নিয়োগ মামলায় ধৃত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’। —ফাইল চিত্র।
বৃহস্পতিবারও আদালতে হাজিরা দিলেন না ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে হেফাজতে চেয়ে নতুন করে আবেদন জানিয়েছে সিবিআই। ‘কাকু’কে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু বৃহস্পতিবারও আদালতে জানানো হল, ‘কাকু’ অসুস্থ। তাই তাঁকে হাজির করানো যায়নি। বর্তমানে তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন। সেখানকার হাসপাতালেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। এই নিয়ে পর পর চতুর্থ বার ‘কাকু’ হাজিরা এড়ালেন।
সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হতে পারেন, এই আশঙ্কা করে ‘কাকু’ আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন। এর মাঝেই তাঁকে হেফাজতে নিতে চেয়ে বিচার ভবনে আবেদন জানায় সিবিআই। সেই আবেদন মঞ্জুর করে আদালত। ‘কাকু’কে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ চেয়ে বুধবার আবার বিচার ভবনে আবেদন জানান ‘কাকু’র আইনজীবী সেলিম রহমান। বৃহস্পতিবার সেই সংক্রান্ত শুনানিতে তিনি জানান, তাঁর মক্কেলের একটি মামলা হাই কোর্টে চলছে। গত দিন উচ্চ আদালতের বিচারপতি মৌখিক ভাবে জানিয়েছিলেন, এখন সিবিআই কিছু করবে না। কিন্তু তার মাঝেই সিবিআই আবার নিম্ন আদালতে ‘কাকু’র হাজিরার জন্য আবেদন করেছে।
সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, হাই কোর্টের নির্দেশে এমন কিছু ছিল না, যেখানে বলা হয়েছে নিম্ন আদালতে মামলার শুনানি চলবে না। সেই কারণেই তারা নতুন করে ‘কাকু’র হাজিরার জন্য আবেদন করেন এবং তা মঞ্জুর হয়। বিচার ভবনে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক জানান, উচ্চ আদালতের এমন কোনও নির্দেশের কথা তাঁরও জানা ছিল না। ‘কাকু’র আইনজীবী এর পর জানান, নির্দেশে না বললেও উচ্চ আদালত মৌখিক ভাবে জানিয়েছিল, সিবিআই আির কোনও পদক্ষেপ করবে না।
‘কাকু’র আইনজীবীর বক্তব্য শুনে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলে ওঠেন, ‘‘যা মনে হচ্ছে, ওঁরা এই দুর্নীতির তদন্ত করতেই মানা করছেন।’’ উত্তরে ‘কাকু’র আইনজীবী বলেন, ‘‘একদমই না।’’
নিয়োগ মামলায় ইডির হাতে আগেই গ্রেফতার হন সুজয়কৃষ্ণ। তাঁকে ‘শোন অ্যারেস্ট’ (আগেই গ্রেফতার হওয়া অভিযুক্তকে পুনরায় গ্রেফতার করা) করতে চায় সিবিআই। ইডির পর তারাও ‘কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে চায়। কিন্তু ‘শোন অ্যারেস্ট’ না করলে তা সম্ভব নয়। নিম্ন আদালতের বিচারকও জানিয়েছেন, সশরীরে হাজিরা না দিলে কাউকে হেফাজতে নেওয়া যাবে না। ফলে ‘কাকু’র সিবিআই হেফাজত নিয়ে নতুন করে জটিলতা তৈরি হয়েছে।
এর আগে একাধিক বার হাজিরা এড়ানোর পর জেল কর্তৃপক্ষ ‘কাকু’র মেডিক্যাল রিপোর্ট আদালতে জমা দিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, ‘কাকু’র পেটে ব্যথা এবং তিনি দুর্বল। তাই আদালতে সশরীরে হাজিরা দিতে পারছেন না। বৃহস্পতিবারও একই কথা জানানো হল।
অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করানো হয়েছিল নিয়োগ মামলায় সিবিআইয়ের হাতে কিছু দিন আগে ধৃত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়কে। তাঁর আইনজীবী জামিনের আবেদন জানান। তিনি জানান, গত দু’বছরে অন্তত ১০ বার সন্তুকে তলব করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তিনি বরাবর তদন্তে সহযোগিতা করেছেন। তবে এখন কেন বলা হচ্ছে, তিনি জামিন পেলে তদন্তের ক্ষতি হবে? প্রশ্ন তোলেন সন্তুর আইনজীবী। সন্তুর কণ্ঠস্বরের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। ফলে যে কোনও শর্তে জামিনের আবেদন জানান আইনজীবী। সিবিআই অবশ্য সন্তুর আবেদনের বিরোধিতা করেছে। তারা জানিয়েছে, সন্তু যাঁদের থেকে টাকা তুলেছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারীরা। এই মুহূর্তে তিনি জামিন পেলে তদন্তে ক্ষতি হতে পারে। সন্তুকে আরও ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখা হোক, আবেদন জানিয়েছে সিবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy