Advertisement
E-Paper

উজানের পুলিশি হেফাজত, মুক্তি চেয়ে সরব ছাত্রছাত্রীরা

পুলিশ সূত্রের খবর, তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সৌম্যদীপকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৫ ০৮:২৫
Share
Save

প্রাথমিক ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগই দায়ের করা হয়নি। কিন্তু পুলিশের দাবি, নির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র সৌম্যদীপ মোহান্ত ওরফে উজানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার বিকেল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে বেশি রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। দর্শনের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রকে বৃহস্পতিবার কোর্টে তোলা হয়। সরকারি কৌঁসুলি সাজ্জাদ আলি খান জানান, অভিযুক্তের ১৮ মার্চ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সৌম্যদীপকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সিসি ক্যামেরা ফুটেজে তৃণমূল ঘনিষ্ঠ শিক্ষাকর্মীদের ওই দফতরের আশপাশে ১ মার্চ সন্ধ্যায় গোলমালের সময়ে উজানের উপস্থিতি রয়েছে। এখন জামিনপ্রাপ্ত মহম্মদ সাহিল আলির বিরুদ্ধেও একই প্রমাণ মিলেছিল বলে পুলিশের দাবি। পুলিশের দাবি, সৌম্যদীপ এবং আরও কয়েক জনের কিছু চ্যাট হাতে এসেছে। তাতে ওই অফিসঘর ভাঙচুর ও আগুন লাগানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সৌম্যদীপ ওই চ্যাট মুছে দেন বলে পুলিশের অভিযোগ। তদন্তের স্বার্থে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রকে হেফাজতে চায় পুলিশ। সৌম্যদীপ ডিএসএফ-এর একটি অংশ কালেক্টিভের সঙ্গে যুক্ত বলে পুলিশ জেনেছে। তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর থেকে খুনের চেষ্টা, সব অভিযোগই আনা হয়েছে। যাদবপুরের পড়ুয়াদের তরফে বিবৃতিতে উজান, সাহিলদের নামে অভিযোগ ভুয়ো বলে তাঁদের মুক্তির দাবি করা হয়।

গত ১ মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তৃণমূল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার সভায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে বিক্ষোভ দেখানোর ঘটনা থেকেই গোলমালের সূত্রপাত। ব্রাত্যের গাড়ির ধাক্কায় প্রথম বর্ষের ছাত্র ইন্দ্রানুজ রায় আহত হওয়ায় যাদবপুর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। হাই কোর্টের নির্দেশের পরেই ব্রাত্য, তাঁর গাড়ির চালক রেহান মোল্লা এবং যাদবপুরের প্রবীণ অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্রের নামে পুলিশ অভিযোগ দায়ের করে। বিষয়টি নিয়ে রিপোর্টও চায় হাই কোর্ট। গত ১২ মার্চ রিপোর্ট দেওয়ার কথা থাকলেও শুনানি হয়নি। ফের কবে শুনানি হয়, তার অপেক্ষা চলছে। যাদবপুরের পড়ুয়াদের অভিযোগ, তদন্তের জন্য পুলিশ তাঁদের বার বার ডেকে পাঠাচ্ছে, মোবাইল বাজেয়াপ্ত করতে চাইছে। হাই কোর্ট অবশ্য তদন্তে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি।

যাদবপুরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে শিক্ষাঙ্গনে পুলিশ ফাঁড়ি বসানোর জন্য অনুমতি চেয়েছে লালবাজার। ফাঁড়ি এবং পুলিশ ব্যারাকের জন্য যাদবপুরের কোনও ফটকের কাছে ৪০০০ বর্গফুট জায়গাও চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে যাদবপুরের অন্তর্বর্তী উপাচার্য ভাস্কর গুপ্ত এ দিন বলেন, “আমি এখনও ডাক্তারের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারছি না। পুরোপুরি সুস্থ নই। এখনই এই নিয়ে বলার অবস্থায় নেই।” বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, বেশ কয়েকটি বিভাগেই ঠাসাঠাসি দশা। এই অবস্থায় ফাঁড়ি বসানো অত্যন্ত কঠিন। ডিএসও-র পক্ষ থেকে পুলিশ ফাঁড়ি বসানোর বিরোধিতা করে কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে।

এ দিন দুপুরে একটি টিভি চ্যানেলের প্ররোচনায় যাদবপুরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয় বলে অভিযোগ। তখন সহ-উপাচার্য অমিতাভ দত্ত শিক্ষাঙ্গনে ছিলেন না। ওই চ্যানেলের সাংবাদিকেরা বিক্ষোভ দেখান অস্থায়ী রেজিস্ট্রার ইন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে ঢুকে। পড়ুয়ারা পুলিশে অভিযোগ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেও তাঁরা ওই চ্যানেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বিবৃতিতে বলেছে, একটি টিভি চ্যানেল যাদবপুর নিয়ে নাগাড়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে তারা সাম্প্রদায়িক কথা বলে প্ররোচনা ছড়ায়। কর্তৃপক্ষের ওই সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jadavpur University

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}