Advertisement
২২ জানুয়ারি ২০২৫
West Bengal Municipal (Amendment) Bill

পাঁচ বছরে সম্পত্তির মূল্য বাড়বে ১০%, আসছে বিল

রাজ্যের সব পুর-এলাকায় সম্পত্তির মূল্য নির্ধারণ করে ভ্যালুয়েশন বোর্ড। পাঁচ বছর অন্তর সেই প্রক্রিয়া অনুযায়ী ঠিক হয় ‘অ্যানুয়াল রেন্টাল ভ্যালু’ (এআরভি)।

বিধানসভার চলতি অধিবেশনেই জোড়া বিল আনতে চলেছে রাজ্য।

বিধানসভার চলতি অধিবেশনেই জোড়া বিল আনতে চলেছে রাজ্য। —ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:৩৮
Share: Save:

পাঁচ বছর অন্তর সম্পত্তির মূল্য নির্ধারণ হওয়াই নিয়ম। সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না-হলেও এ বার থেকে প্রতি পাঁচ বছরে সম্পত্তির বার্ষিক মূল্য বাড়তে চলেছে ১০% হারে। অর্থাৎ সেই অনুপাতেই দিতে হতে পারে বাড়তি কর। এই নিয়ম কার্যকর করার জন্য বিধানসভার চলতি অধিবেশনেই জোড়া বিল আনতে চলেছে রাজ্য।

রাজ্যের সব পুর-এলাকায় সম্পত্তির মূল্য নির্ধারণ করে ভ্যালুয়েশন বোর্ড। পাঁচ বছর অন্তর সেই প্রক্রিয়া অনুযায়ী ঠিক হয় ‘অ্যানুয়াল রেন্টাল ভ্যালু’ (এআরভি)। যার ভিত্তিতে সম্পত্তির উপরে কর নেন পুর কর্তৃপক্ষ। এ বার বিধানসভায় চলতি আইন সংশোধন করে বলা হচ্ছে, পাঁচ বছরে ওই মূল্য নির্ধারণ করা না-গেলেও আগের হিসেবের উপরে এআরভি বেড়ে যাবে ১০% হারে। প্রশাসনিক মহলের একাংশের মতে, নাগরিকের উপরে করের বোঝা চাপানোর বিরোধী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘুরপথে তাই এমন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে, যাতে সরাসরি কর বাড়ানোর কথা বলতে হবে না। আবার সরকারের খাতে টাকা আসবে! বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের অবশ্য আশঙ্কা, ‘ভ্যালুয়েশনে’র প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক না-রেখে এই ভাবে ১০% হারে সম্পত্তির মূল্য বাড়ানো শুরু করলে নাগরিকদের আর্থিক সঙ্গতির কোনও বাছ-বিচার থাকবে না এবং তাতে দুর্নীতির আশঙ্কাও বাড়বে।

পরিষদীয় সূত্রের খবর, বিধানসভা অধিবেশনে আগামী সোমবার পেশ হতে চলেছে ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২৪’ এবং ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল মিউনিসিপ্যাল (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০২৪’। দু’টি বিল একত্রে এনেই অধিবেশনে আলোচনা হবে। ওই দুই বিলেই সম্পত্তির মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে নয়া ব্যবস্থা সংযোজনের কথা বলা হয়েছে। বিলে পুর দফতরের বক্তব্য, অনেক ক্ষেত্রেই সম্পত্তির বার্ষিক মূল্য (এআরভি) স্থির করা মুশকিল। তা ছাড়া, পুর-নিগমের বাইরে অন্য পুর এলাকাতেও ফাঁকা জমি বা বাড়ির ব্যবহারের ধরন বদলাচ্ছে। তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সম্পত্তির মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। পাঁচ বছরে সেই প্রক্রিয়া না-হলে সব ক্ষেত্রেই ১০% হারে মূল্য বেড়ে যাবে।

এক সময়ে রাজ্যে সম্পত্তির মূল্য নির্ধারণ করতো বেসরকারি সংস্থা। তাতে দুর্নীতির ননা অভিযোগ আসতো। বাম আমলে প্রবীণ কোনও আইএএস-কে শীর্ষে রেখে চালু হয়েছিল ভ্যালুয়েশন বোর্ড। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর ওই বোর্ড মূল্য নির্ধারণ করে এবং সেই অনুযায়ী এআরভি ঠিক হয়। যা থেকে আসে সম্পত্তি কর। সেই কর দেওয়ার সময়ে সম্পত্তির মালিকের তরফে কোনও অভিযোগ বা আপত্তি থাকলে সে সব দেখার জন্য ‘ডিজ়পোজ়াল কমিটি’ রাখা হয়েছিল সে আমলেই। সেই কমিটিতে ওয়ার্ডের পুর-প্রতিনিধিকে রাখা হত না নিরপেক্ষতার স্বার্থে। প্রস্তাবিত নতুন ব্যবস্থা প্রসঙ্গে বাম আমলের পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের মত, ‘‘পাঁচ বছর অন্তর ভ্যালুয়েশন বোর্ডের মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণ বাধ্যতামূলক থাকা উচিত। পাঁচ বছর অন্তর প্রক্রিয়া হলে এআরভি কমতেও পারে, বাড়তেও পারে। নতুন বিলে বিত্তবান বা গরিব, সকলের জন্য একই হারে মূল্য বাড়িয়ে দেওয়া হবে। নির্বিচারে এমন ব্যবস্থা অযৌক্তিক, এতে দুর্নীতিও বাড়বে।’’

তবে পুর দফতরের এক কর্তার ব্যাখ্যা, ‘‘সম্পত্তি কর দেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি রেট চার্ট অনুযায়ী স্ব-মূল্যায়ন করে হিসেব জমা দিতে পারবেন। সংশোধনী বিলে সেই সংস্থান থাকছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bill Bidhansabha Revenue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy