পার্থ চট্টোপাধ্যায়
পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজে থেকে মন্ত্রিত্ব ছাড়ার কথা ভাবছেন না। অন্তত বুধবার পর্যন্ত। কারণ, তাঁর কাছে সরাসরি ওই প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি উল্টে প্রশ্ন করেছেন, ‘‘কারণ কী?’’
শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে গত শনিবার গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী (বর্তমানে শিল্পমন্ত্রী) পার্থ। তার পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, অতঃপর মন্ত্রিত্বে ইস্তফা দিতে পারেন তিনি। কিন্তু বুধবার সরাসরি প্রশ্নের জবাবে তাঁর বক্তব্য শুনে মনে হওয়া অস্বাভাবিক নয় যে, এখনই মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ভাবছেন না তিনি।
ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ তাঁর গাড়িটি রাজ্য বিধানসভায় ফেরত পাঠিয়েছেন। প্রশাসনিক মহলের একাংশ মনে করছে, বিষয়টি ‘তাৎপর্যপূর্ণ’। তার পর থেকেই তাঁর মন্ত্রিত্ব ছাড়ার জল্পনা শুরু হয়েছে। তবে পার্থর ঘনিষ্ঠদের একাংশের বক্তব্য, গাড়িটি ব্যবহার করার কেউ নেই বলেই সেটি আপাতত বিধানসভায় ফেরত পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে বাড়তি কোনও ‘তাৎপর্য’ নেই। একটি মহল থেকে এমনও বলা হচ্ছে যে, তৃণমূলের দলীয় মুখপত্রে পার্থকে ‘মন্ত্রী’ বা ‘মহাসচিব’ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে না। সেটিও ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।
তবে বুধবার তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘মুখপত্রের সম্পাদক পদে আছেন তো পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দল পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবে।’’ কুণালের মন্তব্যে এটা স্পষ্ট যে, দলীয় মুখপত্রের সম্পাদক পদে পার্থকে আর রাখা হবে কি না, তা নিয়েও চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।
পাশাপাশিই কুণাল বলেছেন, ‘‘মন্ত্রিসভা নিয়েও পরবর্তী সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে জানানো হবে। মন্ত্রিসভার বিষয়টি আমার এক্তিয়ারের মধ্যে অবশ্য পড়ছে না। শুধু বলব, যা ঘটেছে, তা খারাপ ব্যাপার। মন্ত্রিত্ব রেখেও প্রভাবশালী তকমা যদি সরাতে পারেন তিনি (পার্থ), সেটা তাঁর ব্যাপার।’’
গত শনিবার পার্থ গ্রেফতার হওয়ার পর ইডির দাবি অনুযায়ী ‘মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায় নামে এক মডেল-অভিনেত্রীর বাড়ি থেকে প্রায় ২২ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। এর পর অর্পিতাকেও গ্রেফতার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতিতে মামলায় গত সোমবার পার্থ ও অর্পিতাকে ১০ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয় কলকাতার বিশেষ আদালত।
বুধবার সকালে পার্থ ও অর্পিতাকে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য জোকার ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে ঢোকার সময় পার্থকে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন, “মন্ত্রিত্ব ছাড়বেন কি?” পার্থ পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘‘কারণ কী?’’ ঘণ্টাদুয়েক পর তিনি যখন হাসপাতাল থেকে বেরোন, তখনও একই প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁকে। তখন অবশ্য আর মুখ খোলেননি পার্থ।
গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই পার্থকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর দাবিতে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। তার পরেও এখনও তৃণমূলের মহাসচিব এবং রাজ্যের শিল্পমন্ত্রীর পদে বহাল রয়েছেন পার্থ। তবে তা আর কত দিন থাকবে, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকা হয়েছে নবান্নে। ইডি হেফাজতে থাকার দরুন ওই বৈঠকে স্বাভাবিক ভাবেই হাজির থাকতে পারবেন না পার্থ। প্রশাসনিক মহলের ধারণা, মন্ত্রিসভার বৈঠকে পার্থকে নিয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy