তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির চার্জশিটের শুরুতেই রয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংস্থা লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের নাম। সেই সঙ্গে ওই চার্জশিটে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রীর নামে গড়া তহবিল থেকে শুরু করে তাঁর জামাই এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের নামও রয়েছে। শনিবার প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালতে পঞ্চম সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দিয়েছে ইডি। সেখানেই আরও ২৯টি নাম যোগ করা হয়েছে। সংস্থার পাশাপাশি দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিবিশেষের নামও চার্জশিটে রেখেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।
প্রাথমিকের মামলায় ইডির দেওয়া চতুর্থ সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে মোট ২৫ জনের নাম ছিল। পঞ্চম চার্জশিটটিতে আরও ২৯টি নাম যোগ করা হয়েছে। সেই ২৯ নামের তালিকার শীর্ষে রয়েছে লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস, যার দফতর কলকাতার নিউ আলিপুরে। পার্থের স্ত্রী বাবলি চট্টোপাধ্যায়ের নামে একটি তহবিল রয়েছে। সেই ‘বাবলি চ্যাটার্জি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট’ পরিচালনা করতেন পার্থের জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য। তাঁর নামও চার্জশিটে রেখেছে ইডি। রাখা হয়েছে কল্যাণময়ের একাধিক সংস্থা এবং ওই তহবিলটির নামও।
পার্থ-ঘনিষ্ঠ একাধিক ব্যক্তি এবং তাঁদের পরিচালিত সংস্থার নাম ইডির চার্জশিটে রয়েছে। গ্রিনটেক আইটি সিটি প্রাইভেট লিমিটেড এবং তার অন্যতম ডিরেক্টর উদয় মোদী, বেঙ্গল মার্লিন হাউসিং লিমিটেড এবং তার অন্যতম ডিরেক্টর সুশীলকুমার মোহতা, দিলীপকুমার চৌধরি, বৌবাজারের চিরাগ অ্যাপ্লায়েন্স প্রাইভেট লিমিটেড এবং তার ডিরেক্টর সুবোধকুমার ছাজেরের নাম চার্জশিটে উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। এ ছাড়া, চাঁদনি চকের যে সাইকেলের দোকানে ইডি হানা দিয়েছিল, সেই নিউ ইন্ডিয়া লক্ষ্মী সাইকেল প্রাইভেট লিমিটেড এবং তার ডিরেক্টর নবীনকুমার গুপ্তের নামও রাখা হয়েছে চার্জশিটে। রয়েছে নিয়োগ মামলায় ধৃত নীলাদ্রি ঘোষ, পার্থ-ঘনিষ্ঠ প্রোমোটার সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়, ওএমআরশিট প্রস্তুতকারী সংস্থা এস বসু রায় অ্যান্ড কোম্পানি এবং তাপস মণ্ডলের সংস্থা মিনার্ভা ইনস্টিটিউট অফ এডুকেশনের নামও।
২৫০ পাতার চার্জশিটে প্রায় ১০ হাজার নথি রয়েছে। তাতে ইডির দাবি, আইন ভেঙে রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলে অযোগ্যদের চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। চাকরির বিনিময়ে নেওয়া হয়েছে টাকা। বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে সেই টাকার লেনদেন হয়েছে।
প্রাথমিক মামলায় অভিষেকের সংস্থার নাম আগেই উঠে এসেছিল। লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের ডিরেক্টর পদে অভিষেক ছাড়াও ছিলেন আরও অনেকে। অভিষেকের বাবা এবং মা-ও ছিলেন সংস্থার ডিরেক্টর। এই সংস্থা যে তাঁরই, তা নিজেই জানিয়েছিলেন অভিষেক। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে আনন্দবাজার অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও এই সংস্থার কাজ নিয়ে, তার ব্যবসা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তিনি। সংস্থাটির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র বিরুদ্ধেও। এখন তিনি জেলে। এই মামলার প্রেক্ষিতেই অভিষেকের আয়ের উৎস জানতে চেয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। ওই সংস্থার আটটি সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে ইডি, যার বাজারমূল্য সাড়ে সাত কোটি টাকা। অভিষেক এই সংস্থা সংক্রান্ত তথ্য ইডিকে জমাও দিয়ে এসেছিলেন। তলব করা হয়েছিল তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। সেই লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডসের নামটিই পঞ্চম সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটের শুরুতে রেখেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy