Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Arjun Singh Sukanta Majumdar

দলের কথা প্রকাশ্যে নয়! এ বার ‘শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ’ অর্জুনকেও সতর্ক করলেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত

অর্জুনের পাশাপাশি বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-ও সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অনেকের মতে, বৃহস্পতিবার অর্জুন, সৌমিত্র দু’জনকেই সতর্ক করতে চেয়েছেন সুকান্ত।

Sukanta Majumder warns Arjun Singh about his comments regarding Party organization

(বাঁ দিকে) অর্জুন সিংহ, সুকান্ত মজুমদার। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৪ ১৭:৫৯
Share: Save:

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্যকে বুধবার ‘খারিজ’ করে দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। নরেন্দ্র মোদী সরকারের স্লোগান শুভেন্দু ‘পাল্টে’ দেওযার পরে সুকান্ত প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, দল ওই বক্তব্য ‘অনুমোদন’ করে না। যা সতর্কীকরণেরই নামান্তর বলে রাজ্য বিজেপির অনেকের অভিমত। বৃহস্পতিবার বিজেপির অভ্যন্তরে ‘শুভেন্দু-ঘনিষ্ঠ’ হিসেবে পরিচিত ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংহকেও সতর্ক করলেন সুকান্ত। যা রাজ্য বিজেপির অভ্যন্তরীণ সমীকরণের নিরিখে ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।

বিজেপির এই ‘অন্তর্কলহের’ আবহে শুভেন্দু-সুকান্ত দ্বন্দ্ব উস্কে দিতে চেয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‘শুভেন্দু আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে বিজেপিতে গিয়েছেন। আমাদের নেতানেত্রীর বিরুদ্ধে কুৎসা করছেন। কিন্তু এটাও ঠিক যে, রাজ্যে একমাত্র শুভেন্দুই বিজেপিকে ভাসিয়ে রেখেছেন। নেতা হিসেবে শুভেন্দুর জুতো পালিশ করার যোগ্যতাও সুকান্তদের নেই।’’

বঙ্গ বিজেপির রাজ্য কমিটির বর্ধিত কর্মসমিতির সভা ছিল বুধবার। সায়েন্স সিটিতে সেই বৈঠকের অবকাশে সংবাদমাধ্যমের সামনে অর্জুন দলের সাংগঠনিক দুর্বলতাকে নিশানা করেছিলেন। ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ বলেছিলেন, ‘‘বাংলায় ভোট করাতে হয়। ভোট করাতে গেলে সংগঠন দরকার। ঘরে বসে শুধু আলোচনা করলে হবে না। মাঠে-ময়দানে তা বাস্তবায়িত করতে হবে।’’ অর্জুনের সেই বক্তব্য যে রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক দায়িত্বে-থাকা নেতাদের উদ্দেশে ছিল, তা বুঝতে কারও অসুবিধা হয়নি। বৃহস্পতিবার অর্জুনের সেই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সুকান্ত বলেন, ‘‘দলের কথা দলের মধ্যেই বলা উচিত। সংবাদমাধ্যমের সামনে বলা উচিত নয়।’’ সুকান্তের কথায়, ‘‘বলার হলে অনেক জায়গা রয়েছে। সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা, বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা সুনীল বনসল, মঙ্গল পাণ্ডে, অমিত মালবীয়েরা আছেন। সর্বভারতীয় সংগঠন সম্পাদকও রয়েছেন। তাঁদের বলুন।’’ বালুরঘাটের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘কোনও এলাকায় যদি সংগঠন দুর্বল হয়, তার দায় নিচুতলার কর্মী থেকে উপরতলার সকলের। দায় তো আমাদেরও। আমাদের দায় নেই?’’

অর্জুনের পাশাপাশি বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-ও সংগঠন নিয়ে বুধবার সংবাদমাধ্যমের সামনেই খোলাখুলি প্রশ্ন তুলেছিলেন। অনেকের মতে, বৃহস্পতিবার অর্জুন, সৌমিত্র দু’জনকেই সতর্ক করতে চেয়েছেন সুকান্ত। এলাকার সংগঠনের ‘দুর্বলতা’র দায় যে সংশ্লিষ্ট এলাকার নেতাদেরই, তা-ই বুঝিয়ে দিয়েছেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত। উল্লেখ্য, গত বার জেতা ব্যারাকপুর আসনটি এ বার হেরে গিয়েছে বিজেপি। গত বার বিজেপির টিকিটে অর্জুন জিতলেও এ বার আর পারেননি। তবে মাঝে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে ভোটের ঠিক আগে আগে ফিরে যান বিজেপিতে। ফের তাঁকেই টিকিট দেয় পদ্মশিবির। বিজেপির অভ্যন্তরের বক্তব্য, শুভেন্দুর ‘হস্তক্ষেপ’ না-থাকলে অর্জুনের ভোটের অব্যবহিত আগে ব্যারাকপুরে টিকিট পাওয়া এত সহজ হত না। বস্তুত, অর্জুন বিজেপিতে যোগও দিয়েছিলেন দিল্লি গিয়ে। রাজ্যে নয়। বিজেপির অনেকে মনে করছেন, ‘এলাকায় দুর্বল সংগঠনের’ কথা বলে ঠারেঠোরে সুকান্ত ব্যারাকপুরের হার নিয়ে অর্জুনকেই প্রশ্নের মুখে ফেলতে চেয়েছেন।

ভোটের পর থেকে বিজেপির একের পর এক নেতা প্রকাশ্যে যে সব মন্তব্য করেছেন, তা দলের জন্য বিড়ম্বনার। যা নিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল সুকান্তকে রসিকতার সুরে খানিক কটাক্ষই করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মনে হয় সুকান্ত মজুমদার অর্জুনকে দূর থেকে সতর্ক করেছেন। আগামী দু’তিন মাস হয়তো বিজেপির রাজ্য সভাপতি ব্যারাকপুর এলাকায় পা রাখবেন না। অন্য কোথাও যেতে হলেও ঘুরপথ ধরে যেতে হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Arjun Singh Sukanta Majumdar BJP Leaders
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE