাক্ষ্য নেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে রত্নার নিজের এবং তাঁর ছেলের সাক্ষ্য নিতে রাজি হয় আদালত। একই সঙ্গে বিচারপতি জানিয়েছিলেন, ২৯ এবং ৩০ জানুয়ারি শোভন-রত্নার বিবাহবিচ্ছেদের মামলার সওয়াল পর্ব চলবে।
নিম্ন আদালতের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টে যান রত্না। সেখানেও তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে যায়। ফেব্রুয়ারি মাসের ২৮ তারিখ হাই কোর্টের বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের বেঞ্চ রায় দিয়ে জানায়, রত্নার বাকি সাক্ষীদের সুযোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত যথাযথ। নিম্ন আদালতের ওই পদক্ষেপে হস্তক্ষেপ করা হবে না। হাই কোর্ট জানায়, যত দ্রুত সম্ভব শোভনের বিবাহবিচ্ছেদ মামলার নিষ্পত্তি করতে হবে। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান রত্না। সেখানে তাঁর হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী শ্যাম দেওয়ান। শোভনের হয়ে দাঁড়ান আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী এবং কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।