চাকরি দেওয়ার প্রক্রিয়ায় প্রদীপ জড়িত ছিলেন বলে সিবিআইয়ের অভিযোগ। প্রতীকী ছবি।
কমিশনের বিনিময়ে ঘুরপথে চাকরি দেওয়ার প্রক্রিয়ায় তিনি জড়িত ছিলেন বলে সিবিআইয়ের অভিযোগ। তবে অভিযুক্ত প্রদীপ সিংহের দাবি, নিয়োগ দুর্নীতিতে তাঁর কোনওই ভূমিকা নেই। এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় ধৃত প্রদীপকে বৃহস্পতিবার আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাঁকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিআইয়েরই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রদীপ এ দিন আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘চাকরি নিয়ে দুর্নীতির ক্ষেত্রে আমার কোনও ভূমিকাই নেই। আমি একটা চাকরিও দিইনি। এক টাকাও আমার হাতে আসেনি। সিবিআই আমাকে কেন গ্রেফতার করল, তা বুঝতে পারছি না।’’
রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে এসএসসি-র মাধ্যমে বেআইনি ভাবে বহু প্রার্থীকে চাকরি দেওয়ার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নিউ টাউন থানা এলাকার বাসিন্দা প্রদীপকে বুধবার রাতে ওই অঞ্চল থেকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, হেফাজতে থাকাকালীন এসএসসি-র উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিংহ ও অশোক সাহাকে জেরা করে তাঁরা প্রদীপের বিষয়ে অনেক তথ্য পেয়েছেন। সিবিআই সূত্রের খবর, ‘ছোটু’ নামে শান্তিপ্রসাদের মোবাইলে একটি নম্বর সেভ করা ছিল। সেই নম্বরটি খতিয়ে দেখা হয়। পরে জানা যায়, ছোটু আদতে প্রদীপই। তার পরেই প্রদীপকে ডেকে শান্তিপ্রসাদের মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
তদন্তকারীরা জেনেছেন, প্রদীপ এসএসসি এবং প্রাথমিক টেট দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও এসএসসি-র উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদের ঘনিষ্ঠ। অভিযোগ, লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বহু ‘অযোগ্য’ প্রার্থীর চাকরির ব্যবস্থা করেন তিনি।
সিবিআইয়ের দাবি, নাকতলায় পার্থের বাড়ির অদূরে একটি কম্পিউটার সেন্টার চালাতেন প্রদীপ। সেখান থেকে তিনি চাকরি বিক্রির কাজকর্মও চালাতেন। সেখান থেকেই যে অযোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা ই-মেল করে এসএসসি-র উপদেষ্টাদের কাছে পাঠানো হত, তার নথি উদ্ধার হয়েছে বলে জানান তদন্তকারীরা। মূলত নবম থেকে একাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন প্রদীপ।
বৃহস্পতিবার সল্টলেকের একটি অফিসে তল্লাশি চালায় সিবিআই। ওই অফিস থেকেও প্রদীপ এসএসসি দুর্নীতির কাজকর্ম চালিয়েছেন বলে দাবি তদন্তকারীদের। তাঁরা জানান, সেটি একটি ভ্রমণ সংস্থার অফিস। প্রদীপ ওই অফিসে কাজ করতেন এবং বেআইনি নিয়োগে সেখানকার কম্পিউটার কাজে লাগাতেন।
তদন্তকারীদের বক্তব্য, বেআইনি ভাবে চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রদীপ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছেন। এসএসসি-র উপদেষ্টা ও শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রেখে, অযোগ্য প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার চক্র চালাতেন প্রদীপ।
প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে তদন্তকারীদের অনুমান, পার্থের কাছে বিভিন্ন চাকরির সুপারিশপত্র আসত। পার্থের কাছ থেকে সেই সব সুপারিশপত্রের একটা অংশ প্রদীপের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হত। অযোগ্য প্রার্থীদের বলে দেওয়া হত, তাঁরা যেন প্রদীপের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পার্থের পাঠানো সুপারিশপত্র অনুযায়ী অযোগ্য প্রার্থীদের নামের তালিকা এসএসসি-র উপদেষ্টাদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন প্রদীপ। তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, প্রদীপ মূলত পার্থ-ঘনিষ্ঠ এক আমলার কাছে টাকা পৌঁছে দিতেন। এবংনিজে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে মোটা কমিশন নিতেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy