সোমবার সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের ওবিসি শংসাপত্র বাতিল মামলার শুনানি ছিল। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
শুধুমাত্র ধর্মের ভিত্তিতে কারও সংরক্ষণ পাওয়া উচিত নয়। রাজ্যের ওবিসি (অনগ্রসর শ্রেণি) শংসাপত্র বাতিল মামলার শুনানিতে এমনটাই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে রাজ্যের দেওয়া কয়েক লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল হয়ে যায়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সু্প্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। শীর্ষ আদালত ওই নির্দেশে এখনও পর্যন্ত কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। ফলে ‘ওবিসি সার্টিফিকেট’ ব্যবহার করতে পারছেন না বহু মানুষ। রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল জানিয়েছেন, রঙ্গনাথ কমিশন মুসলিমদের সংরক্ষণের সুপারিশ করেছিল। তার পরেই এই পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, এ নিয়ে এখনই কোনও নির্দেশ তারা দেবে না। জানুয়ারি মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের ওবিসি শংসাপত্র বাতিল মামলার শুনানি ছিল। সেখানে রাজ্যের আইনজীবী কপিল সওয়াল করে জানান, হাই কোর্টের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গে ১২ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল হয়েছে। এই রাজ্যে মোট বাসিন্দার ২৮ শতাংশ সংখ্যালঘু। তার মধ্যে ২৭ শতাংশ মুসলিম। রঙ্গনাথ কমিশন মুসলিমদের জন্য সংরক্ষণের সুপারিশ করেছিল। কলকাতা হাই কোর্ট অন্ধ্রপ্রদেশের একটি রায়কে সামনে রেখে ওবিসি শংসাপত্র বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে। অথচ অন্ধ্রে ওই রায় স্থগিত রয়েছে। এর পরেই বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের পর্যবেক্ষণ, শুধুমাত্র ধর্মের ভিত্তিতে কারও সংরক্ষণ পাওয়া উচিত নয়। রাজ্যের আইনজীবীর সওয়াল, পিছিয়ে পড়া অংশকে সংরক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। তার মধ্যে মুসলিম ছাড়াও অন্য সম্প্রদায় রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের তৈরি সংরক্ষণের তালিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের পর্যবেক্ষণ, কমিশন গঠন না-করে একটি বিশ্ববিদ্যালয় কী ভাবে সংরক্ষণের তালিকা তৈরি করতে পারে। রাজ্যের তরফে দাবি করা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় এই তালিকা তৈরি করেনি। তারা শ্রেণিবিন্যাস করেছে।
মূল মামলাকারীদের আইনজীবী পিএস পাটোয়ালিয়া সওয়াল করে জানিয়েছেন, হাই কোর্ট রায়ে বলেছে ওবিসিদের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে কোনও সমীক্ষা করা হয়নি। নির্দিষ্ট কোনও তথ্য ছাড়াই ওবিসি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিশনকে এড়িয়ে ওই কাজ করা হয়েছে। বিচারপতি গাভাই জানিয়েছেন, হাই কোর্ট বলেছে শ্রেণিবিন্যাস করে রাজ্য বিধানসভায় পেশ করুক। রাজ্য কেন নিজের ক্ষমতায় তা করতে পারবে না? রাজ্য পাল্টা দাবি করে, হাই কোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, তারা এখনই কোনও নির্দেশ দেবে না। আগামী জানুয়ারিতে এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
গত ২২ মে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ ২০১০ সালের পর থেকে তৈরি রাজ্যের সব ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে দেয়। হাই কোর্টের নির্দেশে প্রায় ১২ লক্ষ সার্টিফিকেট অকেজো হয়ে যায়। উচ্চ আদালতের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। হাই কোর্টের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy