Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Nabanna

কেন্দ্রীয় অনুদানের প্রকল্পে নিজস্ব পর্যবেক্ষক রাজ্যের

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, পঞ্চায়েত তথা গ্রামীণ স্তরে দু’টি প্রকল্পে টাকা বন্ধ থাকা নিশ্চিত ভাবে রাজ্যের উপর চাপ বাড়াচ্ছে।

nabanna

নবান্ন। —ফাইল চিত্র।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:০৬
Share: Save:

কেন্দ্রীয় অনুদানভুক্ত প্রকল্পের বাস্তবায়ন এবং অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে নিজস্ব পর্যবেক্ষক দল নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। প্রবীণ আধিকারিকদের অনেকের মতে, বিষয়টি বেশ নতুন।

কেন্দ্রীয় অনুদানভুক্ত প্রকল্পগুলির যাচাইয়ে রাজ্যে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলের ‘অভিযান’ নতুন নয়। কিন্তু এ বার রাজ্য সরকারই তেমন প্রকল্পের নজরদারিতে বিশেষজ্ঞ তথা পর্যবেক্ষক দল পাঠাচ্ছে জেলায় জেলায়। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের বক্তব্য, একশো দিনের কাজের প্রকল্প এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বরাদ্দ আটকে রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে। সেগুলির যাচাইয়ে দফায় দফায় ঘুরে গিয়েছে কেন্দ্রীয় দল। স্বচ্ছ ভারত মিশনের (এসবিএম) বরাদ্দ এখনও অবাধ। কিন্তু সেই কাজেরও অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে এ বার কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দলের আসার ইঙ্গিত পাচ্ছেন প্রশাসনিক কর্তারা। তাই কাজের বাস্তবায়নে যাতে কোনও খামতি না থাকে, তা নিশ্চিত করতে নিজেদের পর্যবেক্ষক দল গড়তে হয়েছে রাজ্যকে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এসবিএম-এরই দ্বিতীয় পর্যায় (ওডিএফ-প্লাস) শুরু হয়েছে দেশে। এতে চিহ্নিত কিছু গ্রামে কঠিন অথবা তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন (ওডিএফ-প্লাস অ্যাসপায়ারিং), কিছু গ্রামে দুই ব্যবস্থাপনাই দরকার (ওডিএফ-প্লাস রাইজ়িং) এবং কিছু সংখ্যক গ্রামে এই দু’টি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে দৃশ্যত অন্তত ৮০% স্বচ্ছতার ছাপ রাখতে হয়। শেষের মানদণ্ডে পৌঁছলে সেই গ্রাম ঘোষিত হয় ‘মডেল’ হিসাবে। এই সব কাজে অনেকটা পিছিয়ে রাজ্য (সবিস্তার সারণীতে)। আবার অগ্রগতির যে তথ্য বিভিন্ন জেলা জানাচ্ছে, অতি অল্প সময়ের মধ্যে তা কী করে সম্ভব, প্রশ্ন থাকছে তা নিয়েও (সবিস্তার সারণীতে)। পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের কথায়, “সংখ্যার খুব বেশি বৃদ্ধি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন হয়, কোনও কোনও ক্ষেত্রে। আমাদের অভ্যন্তরীণ অডিট তো চলতেই থাকে। কেন্দ্রও এখন এমন অডিটে খুব আগ্রহী!”

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, পঞ্চায়েত তথা গ্রামীণ স্তরে দু’টি প্রকল্পে টাকা বন্ধ থাকা নিশ্চিত ভাবে রাজ্যের উপর চাপ বাড়াচ্ছে। ফলে ওই স্তরে এসবিএম-এর মতো আর কোনও প্রকল্পে এমন ঘটনা ঘটুক, তা চাইবে না প্রশাসনের শীর্ষমহল। তাই এই পদক্ষেপ।

এক জেলা-কর্তার কথায়, “জলজীবন মিশন এবং স্বচ্ছ ভারত মিশনের কাজ দেখতে ইতিমধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, মুর্শিদাবাদ-সহ একাধিক জেলায় কেন্দ্রের একটি করে দল ঘুরে গিয়েছে। তাদের সূত্র ধরে বড় মাপের কেন্দ্রীয় দল এলে দাবি এবং বাস্তবে অমিল থাকলে চলবে না।” পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারও বলেন, “প্রশিক্ষণের অভাবে অনেক কাজ ঠিক ভাবে হচ্ছে না। তা ছাড়া অগ্রগতি এবং কার্যকারিতা খতিয়ে দেখাও দরকার। যা দাবি করা হচ্ছে, তার উপরেও নিরীক্ষণ প্রয়োজন।” মন্ত্রীর সংযোজন, “টাকা বন্ধ করে যে ভাবে কেন্দ্রীয় দল বার বার আসছে, তা তো বঞ্চনারই একটা পথ। তারা আবার আসতেই পারে। তবে নিশ্চিত খবর এখনও নেই।”

প্রথম দফায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পূর্ব বর্ধমানে রাজ্যের পর্যবেক্ষক দলের কাজ ছিল প্রকাশ্য মলত্যাগ মুক্ত (ওডিএফ) গ্রামীণ পরিকাঠামোর কাজ খতিয়ে দেখা। কতগুলি এমন পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে, তথ্যের সঙ্গে বাস্তবের কোনও ফারাক রয়েছে কি না ইত্যাদি রয়েছে সেই পর্যবেক্ষণের আওতায়। দ্বিতীয় পর্যায়ে গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) এবং শিলিগুড়ি-সহ ২৩টি জেলাতেই রাজ্যের পর্যবেক্ষক দলের দেখার কথা নিকাশি তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার (গ্রে ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট) অগ্রগতি। এর পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন-সহ একাধিক ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন এবং সেখানকার ইঞ্জিনিয়ারদের সহযোগিতা করবে দলগুলি। তৃতীয় পর্যায়ে বিশেষজ্ঞ দল দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে গিয়ে নিকাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সব দিক খতিয়ে দেখছে। যাচাই করা হচ্ছে প্রযুক্তি, প্রকল্পের পরিকল্পনা (ডিপিআর) তৈরি, সংশোধন এবং অগ্রগতিও।

অন্য বিষয়গুলি:

Nabanna Mamata Banerjee Central Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy