গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সিবিআই তদন্তের আর্জি শুনল না সুপ্রিম কোর্ট। মামলাকারীকে রাজ্যের সর্বোচ্চ আদালত কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন করার নির্দেশ দিল তারা। আবেদনকারীর আর্জি ছিল, গত বছর মণিপুরে হিংসার ঘটনায় যে ভাবে তদন্ত হয়েছিল, সন্দেশখালিতেও সেই ভাবেই তদন্ত হোক। সেই আর্জিতে সায় দিল না শীর্ষ আদালত। বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ, মণিপুরের সঙ্গে সন্দেশখালির তুলনা হয় না।
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার স্বাগত জানিয়েছে। আইনজীবী সঞ্জয় বসু বলেন, ‘‘দেশের শীর্ষ আদালত যথাযথ ভাবেই বলেছে, মণিপুরের সঙ্গে কোনও ভাবেই বাংলার তুলনা হয় না। মামলাকারীর তরফে আবেদন করা হয়েছিল, সন্দেশখালির ঘটনার তদন্তভার সিবিআই অথবা বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-কে দেওয়া হোক। পাশাপাশি, গোটা তদন্তপ্রক্রিয়া বাংলার বাইরে পাঠানো হোক। সুপ্রিম কোর্ট সেটাও খারিজ করে দিয়ে মামলা কলকাতা হাই কোর্টে পাঠিয়ে দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট আদালত প্রশাসনের ভূমিকা পর্যালোচনা করে সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।’’
আলাখ অলোক শ্রীবাস্তব নামে এক আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, সন্দেশখালি থেকে যে সব ‘ভয়াবহ’ তথ্য উঠে এসেছে, তাতে বাংলায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া সম্ভব নয়। ন্যায়বিচারের স্বার্থে মামলা রাজ্যের বাইরে সরিয়ে আনা উচিত। সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে সিট বা সিবিআই দিয়ে তদন্ত হওয়া জরুরি বলেও দাবি করেছিলেন মামলাকারী। সোমবার সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বিভি নাগারত্ন এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহ্-এর ডিভিশন বেঞ্চের বক্তব্য, হাই কোর্ট ইতিমধ্যেই একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে বিষয়টি দেখছে। কী প্রক্রিয়ায় তদন্ত হবে, তারা সেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা তো হাই কোর্টের রয়েছে। তাই মামলাকারী সেখানেই মামলা করতে পারতেন। পরে বিচারপতিদের নির্দেশ মেনে মামলাটি প্রত্যাহারও করে দেন মামলাকারী।
প্রসঙ্গত, জনস্বার্থ মামলায় অলোকের আর্জি, মণিপুরের হিংসা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট একটি কমিটি গঠন করেছিল হাই কোর্টের তিন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের নিয়ে। এ ক্ষেত্রেও সেই ধাঁচেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক। পাশাপাশি সন্দেশখালিতে যাঁদের উপর যৌন নির্যাতন হয়েছে বলে অভিযোগ, তাঁদের ক্ষতিপূরণ ও এলাকায় আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। আইনজীবীর আবেদন, তদন্ত সম্পূর্ণ হলে দিল্লির ফাস্টট্র্যাক কোর্টে সময়সীমা বেঁধে বিচার প্রক্রিয়া হোক। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হোক, তারা যাতে অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy