ফাইল ছবি
সহায়ক মূল্যে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এর মধ্যেই রাজ্য খাদ্য দফতর খোলা বাজার থেকে চাল কিনতে চাওয়ায় বিতর্ক বেধেছে। বিরোধীদের দাবি, এই পদক্ষেপে বঞ্চিত হবেন চাষিরা। খাদ্য দফতরের কর্তারা মন্তব্য করেননি। তবে রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের দাবি, “সহায়ক মূল্যে ধান কেনার সঙ্গে খোলা বাজারের চাল কেনার সম্পর্ক নেই। এফসিআই রেশনের জন্য বরাদ্দ গম দিচ্ছে না। উপভোক্তাদের গমের বদলে বাড়তি চাল দিতে খোলা বাজার থেকে চাল কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
দফতর সূত্রের খবর, সাড়ে ছ’লক্ষ টন চাল কিনতে চলতি মাসের গোড়ায় দরপত্র ডাকা হয়। বৃহস্পতিবার থেকে দরপত্র খোলা শুরু হয়েছে। তবে ধান-ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকার বিজ্ঞপ্তি দিতেই বাজারে মোটা চাল আসা প্রায় বন্ধ। ‘পশ্চিমবঙ্গ ধান্য ব্যবসায়ী সমিতি’র আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ মল্লিকের অভিযোগ, “স্বর্ণ জাতীয় মোটা চাল এখন বাজারে আসছে না। সরকারকে বিক্রি করবেন বলে তা ধরে রেখেছেন অনেকে। ফলে, মিনিকিটের মতো সরু চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী।’’ যদিও ‘রাজ্য চালকল মালিক সমিতি’র কর্তা আব্দুল মালেকের মতে, ‘‘সরকার খোলা বাজারে চাল কিনলে, ঊর্ধ্বমুখী থাকা চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।’’
খাদ্য দফতর জানিয়েছে, রাজ্যে ৫৫ লক্ষ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও, এখনও পর্যন্ত কেনা হয়েছে ৪৯ লক্ষ টন। বিজেপির কৃষক সংগঠনের রাজ্য নেতা কৃষ্ণ ঘোষের কটাক্ষ, “সরকার সহায়ক মূল্যে ধান কিনতে না পারায়, কৃষকেরা বঞ্চিত। উল্টে, এখন বাজার থেকে চাল কিনতে হচ্ছে!’’ ‘কৃষকসভা’র রাজ্য সম্পাদক অমল হালদারের দাবি, “চালকল শিল্পে বহুজাতিক সংস্থার পথ সুগম করতেই সরকার প্রেক্ষিত তৈরি করছে।’’ তৃণমূলের কৃষক ও খেত মজুর সংগঠনের রাজ্য সভাপতি পূর্ণেন্দু বসু জানান, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে পরে মন্তব্য করবেন।
খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, সহায়ক মূল্যে ধান কেনা হবে আরও তিন মাস। কিন্তু বেশ কয়েক মাস ধরে কিসান মান্ডিতে গিয়ে ধান বিক্রি করায় আগ্রহী চাষিদের ভিড় নেই। দৈনিক ৫০ জনের ধান কেনার লক্ষ্য থাকলেও, পাঁচ-সাত জন ধান বিক্রি করছেন। কারণ, সহায়ক মূল্য যেখানে কুইন্টালে ১,৯৪০ টাকা, সেখানে বাড়িতে বসেই চাষিরা ব্যবসায়ীর কাছে কুইন্টালে ১,৭০০-১,৭৫০ টাকা দরে ধান বেচছেন।
পূর্ব বর্ধমানের চাষি জামাল শেখ, সমীরকুমার মল্লিকদের দাবি, “গত এক মাস ধরে খোলা বাজারে ধানের দাম চড়া। কিন্তু ধান্য ক্রয় কেন্দ্রে ধান নিয়ে যাওয়ার গাড়ি ভাড়া মেটানো (সরকার কুইন্টাল প্রতি ভাড়া ২০ টাকা দিলেও, বাস্তবে খরচ বেশি বলে চাষিদের দাবি), ধানের বস্তা তোলা-নামানোর জন্য মজুরি দেওয়া ছাড়াও, অনেক ঝক্কি। তার থেকে ব্যবসায়ীকে ধান বেচা সুবিধার।’’
রাজ্যের কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘হঠাৎ করে বাড়তি চাল সংগ্রহ করতে হচ্ছে, যা বাজেটে ধরা ছিল না। ধান কিনে চাল তৈরি করতে সরকারের প্রতি কেজিতে ৩৩-৩৪ টাকা খরচ হয়। সরাসরি চাল কিনলে, দাম কম পড়বে। তাতে বাজেটের বাইরে বাড়তি বোঝাও কম হবে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy