বাংলা-সহ ছয় রাজ্য এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের হাই কোর্টগুলির বক্তব্য জানতে চাইল হাই কোর্ট। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
ফৌজদারি মামলায় স্থগিতাদেশের কি বিচারকে শ্লথ করে দেয়? বিষয়টি বিবেচনা করে দেখতে একটি স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করেছে শীর্ষ আদালত। সোমবার ওই মামলার প্রথম শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চে। প্রথম শুনানিতেই পশ্চিমবঙ্গ-সহ ছয় রাজ্য এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের হাই কোর্টের বক্তব্য জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত। তালিকায় বাংলা ছাড়াও রয়েছে মহারাষ্ট্র, প়ঞ্জাব, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান এবং ঝাড়খণ্ড। সোমবারের শুনানিতে মূলত দু’টি বিষয়ের কথা তুলে ধরে প্রধান বিচারপতি খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ। প্রথমত, ফৌজদারি মামলায় স্থগিতাদেশের জন্য বিচারে বিরূপ প্রভাবের সম্ভাবনা। দ্বিতীয়ত, বিচার শুরু হতে দেরি হওয়ার সম্ভাবনা। এই বিষয়গুলি নিয়ে আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রাজ্য এবং হাই কোর্টগুলির থেকে বক্তব্য জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
হাই কোর্টগুলিতে বিভিন্ন ধরনের ফৌজদারি মামলা আসে। তার মধ্যে একটি হল, কোনও ফৌজদারি মামলায় দায়ের হওয়া এফআইআর খারিজের আবেদন। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ওই এফআইআর হাই কোর্ট খারিজ না করে স্থগিতাদেশ দিয়ে দেয়। এই ধরনের মামলাগুলিতে স্থগিতাদেশ পড়ার ফলে নিম্ন আদালতে বিচার প্রক্রিয়া থমকে যায়। আবার এমনও দেখা যায়, হাই কোর্টগুলিতে প্রচুর মামলার চাপ থাকার কারণে ওই এফআইআর খারিজের আবেদন অনেক দিন পরে শোনা হয়। আইনজীবীদের একাংশের ব্যাখ্যা, এই ধরনের স্থগিতাদেশের কারণে ফৌজদারি মামলার বিচারে কোনও বিরূপ প্রভাব পড়ে কি না, তা খতিয়ে দেখতে চাইছে সুপ্রিম কোর্ট।
আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় কোনও সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করার আগে সরকারের অনুমতি পেতে সমস্যা হচ্ছে তদন্তকারী সংস্থাকে। বিচার শুরু করতে হলে সরকারি আধিকারিকদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে অনুমতি পেতে হয়। অন্যথায়, কোনও সরকারি আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করা যায় না। উদাহরণ হিসাবে এ রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, অশোককুমার সাহাদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করার অনুমতি পেতে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ সিবিআইয়ের। ফলে বিচার শুরু করা যাচ্ছে না।
বাংলার পাশাপাশি মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান এবং পঞ্জাবেও এই ধরনের সমস্যা নজরে এসেছে শীর্ষ আদালতের। ফৌজদারি মামলায় এমন অনেক ক্ষেত্রে বিচার শুরু হতে দেরি হওয়ার কারণে রায় দিতেও দেরি হচ্ছে। এই বিষয়টি নিয়ে ভাবছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টের এই স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপের বিষয়ে আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁর ব্যাখ্যা, “বিভিন্ন অপরাধমূলক মামলায় অভিযুক্ত হাই কোর্ট থেকে স্থগিতাদেশ আদায় করে নেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ওই মামলা আর শুনানির জন্য ওঠে না। ফলে এমন প্রচুর মামলা নিষ্পত্তি না হওয়ায় ট্রায়াল শুরু করতে পারে না নিম্ন আদালত। ফলে বিচার পেতে দেরি হয়।” সুপ্রিম কোর্টের এই স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপের ফলে বিচারে গতি আসবে বলে মনে করছেন আইনজীবী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy