সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে ২০১৭-র আগে নিযুক্ত স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আপাতত দূরের জেলায় বদলি করা যাবে না বলে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রয়োজনে কাছাকাছি স্কুলে বা জেলার মধ্যে বদল করা যাবে। তবে যাঁদের ইতিমধ্যেই বদলি করা হয়েছে, তাঁদের শীর্ষ আদালতের চূড়ান্ত রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। যাঁরা ২০১৭-র পরে নিযুক্ত হয়েছেন, সেই সব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অবশ্য রাজ্য সরকার যত্রতত্র বদলি করতে পারবে।
সুপ্রিম কোর্ট আজ মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে। ৫ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানি। শীর্ষ আদালত আজ রাজ্য সরকারের কাছে প্রশ্ন তুলেছে, কেন কোনও মহিলাকে তাঁর বাড়ি থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরের স্কুলে বদলি করা হচ্ছে? রাজ্য সরকারের এ বিষয়ে অধিকার রয়েছে বলে যুক্তি দেওয়া হলেও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কিষেণ কউল ও বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ তা মানতে চাননি। শিক্ষক সংগঠনের তরফে মুকুল রোহতগি বলেন, বাড়ি থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে বদলি করা হয়েছে।
বদলি হওয়া এক শিক্ষিকার তরফে আইনজীবী বাঁশুরি স্বরাজ বলেন, তাঁর মক্কেলকে কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদে ২০০ কিলোমিটার দূরে বদলি করা হয়েছে। বিচারপতিরা প্রশ্ন তোলেন, এক জন মহিলার সংসার সামলাতে হয়। সন্তানদের দেখভাল করতে হয়। তার পরে কী ভাবে তিনি কলকাতা থেকে মুর্শিদাবাদে গিয়ে স্কুলে পড়াবেন? বিচারপতিরা জানান, এ ক্ষেত্রে মহিলাদের সমস্যা জড়িত বলে তাঁরা এই মামলাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘যে সব শিক্ষক-শিক্ষিকা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন এবং ডিএ-র দাবি তুলছেন, রাজ্য সরকার আইনের ওই ধারাকে কাজে লাগিয়ে তাঁদের দূর-দূরান্তে বদলি করে দিচ্ছিল। ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন শেষ করতে অনৈতিক ভাবে এই ধারার দানবীয় প্রয়োগ হচ্ছিল।’’
স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও দূর-দূরান্তে বদলির বিরুদ্ধে রাজ্যের মাধ্যমিক শিক্ষক ও কর্মচারী সংগঠন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। মূল অভিযোগ ছিল, ১৯৯৭ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশন আইনে ২০১৭ সালে ১০সি নতুন ধারা যোগ করে স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এক জেলা থেকে আর এক জেলায় বদলি করে দেওয়ার রাস্তা খোলা হয়েছে। ২০১৭-র আগে যাঁরা চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের এই আইনি ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে বদলি করা যায় না। তা সত্ত্বেও তাঁদের বদলি করা হচ্ছে।
আজ রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত যুক্তি দেন, স্কুলে ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত দেখে যেখানে শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রয়োজন, সেখানে বদলি করা হয়। রাজ্যের এই ক্ষমতা রয়েছে। বিচারপতিরা বলেন, ক্ষমতা থাকলে ২০১৭ সালে আইনে ১০সি ধারা যোগ করতে হত না। ২০১৭-র আগে যে সব নিয়োগ হয়েছে, আইনের নতুন ধারা তাঁদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায় কি না, সেটাই প্রশ্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy