সুনীল সিংহ। নিজস্ব চিত্র।
তিনি তৃণমূলে যাবেন না। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার পর বুধবার এমনটাই জানালেন নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিংহ। জানিয়ে দিলেন, বিজেপি-তে তিনি ভালই আছেন। দল ছেড়ে অন্য কোথাও যাচ্ছেন না।
বুধবার পলতা থেকে নোয়াপাড়ায় বিজেপি-র ‘পরিবর্তন যাত্রা’য় অংশ নেন শুভেন্দু অধিকারী ও ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ। সেই কর্মসূচিতে অংশ নেন সুনীলও। পরে নোয়াপাড়ায় এক জনসভাও আয়োজিত হয়। সেখানে প্রথমে বক্তৃতা করেন নোয়াপাড়ার বিধায়ক। মিনিটখানেকের বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘‘আপনারা অনেক কিছুই শুনেছেন। টিভি এবং সংবাদমাধ্যমে। আমিও শুনেছি, নাকি আমি ভারতীয় জনতা পার্টি ছাড়ছি। আমরা দেড় বছর আগে বিজেপি-তে যোগদান করি, তখনও ভাবতে পারিনি একুশ সালে দল ক্ষমতায় আসবে। কিন্তু এখন শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেতা-সহ অনেকেই তৃণমূল ছেড়ে বেরিয়ে আসছেন। এখন দিদিমণি বলছেন, পচা আম বেরিয়ে গিয়েছে। তা হলে আপনি কেন বলছেন যে তাঁরা ফিরে আসুন।’’ এর পরেই নোয়াপাড়ার বিধায়ক বলেন, ‘‘সে দিন বিধানসভার শেষ অধিবেশন ছিল। শেষ দিন হওয়ায় ফোটোসেশন ছিল। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমার দেখা হয়। দেখা হলে তিনি আমাকে বলেন, কেমন আছো? জবাবে বলেছিলাম, ভাল আছি। এর বাইরে আমার সঙ্গে কোনও কথা হয়নি। আমি বিজেপি-তেই ছিলাম, আছি, থাকব। আমি জিতব, আপনারাও জিতবেন। বিজেপি জিতবে। বিজেপি এ রাজ্যে আগামী দিনে সরকার গড়বে। আপনারা ভয় পাবেন না।’’
বেশ কয়েক বছর আগে একটি বিজ্ঞাপন বেশ জনপ্রিয় হয়। সেখানে ‘সুনীলবাবু’ নামে এক চরিত্র ছিল। তাঁকে বিজ্ঞাপনের অন্য চরিত্ররা যখন হিন্দিতে জিজ্ঞেস করত, ‘কেমন আছেন সুনীলবাবু’? সুনীলবাবুর জবাব থাকত, ‘বড়িয়াঁ হ্যায়’, মানে ‘ভাল আছি’। বুধবার সুনীলের বিজেপি-তে ‘ভাল’ থাকা মন্তব্য সেই বিজ্ঞাপনকেই মনে পড়িয়ে দিয়েছে অনেককে।
২০১৯-এ লোকসভা ভোটের পর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে নাম লিখিয়েছিলেন সুনীল। বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসও দল ছেড়ে বিজেপি-তে গিয়েছিলেন। ১৬তম বিধানসভার শেষ অধিবেশনের দিন গত সোমবার বিধানসভার লবিতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয় বিশ্বজিতের। মুখোমুখি হতেই মুখ্যমন্ত্রীকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন তিনি। বিশ্বজিৎকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কী রে, কী সিদ্ধান্ত নিলি?’’ সেই সময় স্মিত হেসে মুখ্যমন্ত্রীর কথার কোনও জবাব দেননি বিশ্বজিৎ। সে দিন তাঁর সঙ্গেই ছিলেন সুনীল এর পর ওই দুই বিধায়ককেই দেখা যায় বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের বাইরে ঘোরাঘুরি করতে। একটা সময় তাঁদের দু’জনকে নিজের ঘরেই ডেকে পাঠান মমতা। দীর্ঘক্ষণ কথাও হয় তাঁদের মধ্যে।
এর পরেই জল্পনা শুরু হয়, তা হলে কি ‘ঘর ওয়াপসি’ হতে চলেছে বিশ্বজিৎ-সুনীলের? মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ওই বৈঠকে সেখানে ছিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। পরে বিশ্বজিৎ-সুনীল মুখ্যমন্ত্রীর ঘর থেকে বার হওয়ার সময় দু’জনেই জানান, বিধায়ক হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীকে এলাকা উন্নয়ন নিয়ে তৈরি হওয়া সমস্যা প্রসঙ্গেই কিছু কথা বলতে গিয়েছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিধানসভায় সাক্ষাতের পরেই রাজ্য সরকারের তরফে নিরাপত্তারক্ষী পাঠানো হয়েছিল সুনীলের বাড়িতে। রাজ্য সরকারি নিরাপত্তা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বিশ্বজিৎকেও। কিন্তু দু’জনেই সেই নিরাপত্তা প্রত্যাখ্যান করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy