প্রশাসনিক মহলের ধারণা, এই অবস্থায় নিয়োগ প্রক্রিয়া পুনরায় চালু করে নিজেদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তুলে ধরতে চাইছে রাজ্য সরকার।
ফাইল চিত্র।
মামলার পর মামলা, সিবিআই তদন্তের নির্দেশ, কিছু ক্ষেত্রে তার উপরে স্থগিতাদেশ এবং তা নিয়ে টানাপড়েন— স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে জট-জটিলতা ও বিতর্কের অন্ত দেখা যাচ্ছে না। তারই মধ্যে এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমেই আবার শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। সরকারি সূত্রের খবর, প্রশাসনে এই নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে।
গত বছর স্কুলশিক্ষকদের বদলি মসৃণ করার জন্য উৎসশ্রী প্রকল্প চালু করার পর থেকেই শিক্ষক-শিক্ষিকা কমে যাওয়ার প্রবণতা শুরু হয় গ্রামাঞ্চলের স্কুলে। শিক্ষা শিবিরের অভিযোগ, কোনও কোনও স্কুলে কিছু বিষয়ের নির্দিষ্ট শিক্ষক নেই বললেই চলে। কারণ, বদলি নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অধিকাংশই এখন শহরমুখী। এর ফলে গ্রামের স্কুলে শিক্ষক কমছে, তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে শহরের স্কুলে।
এসএসসি দীর্ঘ কাল শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নেয়নি। এই পরিস্থিতিতে উচ্চ প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ না-করলে সরকার পোষিত অধিকাংশ স্কুলে রীতিমতো অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই সরকার খুব তাড়াতাড়ি স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নতুন করে শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করতে চাইছে বলে শিক্ষা প্রশাসন সূত্রের খবর।
রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিতেও শিক্ষক নিয়োগ হয়নি বহু দিন। শেষ এই নিয়োগ প্রক্রিয়া চালানো হয়েছিল ২০১৬ সালে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, শুধু শিক্ষক নিয়োগই যে থমকে আছে, তা নয়। ওই সব স্কুলে শিক্ষাকর্মী নিয়োগও শেষ বারের মতো হয়েছে ২০১৫ সালে। ফলে দিনে দিনে সরকারি স্কুলেও শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর সংখ্যা কমছে। সরকারি স্কুল সূত্রের খবর, বহু স্কুলে প্রয়োজনের অর্ধেক শিক্ষকও নেই। আগামী দু’-তিন বছরে এই সংখ্যা আরও অনেক কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সরকারি স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্ব পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা পিএসসি-র। তাই শিক্ষক নিয়োগের জন্য এ বার পিএসসি-কেও সক্রিয় করার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা চলছে বলে স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর।
শুধু শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম নয়, স্কুলে ‘গ্রুপ সি’ বা তৃতীয় শ্রেণি এবং ‘গ্রুপ ডি’ বা চতুর্থ শ্রেণির কর্মী-পদে নিয়োগ নিয়েও দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। সেই মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই-কে তদন্তের নির্দেশ দেন। রাজ্য সরকার ডিভিশন বেঞ্চে গিয়ে স্থগিতাদেশ পায়।
তার পরেও হাই কোর্টে পরপর মামলা হতে থাকায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে তদন্তে নামে সিবিআই। অভিযোগ, এসএসসি-র উপদেষ্টা কমিটি ওই দুর্নীতিতে জড়িত। সেই কমিটির অন্যতম সদস্য শান্তিপ্রসাদ সিংহকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। ওই মামলায় তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী (বর্তমানে শিল্পমন্ত্রী) পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও সরাসরি ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য সিবিআই-কে নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। প্রয়োজনে পার্থবাবুকে হেফাজতে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে বলে জানান তিনি। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে পার্থবাবু ডিভিশন বেঞ্চে গেলে ডিভিশন বেঞ্চ পুরো তদন্তের উপরেই মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত স্থগিতাদেশ জারি করেছে।
প্রশাসনিক মহলের ধারণা, এই অবস্থায় নিয়োগ প্রক্রিয়া পুনরায় চালু করে নিজেদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তুলে ধরতে চাইছে রাজ্য সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy