রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় যদি সত্যিই দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে থাকেন, তবে তিনি এত সহজে জামিন পেতে পারেন না। পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর মামলায় এমনটাই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। পার্থের জামিন মামলার শুনানি শেষ হয়েছে শীর্ষ আদালতে। রায় ঘোষণা স্থগিত রেখেছেন বিচারপতিরা। নিয়োগ মামলায় পার্থের ঘনিষ্ঠের বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার করেছে ইডি। সে প্রসঙ্গে আদালতের পর্যবেক্ষণ, নিজে দুর্নীতি না করে পার্থ হয়তো ‘ডামি’ সামনে রেখে দুর্নীতি করেছেন। তদন্তের অগ্রগতির পরেই জামিন নিয়ে বিবেচনা করা যাবে, জানিয়েছে আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঞার ডিভিশন বেঞ্চে বুধবার পার্থের মামলার শুনানি ছিল। তাঁর আইনজীবী মুকুল রোহতগি পার্থের জামিন চেয়ে সওয়াল করেন। বিচারপতিরা জানান, পার্থ যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হন, তবে এ ভাবে তাঁর জামিন পাওয়া উচিত নয়। আদালতের সওয়াল-জবাব নীচে তুলে দেওয়া হল—
আইনজীবী রোহতগি: নিয়োগ মামলায় যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাঁরা প্রায় প্রত্যেকেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন। আমার মক্কেল দু’বছরের বেশি সময় ধরে জেলে আছেন। তিনি অসুস্থ। কোর্টেও অসুস্থ হয়ে পড়ে গিয়েছেন।
বিচারপতি কান্ত: এই মামলায় বাকিরা জামিন পেতেই পারেন। তাঁরা তো কেউ মন্ত্রী নন। আপনার মক্কেল মন্ত্রী ছিলেন। তিনি যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হন, সমাজকে আমরা কী বার্তা দেব? একজন দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি কি এ ভাবে জামিন পেতে পারেন?
বিচারপতি কান্ত: সবাই তো শিক্ষামন্ত্রী নন। নিজের দিকে দেখুন। আপনার মক্কেলের বাড়ি থেকে কোটি কোটি নগদ টাকা উদ্ধার হয়েছে।
আইনজীবী রোহতগি: ঘনিষ্ঠের বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হলে তার দায় পার্থের নয়।
বিচারপতি কান্ত: দু’জনের বিরুদ্ধে যৌথ ভাবে সম্পত্তি কেনার অভিযোগ রয়েছে। মন্ত্রীর পিএ-র বাড়ি থেকে বিপুল টাকা উদ্ধার হলে মন্ত্রী কি তার দায় এড়াতে পারেন?
বিচারপতি কান্ত: মন্ত্রী হয়ে পার্থ নিশ্চয়ই নিজের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিতেন না। তাই হয়তো ডামি ব্যক্তিকে সামনে রেখে তিনি দুর্নীতি করেছেন। ওঁর পরিচিত বা ঘনিষ্ঠের বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছে। এই অবস্থায় ওঁকে জামিন দিলে তদন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বিচারপতি কান্ত: ঘুষের টাকা না হলে ও ভাবে এত টাকা কেউ বাড়িতে রাখেন? তদন্ত একটি জায়গায় আসুক। তার পরে জামিন নিয়ে বিবেচনা করব।
আইনজীবী রোহতগি: বলা হচ্ছে, মন্ত্রীর নির্দেশেই সব হয়েছে। কিন্তু পর্ষদ তো একটি স্বাধীন সংস্থা। তারা দায় এড়াতে পারে না। এই মামলায় জামিন পেলেই আমার মক্কেল জেল থেকে বেরিয়ে যাবেন না। অন্য মামলা তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে। ইডি জানাক, ট্রায়াল কী অবস্থায় রয়েছে।
বিচারপতি ভূঞা: আপনি যা বলছেন, সেগুলি ট্রায়াল কোর্টের বিষয়।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে পার্থের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে ৫০ কোটি টাকার বেশি নগদ উদ্ধার হয়েছিল। অর্পিতার পাশাপাশি পার্থকেও গ্রেফতার করা হয়। সেই থেকে জেলে রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, নিয়োগ মামলায় দুর্নীতির অন্যতম মূলচক্রী পার্থ। সম্প্রতি অর্পিতা জামিন পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু পার্থের জামিন এখনও মঞ্জুর হয়নি। ইডির মামলায় জামিন চেয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন পার্থ। বুধবার মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। রায় ঘোষণা স্থগিত রাখা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy